‘সুপারম্যান’ থেকে এখন তিনি ভারতের টেস্ট দলের ‘দ্বিতীয়’ উইকেট রক্ষক। মেনে নিচ্ছেন ঋদ্ধি। ফাইল চিত্র
করোনার টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে আগামী ২ জুন ইংল্যান্ডগামী বিমানে উঠবেন বিরাট কোহলী, রোহিত শর্মারা। তবে ঋদ্ধিমান সাহা ও দলের রিজার্ভ বোলার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিসিসিআই। এই দুই ক্রিকেটার ইংল্যান্ডে পা রেখে টিকা নেবেন। কারণ দুজনেই সবেমাত্র করোনা থেকে সেরে উঠেছেন।
টেস্ট দলের উইকেট রক্ষক-ব্যাটসম্যান ঋদ্ধিমান ও ডানহাতি জোরে বোলার কৃষ্ণ সম্প্রতি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের নিয়ম অনুসারে কোনও ব্যক্তির করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর অন্তত ২৮ দিন টিকা নেওয়া যায় না। তাই ঋদ্ধিমান ও কৃষ্ণ টিকা না নিয়েই ইংল্যান্ডগামী বিমানে উঠবেন।
সোমবার মুম্বই পৌঁছে দলে যোগ দিয়েছেন ঋদ্ধি। আপাতত ১ জুন পর্যন্ত নিভৃতবাসে থাকতে হবে। শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে এই বঙ্গ ক্রিকেটার আনন্দবাজার ডিজিটালকে টেলিফোনে বলেন, “সংক্রমিত হলে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর অন্তত ২৮ দিন ভ্যাকসিন নেওয়া যায় না। দলের ডাক্তার সেটাই জানিয়েছেন। তাই ইংল্যান্ডে গিয়েই টিকা নেব।”
একটানা জৈব বলয়ে থাকা নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই। তবে সমস্যা হল দুটো। এক) আসন্ন সফরে ঋদ্ধি আবার তাঁর পরিবারকেও কাছে পাবেন না। ১৮ জুন থেকে শুরু হবে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট ফাইনাল। ২২ জুন সেই ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ভারতীয় দলকে বিলেতেই থাকতে হবে। ৪ অগস্ট থেকে জো রুটের দলের বিরুদ্ধে শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। দুই) ঋষভ পন্থ অধিনায়ক ও মুখ্য প্রশিক্ষক রবি শাস্ত্রীর প্রথম পছন্দ। তাই কোনও অঘটন না ঘটলে পন্থের খেলার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে তাঁর অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
ঋদ্ধি বলছেন, “মানুষের জীবনে এমন পরিস্থিতি এলে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আমার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। পন্থ ছন্দে আছে। তাই ওর খেলা স্বাভাবিক। যদি সুযোগ আসে বরাবরের মতো নিজেকে উজাড় করে দেব। তবে প্রায় চার মাসের সফর পরিবার ছাড়া থাকা খুবই কঠিন। সেটা জানলেও দেশের জন্য এই ত্যাগ করতে বাধ্য হলাম। কারণ আমার ছেলেটা খুবই ছোট। ওকে ঘরবন্দি রাখা সম্ভব নয়। মন খারাপ হলেও একা থাকতে হবে।”
কোভিডের বিরুদ্ধে জিতলেও শরীর বেশ ক্লান্ত। তবে শরীরচর্চায় তাঁর খামতি নেই। কলকাতায় থাকার সময় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালেও শরীরচর্চা ও উইকেট রক্ষণের বেশ কিছু অনুশীলন করেছেন। এখন দলের জৈব বলয়ে থাকার সময়ও সেগুলোই তাঁর সঙ্গী। সঙ্গে ল্যাপটপে মজুত রয়েছে অসংখ্য হাসির ও অ্যাকশন সিনেমা। এছাড়া সময় কাটানোর জন্য ওয়েব সিরিজের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ও ফিফা ভিডিয়ো গেম তো আছেই। ভিডিয়ো কলের মাধ্যমেও পরিবার ও কাছের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। আগামী চার মাস এ ভাবেই কাটিয়ে দিতে চাইছেন পাপালি।
আর যদি সুযোগ আসে তাহলে আবার নিজেকে প্রমাণ করতে বাইশ গজের দিকে এগিয়ে যাবেন ৩৮টি টেস্ট খেলা এই বঙ্গ সন্তান। ২০১৯ সালে ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলার পর গত অস্ট্রেলিয়া সফরে অ্যাডিলেডে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন। এ বার ইংল্যান্ডে গিয়ে ভারতীয় দল ৬টি টেস্ট খেলবে। তাঁর কপালে কি শিকে ছিঁড়বে! ঋদ্ধি নিজেও জানেন না।
‘সুপারম্যান’ থেকে এখন তিনি ভারতের টেস্ট দলের ‘দ্বিতীয়’ উইকেট রক্ষক।