গোলাপি বলের মান নিয়ে চলছে চর্চা। ফাইল চিত্র
ইডেনে দিনরাতের টেস্ট মহাযজ্ঞের আয়োজন শুরু হয়ে গিয়েছে। এক দিকে যেমন ভারতীয় বোর্ড এবং সিএবি-র অন্দরমহলে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের প্রথম দিন-রাতের টেস্ট নিয়ে, তেমনই ক্রিকেটীয় দিক নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। ভারতীয় বোর্ড ক্রিকেট সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থা এসজি-র কাছে ৭২টি গোলাপি বলের অর্ডার দিয়েছে বলে সংবাদসংস্থার খবর।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, এসজি বলই ব্যবহৃত হবে দিনরাতের টেস্টের জন্য। সৌরভ এবং বোর্ডের ইচ্ছা, যথাসম্ভব নিখুঁত ভাবে টেস্ট ম্যাচটি হোক। রাতের ম্যাচের জন্য বল এবং পিচ দু’টোই খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কোনও রকম ঝুঁকি না-নিয়ে বেশি সংখ্যক বল আনিয়ে রাখা হচ্ছে।
তবে এসজি বল নিয়ে কিছুটা সংশয় ক্রিকেট মহলে থেকে যাচ্ছে। তার কারণ, এর আগে এই সংস্থার গোলাপি বলে দিনরাতের ম্যাচ হয়নি। প্রতিযোগিতামূলক কোনও ম্যাচে এই সংস্থার বল ব্যবহার না হওয়াটা কিছুটা হলেও চিন্তায় রাখবে প্রশাসকদের। এর আগে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে দলীপ ট্রফি গোলাপি বলে খেলা হয়েছে। তখন তিন মরসুম ধরে কোকাবুরা নামে অন্য সংস্থার বল ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষা খুব একটা সাড়া ফেলেনি বলে এ বছর থেকে দলীপ ট্রফি ফের গোলাপি বল থেকে লাল বলের খেলায় ফিরেছে।
তবে এসজি সংস্থার কর্তা জানিয়ে দিয়েছেন, বোর্ডের তরফে বড় অর্ডার সত্যিই এসে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ছয় ডজন গোলাপি বল অর্ডার দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আমাদের বলই ব্যবহার করা হয়েছিল। যদিও সেগুলো ছিল লাল বল। তবে বলের গুণগত মানে যে অনেক উন্নতি হয়েছে, সেটা সকলেই দেখেছে।’’ এসজি বল নিয়ে এর আগে ভারতীয় ক্রিকেটারেরাও খুব প্রসন্ন হতে পারেননি। বিরাট কোহালি সমালোচনা করে বলেছিলেন, দেশের মাঠে ব্যবহৃত এসজি বলের পালিশ এবং কার্যকারিতা ডিউক্স বা কোকাবুরা বলের আগেই নষ্ট হয়ে যায়। ডিউক্স বল ব্যবহার করা হয় ইংল্যান্ডে এবং কোকাবুরা অস্ট্রেলিয়ায়। এই মরসুমে এই বলের গুণগত মানে উন্নতি ঘটেছে বলে মেনে নিয়েছেন কোহালি। তবে পাশাপাশি, এ-ও জানিয়েছেন যে, টেস্টে অন্তত ৬০ ওভার পর্যন্ত বলগুলো টেকা দরকার। অতীতে বোলারদের অসুবিধার কথা ভেবেই দেখা দরকার এই সংস্থার গোলাপি বল কী রকম ব্যবহার করে। তবে সংস্থার পক্ষ থেকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, ঐতিহাসিক প্রথম দিনরাতের টেস্টের জন্য উপযুক্ত বলই দেওয়া হবে। ‘‘আমাদের গত সপ্তাহেই বলা হয়েছে, গোলাপি বল লাগতে পারে। আমরা তাই তৈরি। ২০১৬-’১৭ মরসুম থেকেই আমরা ভাল গোলাপি বল তৈরি করার চেষ্টা করছি,’’ বলেছেন সংস্থার এক শীর্ষ কর্তা।
লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে ধুলো বেশি লাগার সম্ভাবনা বলে দ্রুত তা নোংরা হয়ে যেতে পারে। তখন বলের রং কালচে হয়ে গিয়ে দেখতে অসুবিধা হতে পারে। সেই সমস্যাকেও মেটানোর চেষ্টা করছেন সংস্থার কর্তারা। আর একটি চিন্তা হতে চলেছে শিশির। ২২ নভেম্বর থেকে টেস্ট শুরু ইডেনে। সেই সময় রাতের দিকে ভাল রকম শিশির পড়তে পারে। তার মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ স্প্রে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে সিএবি। সৌরভ নিজে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, শিশিরের পরিমাণ কমানোর জন্য যা যা পদক্ষেপ করা দরকার, সব করা হবে।