বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নরেশ কুমার
এক জনের বয়স ঊননব্বই। অন্য জনের ছিয়াশি।
ডেভিস কাপে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক নরেশ কুমার এবং মেলবোর্ন অলিম্পিক্সে ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বদ্রু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জীবনকৃতি সম্মান দিতে চলেছে রাজ্য সরকার। নরেশ আট বার ডেভিস কাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আর বদ্রু তো বাংলা ও ভারতীয় ফুটবলের এক উজ্জ্বল নাম।
সোমবার ক্রীড়া দিবসে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বাংলার এই দুই প্রবীণ ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের হাতে সম্মান তুলে দেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তুলে দেওয়া হবে ট্রফি ও পাঁচ লাখ টাকার চেক। দু’জনের কাছে চিঠি পৌঁছে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
গত কয়েক বছর ধরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তিনটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে বর্তমান ও প্রাক্তন নামী ক্রীড়াবিদদের। এ বার নামের তালিকা তৈরি হয়ে গেলেও তা গোপন রাখা হয়েছে। যাঁদের চিঠি পাঠানো হচ্ছে তাঁদেরও ক্রীড়া দফতরের পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে পুরো ব্যাপারটি গোপন রাখার জন্য। জানা গিয়েছে, এ বার ক্রীড়াগুরু সম্মান পেতে চলেছেন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। তেরো বছর পর ক্লাবকে আই লিগ এনে দেওয়ার জন্য। দেরিতে হলেও স্বীকৃতি পাচ্ছেন তিনি। গত কয়েক বছর ফুটবলাররা বেশি পুরস্কৃত হচ্ছেন বলে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল সর্বত্র। এ বার তালিকায় প্রাক্তন ফুটবলার কার্তিক শেঠের নামই শুধু রয়েছে বলে খবর। প্রাপকদের মধ্যে সেই অর্থে ছোট খেলার সফলরাই প্রাধান্য পেয়েছেন বেশি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সফল প্যারালিম্পিক্সের কয়েক জন ক্রীড়াবিদকে পুরস্কৃত করা হবে। এই প্রথম মেয়ে ফুটবলার ও রেফারিরা পুরস্কৃত হবেন। প্রাক্তন ফিফা রেফারি মিলন দত্ত পুরস্কৃত হচ্ছেন। মহিলা ফুটবলার জুডি ডি’সিলভার নাম রয়েছে তালিকায়। টেবল টেনিসে কুড়ি বছর পর বাংলাকে জাতীয় সিনিয়র বিভাগে সোনা এনে দেওয়ার জন্য অনিন্দিতা চক্রবর্তী ও সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় পাচ্ছেন বাংলার গৌরব পুরস্কার। একই সম্মন পাচ্ছেন সাঁতারু সুরজিৎ ঘোষ।
আরও পড়ুন:
সুনীলদের নজরদারিতে মোবাইল অ্যাপ
অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা জানানো হবে রিও অলিম্পিক্সে চতুর্থ হয়ে দেশ জুড়ে আলোড়ন ফেলে দেওয়া মেয়ে জিমন্যাস্ট দীপা কর্মকারকে। পুরস্কৃত করা হবে দীপার কোচ দ্রোণাচার্য বিশ্বেশ্বর নন্দীকেও। দিল্লি থেকে ফোনে বিশ্বেশ্বরবাবু বললেন, ‘‘আমরা আমন্ত্রণ পেয়েছি। দীপা জাতীয় শিবিরে অনুশীলন করছে। এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে কলকাতায় ওই অনুষ্ঠানে যাব।’’ দীপা ছাড়াও রিও-তে ব্যাডমিন্টনের রুপো জয়ী পি ভি সিন্ধুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংবর্ধনা জানানোর জন্য। তবে তিনি সম্ভবত আসতে পারছেন না। বিদেশে একটি টুনার্মেন্টে খেলতে যাওয়ার কথা তাঁর।
ওই অনুষ্ঠানে আরও একটি চমক থাকছে। এত দিন জালন্ধর থেকেই ফুটবল আসত বাংলায়। ফলে দাম পড়ত বেশি। এ বার অনেক কম খরচে সেই বল তৈরি হচ্ছে বাংলায়। চাহিদা মেটাতে। হুগলির তারকেশ্বর ও চন্দননগরে সমবায় ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে এই বল। রাজ্য সরকারের একটি দফতরের উদ্যোগে। পুরস্কারের দিনেই দেখানো হবে নতুন বল।