ডাভ হোয়াটমোর
বাংলাদেশের কোচ হিসেবে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। ২০০৭ বিশ্বকাপে তাঁর প্রশিক্ষণেই ভারতকে হারিয়ে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে দিয়েছিল বাংলাদেশ। জ়িম্বাবোয়েকে হারিয়ে তাঁর অধীনেই প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন হাবিবুল বাশাররা। ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বাশার, মহম্মদ আশরাফুলদের উন্নতির নেপথ্য নায়ক সেই ডাভ হোয়াটমোর বর্তমান দলের পারফরম্যান্সে হতাশ।
শনিবার বাংলাদেশের এক ইনিংস এবং ১৩০ রানে হারের পরে কেরল থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে হোয়াটমোর বলেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এই ফল প্রত্যাশিতই ছিল। প্রথমত শাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে ছাড়া ভারতের এই দলের বিরুদ্ধে ওদের মোকাবিলা করার কঠিন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, টেস্টকে এখনও যথেষ্ট প্রাধান্য দিতে শুরু করেনি ওরা।’’
তিনি আরও বললেন, ‘‘সীমিত ওভারের ক্রিকেটে যে মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশ খেলে, টেস্টে তা দেখা যায় না। ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শাকিব, তামিমকে ছাড়াই কিন্তু খেলেছিল বাংলাদেশ। ওদের অভাব কিন্তু সে রকম অনুভব করা যায়নি। এ বার থেকে টেস্টকেও উপভোগ করার কাজ শুরু করতে হবে ওদের।’’
হোয়াটমোরের সময়ে টেস্টেও বাংলাদেশ খারাপ ফল করেনি। জ়িম্বাবোয়েকে হারিয়েছে। ফাতুল্লায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে গিয়েছিল। ড্র করেছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তা হলে এখন কেন এই দশা? হোয়াটমোরের উত্তর, ‘‘হারের অন্যতম কারণ অবশ্যই রক্ষণাত্মক মনোভাব। মহম্মদ শামিদের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ওপেনারেরা বলের নাগালই পাচ্ছিল না। বিপক্ষকে ওদের উপরে চাপতে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আমি কোচ থাকাকালীন স্পষ্ট বলে দিতাম, হারতে রাজি আছি। কিন্তু লড়াই ছাড়া হারতে পারব না। মাঠে নেমে বিপক্ষকে বুঝিয়ে দাও, বাংলাদেশকে ছোট দল হিসেবে দেখলে ভুল করবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে যদিও টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্তটি সাহসী ছিল। কিন্তু তার সদ্ব্যবহার করার কোনও চেষ্টাই দেখতে পাওয়া যায়নি। ভেবেছিলাম ইমরুল কায়েস তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবে। ওকে দেখে আমি হতাশ।’’
টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে। উপমহাদেশের বাইরে থেকে এই দল কতটা পয়েন্ট সংগ্রহ করতে পারবে? হোয়াটমোরের জবাব, ‘‘পেস বিভাগে উন্নতি করতে না পারলে এই কাজ খুবই কঠিন। আবু জায়েদ ভাল প্রতিভা। কিন্তু এবাদত হোসেন বড্ড শর্ট বল করে ফেলছে। সেই সঙ্গে দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদেরও উদাহরণ হয়ে উঠতে হবে। ভাল ইনিংস খেলে জুনিয়রদের অনুপ্রাণিত করতে হবে। উইকেটে থিতু হয়ে গেলে বড় ইনিংস গড়ার চেষ্টা করতে হবে। উইকেট ছুড়ে দিয়ে আসলে স্বপ্নপূরণ হবে না।’’