badminton

PV Sindhu: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আমার বাজি সিন্ধুই

অনেকেই জানতে চাইছেন, এই যে গত কয়েকটি প্রতিযোগিতায় সিন্ধুকে সেমিফাইনাল বা ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সিন্ধুকে, তার কারণ কী?

Advertisement

বিমল কুমার

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৪:২০
Share:

পরীক্ষা: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কঠিন ড্র-এর সামনে সিন্ধু। ফাইল চিত্র।

আরও একটা নজির গড়ার সুযোগ হাতছাড়া হল পি ভি সিন্ধুর। দেশের প্রথম ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় হিসেবে বছর তিনেক আগে টুর ফাইনালসে সোনা জিতেছিল সিন্ধু। দ্বিতীয় সোনাটাও এ বার আসতে পারত। কিন্তু ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার উঠতি তারকা আন সে ইয়ং সেই আশায় জস ঢেলে দিল। ফের ফাইনালে এসে হার মানতে বাধ্য হয় সিন্ধু।

Advertisement

অনেকেই জানতে চাইছেন, এই যে গত কয়েকটি প্রতিযোগিতায় সিন্ধুকে সেমিফাইনাল বা ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে সিন্ধুকে, তার কারণ কী? ১২ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে। যেখানে সিন্ধুর জন্য কঠিন ড্র অপেক্ষা করছে। সেখানেও কতটা সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওর?

আমার কাছে এখনও এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেতাব জেতার দৌড়ে সিন্ধু অন্যতম ফেভারিট। তার কারণ, টোকিয়ো অলিম্পিক্সের পরে প্রায় মাস দেড়েক বিশ্রাম নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিন্ধু। এর পরে কোর্টে ফিরে আসে অক্টোবরে। প্রত্যাবর্তনের পরে ও পাঁচটি প্রতিযোগিতায় নেমেছে— ডেনমার্ক ওপেন, ফরাসি ওপেন, ইন্দোনেশিয়া মাস্টার্স, ইন্দোনেশিয়া ওপেন এবং ওয়ার্ল্ড টুর ফাইনালস। এর মধ্যে ডেনমার্ক ওপেনে কোয়ার্টার ফাইনাল ও বাকি তিনটি প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালে উঠেছিল। এত দিন পরে কোর্টে নামলে যে কোনও খেলোয়াড়েরই ছন্দে ফিরতে সময় লাগে। সেটাই হয়তো কারণ সিন্ধুর এই প্রতিযোগিতাগুলোতে ট্রফির কাছাকাছি এসেও না জিততে পারার। তা ছাড়া টুর ফাইনালস যেখানে হয়েছিল সেই বালিতে শাটলের গতি খুবই কম ছিল। তাতে সুবিধে হয়েছে সে ইয়ংয়ের মতো খেলোয়াড়দের। যারা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে
পছন্দ করে।

Advertisement

তবে এটাও মানতে হবে যে, সিন্ধুর কোর্টে নড়াচড়াও কিছুটা ধীর গতির ছিল। অনেক সময়ই ওর আক্রমণাত্মক খেলাটা সে ভাবে দেখা যায়নি। তবে আমার মনে হয় না এটা বড় কোনও সমস্যা। এত দিন ধরে ও বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যাডমিন্টনে খেলছে। সিন্ধু নিজেও খুব ভাল করে জানে, বড় মঞ্চে কী ভাবে সফল হতে হয়। তা ছাড়া টুর ফাইনালসের সেমিফাইনালে যে ভাবে ও ইয়ামাগুচিকে হারিয়েছে, নিশ্চিত ভাবেই সেটা ওকে অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে। কারণ গত কয়েক মাসে ইয়ামাগুচি আর সে ইয়ং-ই তো দাপট দেখিয়ে যাচ্ছিল।

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সিন্ধুর তৃতীয় রাউন্ডে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ তাইল্যান্ডের পর্নপাউয়ি চোচুয়োং। এর পরে কোয়ার্টার ফাইনালে বিশ্বের এক নম্বর তাই জু ইং এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেমিফাইনালে তিন বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ক্যারোলিনা মারিনের মুখোমুখি হতে পারে সিন্ধু। তবে ২০১৯ সালেও কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সিন্ধুর ড্র কঠিন ছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে তাই জু, সেমিফাইনালে চিনের চেন উফেই এবং ফাইনালে নজ়োমি ওকুহারাকে হারিয়েই সিন্ধু চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

তা ছাড়া তাই জু কিন্তু অলিম্পিক্সের পরে কোনও প্রতিযোগিতায় খেলেনি। তাই ওর পক্ষে কোর্টে ফিরেই এত দ্রুত ছন্দে ফেরা সোজা হবে না। সিন্ধুর বড় পরীক্ষা তাই চোচুয়োং-কে হারানো। যার সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে ও ৪-৩ এগিয়ে রয়েছে। তবে শেষ দু’বার মুখোমুখি সাক্ষাতে কিন্তু চোচুয়োং হারিয়ে দিয়েছে সিন্ধুকে। যার মধ্যে সদ্য শেষ হওয়া টুর ফাইনালসের গ্রুপ পর্যায়ের ম্যাচও রয়েছে।

মারিনও চোট সারিয়ে দীর্ঘদিন পরে কোর্টে ফিরছে। অলিম্পিক্সেও যে জন্য ছিল না। সাধারণত চোট কাটিয়ে ফিরলে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনাটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই কয়েকটা প্রতিযোগিতায় নামাটা খুব জরুরি। কিন্তু মারিন সেটা পারেনি। তাই ওকে সরাসরি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেই নামতে হচ্ছে। যা আবার আয়োজিত হচ্ছে মারিনের দেশ স্পেনেই। দেশের জন্য মারিনের বিরাট অবদান রয়েছে। ওখানকার স্টেডিয়ামটাও তো ওর নামেই। তাই নিজের দেশে জনসমর্থন যেমন থাকবে মারিনের দিকে, তেমনই প্রত্যাশার চাপও থাকবে।

তবে স্পেনে কিন্তু এশিয়ার চেয়ে আবহাওয়া বেশি ঠান্ডা থাকে। তাই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাও একটা বড় ব্যাপার। সঙ্গে স্টেডিয়ামে শাটলের গতি যেন কম না হয়, সিন্ধুর দিক থেকে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টেনিসের মতো ব্যাডমিন্টনে কিন্তু কোর্ট বড় কথা নয়, আসল হল শাটলের গতি। যদি শাটলের গতি কম থাকে, তা হলে সিন্ধুর পছন্দের আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলাটা কঠিন। ওর বড় অস্ত্র স্ম্যাশ তখন ছন্দ হারাতে পারে। যাঁরা রক্ষণে বেশি জোর দেয়, তাদের সুবিধে হয়ে যাবে।

সিন্ধু এর আগেও চোচুয়োংকে হারিয়েছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও ও সেটা আবার করে দেখাতে পারে। তা ছাড়া বিশ্বের দু’নম্বর চেন উফেই এ বার খেলছে না। সিন্ধুর সম্ভাব্য দুই প্রতিপক্ষও সে ভাবে গত কয়েক মাসে প্রতিযোগিতায় নামেনি। তাই সব দিক দিয়ে দেখলে এ বার সিন্ধু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ফের সোনা জিতে ইতিহাসে নাম তুলতেই পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement