সাঁতারে জুনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়ন বাংলার দল। ছবি: সংগৃহীত।
গত বারের হারের বদলা নিয়েছে বাংলা। গত বার সেমিফাইনালে কেরলের কাছে ৮-৯ গোলে হারতে হয়েছিল তাদের। তৃতীয় স্থানে শেষ করেছিল বাংলা। এ বার জুনিয়র জাতীয় ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতায় ফাইনালে সেই কেরলকেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই রাজ্য। ৯-৮ গোলেই কেরলকে হারিয়েছে তারা।
মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এ বার জাতীয় জুনিয়র ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা। বাংলার দলে ছিল ১৩ জন। দাপট দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। গত বার তামিলনাড়ুতে হারের বদলে এ বার মধ্যপ্রদেশে নিল বাংলার ছেলেরা। বাংলার সৌমেন মণ্ডল সেরা খেলোয়াড়ের ট্রফি পেয়েছে। সে ৬টি গোল দিয়েছে। এ ছাড়া প্রীতম দেবনাথ ২টি ও অর্ণব সাউ ১টি গোল করেছে।
এই বিষয়ে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল বাংলার সাঁতার সংস্থার কর্তা রামানুজ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দলের ছেলেদের নিয়ে গর্বিত তিনি। যে ভাবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে তারা এই রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছে, তাতে গর্বিত রামানুজ। বললেন, “চাপের মধ্যেও ছেলেরা দারুণ খেলেছে। কেরলকে হারানো সহজ ছিল না। শেষ দিকে পেনাল্টিও মিস্ করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।”
দল চ্যাম্পিয়ন হলেও নিজের ক্ষোভের কথা জানালেন রামানুজ। তাঁর অভিযোগ খেলার পরিকাঠামো নিয়ে। রামানুজ বলেন, “ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সুইমিং পুল বেড়েছে। অ্যাকাডেমি বেড়েছে। এখানে অনেক জায়গায় এমন অবস্থা যে, ছেলে-মেয়েকে ভর্তি করাতে পারছে না। তার ফলও হচ্ছে। ওরা ভাল করছে। আর আমরা পুকুরে সাঁতার কেটে রেজাল্ট করছি। কলেজ স্কোয়্যার বা হেদুয়ার ঘোলা জলে ডাইভিং করি। ও ভাবে অনুশীলন করেই এখান থেকে ১৭ জন ছেলে-মেয়ে ন্যাশনাল খেলতে গিয়েছিল। এটা সম্পূর্ণ ওদের কৃতিত্ব।”
রামানুজের মুখে উঠে আসে প্রগতি দাসের কথা। বাংলার এই মেয়ে জুনিয়র জাতীয় প্রতিযোগিতায় গার্লস গ্রুপ ২-এ হাই বোর্ড, ১ মিটার ও ৩ মিটার স্প্রিং বোর্ডে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তিনটি সোনা জিতেছে সে। ২ পয়েন্টের জন্য গ্রুপ প্রতিযোগিতায় রানার্স হয়েছে বাংলা।
কোন পরিস্থিতি থেকে প্রগতির মতো মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হচ্ছে, সেই কথা বলতে চেয়েছেন রামানুজ। তিনি বললেন, “পশ্চিমবাংলায় পরিকাঠামো নেই। যেটুকু আছে সেটুকুও ঠিক ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে না। সুভাষ সরোবরের ডাইভিং পুল সারানোর দায়িত্ব কার? কত দিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে আছে। কেন এখনও সারানো হয়নি? কেন এখানে অনুশীলন হয় না? ঘোলা জলে অনুশীলন করে চ্যাম্পিয়ন হতে হয়। আসলে সকলে ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত। অন্য খেলার দিকে কারও নজর থাকে না।”