মুখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে শ্রীলঙ্কা সফরে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন রাহুল দ্রাবিড়। ফাইল চিত্র
রাহুল দ্রাবিড়ের ভবিষ্যৎ কী? কয়েক দিন আগে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর পদে প্রার্থী চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিসিসিআই। আর তারপর থেকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মনে এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। ভারতীয় দলের রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি করার দায়িত্বে এখনও বহাল আছেন দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক। তবে তাঁর এই মেয়াদ কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। সেই জন্য আগামী ১৫ অগস্ট রাত ১২টার মধ্যে এই পদের জন্য আবেদন করতে বলেছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিসিসিআই।
এখন প্রশ্ন হল ‘মিস্টার ডিপেন্ডবেল’ কি এনসিএ-র পরিচালক হিসেবে কাজ করার জন্য ফের আবেদন করবেন? না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন? কারণ সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে বিশ্বকাপ মিটে গেলেই বিরাট কোহলীদের কোচ হিসেবে রবি শাস্ত্রীর মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে।
দ্রাবিড়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা আরও বেড়ে যাওয়ার কারণ হল এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড কর্তা। তিনি বলেন, “রাহুল ইচ্ছে করলেই এনসিএ-র পরিচালক পদের জন্য আবেদন করতে পারে। তবে রবি শাস্ত্রীর মেয়াদ কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরেই শেষ হয়ে যাবে। রাহুল যে কোচ হিসেবে যোগ্য, সেটা শ্রীলঙ্কা সফরে বুঝিয়ে দিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাহুলকে প্রয়োজন।”
শিখর ধওয়নের সঙ্গে রাহুল দ্রাবিড়। ফাইল চিত্র
দ্রাবিড় অবশ্য বরাবরের মতো এ বারও নির্বিকার। গত শ্রীলঙ্কা সফরে একটি ম্যাচ চলার সময় তাঁকে এই বিষয়ে সরাসরি প্রশ্নও করেছিলেন ধারাভাষ্যকাররা। তবে তাঁর জবাব ছিল, “সত্যি বলতে আমি এত দূরের ব্যাপার নিয়ে চিন্তা করিনি। এই মুহূর্তে যে কাজটা করছি সেটা নিয়েই আমি ভাবছি।”
দ্রাবিড় এই বিষয়ে এখনই মন্তব্য না করলেও বোর্ডের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে বিরাট কোহলী-রোহিত শর্মাদের হেড স্যর হিসেবে কাজ করার জন্য এই প্রাক্তন অধিনায়ক মুখিয়ে আছেন। আর সেই জন্যই শিখর ধওয়নদের নিয়ে তিনি শ্রীলঙ্কা গিয়েছিলেন। পেশাদার ক্রিকেটে প্রশিক্ষক হিসেবে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে ছিলেন। তার আগে রাজস্থান রয়্যালসে মেন্টর হিসেবেও কাজ করেছেন। তবে ভারতীয় দলের মুখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার চাপ আলাদা। সেই চাপ বোঝার জন্যই হয়তো তিনি শ্রীলঙ্কা সফরকে বেছে নিয়েছিলেন।
কোচ হিসেবে বিরাট কোহলীর প্রথম পছন্দ রবি শাস্ত্রী। ফাইল চিত্র
এনসিএ-এর নতুন পরিচালক পদের জন্য বোর্ডের তরফে বেশ কিছু যোগ্যতামানও দেওয়া হয়েছে। ৬০ বছরের কম বয়স এমন কোনও প্রাক্তন ক্রিকেটার পরিচালক পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁকে দেশের হয়ে কমপক্ষে ২৫টি টেস্ট খেলতে হবে। সঙ্গে পাঁচ বছর প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দরকার। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলবে। ভারত এ দল, অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দল, ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল বা আইপিএল-এর দলে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেও আবেদন করা যাবে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে এনসিএ-র পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন দ্রাবিড়। এর আগে সেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন। দ্রাবিড় এই পদের জন্য ফের আবেদন করলে সম্ভবত তিনিই দায়িত্ব নেবেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করলে তাঁকে কোহলীর দলে নতুন প্রশিক্ষক হিসেবে দেখার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠবে।
যদিও সিনিয়রদের দলে মুখ্য প্রশিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারটা শুধু বিসিসিআই নয়, বিরাট কোহলীর উপরেও অনেকটা নির্ভর করে। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষে অনিল কুম্বলের বিদায়ের পর শাস্ত্রীকেই চেয়েছিলেন কোহলী। সেই সময় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটিতে ছিলেন। তিনিও ভারত অধিয়ায়কের পছন্দকে উপেক্ষা করতে পারেননি।
এখন শাস্ত্রীর মেয়াদ শেষ হলে দ্রাবিড় সেই আসনে বসেন কিনা সেটাই দেখার।