অনূর্ধ্ব- ২৩ দলের সঙ্গে প্রশিক্ষক লক্ষীরতন শুক্ল। ছবি - সিএবি
লক্ষ্মীরতন শুক্লর অভিনব উদ্যোগ। বাংলা ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম বার ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সামনে ফোর্ট উইলিয়ামের ভেতরে অনুশীলন করছে অনূর্ধ্ব- ২৩ দল। অনেকটাই গ্রেগ চ্যাপেলের অনুশীলন পদ্ধতির মতো। তিনি টিম ইন্ডিয়ার প্রশিক্ষক থাকার সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করিয়েছিলেন। যাকে বলা হত ‘কোবরা ট্রেনিং’।
ঠিক সেই ভাবেই এখন রোজ সকালে একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটারকে ফোর্ট উইলিয়ামে নিয়ে চলে যাচ্ছেন বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক। সেনা জওয়ানরা যেখানে শারীরিক কসরত করেন, সেখানেই ফিটনেস চর্চা করছে বাংলা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। রোজই প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে চলছে শরীরচর্চা। জওয়ানরাও নিজের উদ্যোগে এই তরুণদের সাহায্য করছেন।
লক্ষীর উদ্যোগে ইডেনে গ্যালারির নীচে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী আখড়া। ছবি -ফেসবুক
প্রতি বছর বর্ষাকালে শুরু হয় বাংলার সিনিয়র এবং বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক দলের প্রস্তুতি। ইডেন গার্ডেন্সের ইন্ডোরে গা ঘামানো ছাড়াও রেড রোডের ধারেও বৃষ্টিতে ভিজে অনুশীলন করেছে বাংলার বিভিন্ন দল। এ বার দায়িত্ব নিয়ে কেন আলাদা ব্যবস্থা করলেন লক্ষ্মী?
লক্ষ্মী জানালেন, “আধুনিক ক্রিকেটে উন্নতি করতে হলে শুধু শারীরিক জোর বাড়ালেই চলবে না, মনের জোরও বাড়াতে হবে। সেই জোর বাড়াতে হলে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সামনে অনুশীলন খুব দরকার। আমার মনে হয়েছে এমন ভাবে অনুশীলন করলে ছেলেদের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা বাড়বে। তা ছাড়া জওয়ানদের সান্নিধ্য পেলে জোটবদ্ধ হয়ে থাকার ব্যাপারেও ছেলেদের ধারণা বাড়বে। তাই সিএবি কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন উদ্যোগ নিলাম। সেনাবাহিনীর কর্তাদের ধন্যবাদ জানাই।
ছেলেদের মানসিক ভাবে শক্তিশালী করে তোলার জন্য রাখা হয়েছে বক্সিং ব্যাগ। ছবি - ফেসবুক
গ্রেগের আধুনিক অনুশীলন পদ্ধতির সঙ্গে থাকছে কিছু পুরনো অনুশীলন পদ্ধতিও। ইডেনের গ্যালারির নীচে তৈরি করেছেন বালির আখড়া, বক্সিং রিং।
লক্ষী বলছেন, “অনেকের দেখে মনে হবে এগুলো প্রাচীন ধারণা। কিন্তু আমার মতে এগুলো প্রাচীন পন্থাকে ব্যবহার করে আধুনিক ভাবনাকে কাজে লাগানো। দীর্ঘ দিন বাংলার হয়ে খেলার সুবাদে দেখেছি অনেক জেতা ম্যাচ আমরা স্রেফ মনের জোরের অভাবে হেরে গিয়েছি। এই ছেলেগুলোর জীবনে তেমন মুহূর্ত এলে ওরা যেন পিছিয়ে না যায়। মাঠে যেন পাল্টা মার দিতে পারে। সেই জন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টার খামতি করব না। বাকিটা মরশুম শুরু হলে বোঝা যাবে।”