আবেগাপ্লুত: অবসর ঘোষণার মুহূর্তে চোখে জল লি চংয়ের। এপি
মালয়েশিয়ার কিংবদন্তি ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় লি চং উই অবসর নিলেন। ৩৪৮ সপ্তাহ বিশ্বের এক নম্বরের সিংহাসন ধরে রাখার কৃতিত্ব দেখানো তারকা লি ক্যানসার সারিয়ে কোর্টে ফেরার লড়াইয়ে ছিলেন। আশা করা হচ্ছিল তিনি দ্রুত ফিরে আসবেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন ছিল। আমি সত্যিই এই খেলাটাকে ভালবাসি। কিন্তু ব্যাডমিন্টন খেলতে গেলে অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। গত ১৯ বছর ধরে আমায় যে ভাবে সমর্থন করে এসেছেন মালয়েশিয়ার মানুষ, তার জন্য ধন্যবাদ।’’
দুই সন্তানের বাবা লি গত বছর নাকের ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এর পরে তাইওয়ানে চিকিৎসা হয় তাঁর। তখন তিনি জানিয়েছিলেন কোর্টে ফেরার তর সইছে না। কিন্তু গত এপ্রিল থেকে তিনি অনুশীলন করতে পারেননি। একাধিক বার প্রত্যাবর্তনের দিন ঠিক করেছেন, কিন্তু তা রাখতে পারেননি। তাই টোকিয়ো অলিম্পিক্সে নামার স্বপ্ন বাস্তবে সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন তিনি। তিন বারের অলিম্পিক্স রুপোজয়ী বলেছেন এ বার বিশ্রাম করতে চান, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। এমনকী স্ত্রীকে ‘মধুচন্দ্রিমা’তেও নিয়ে যেতে চান। ২০১২ সালে তাঁদের বিয়ের পর থেকে যা ক্রমশ পিছিয়ে এসেছে।
‘‘আমার আসল পরিকল্পনা ছিল অলিম্পিক্সের পরে অবসর নেওয়ার। কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে হল। আপনারা জানেন আমার বিয়ে হয়েছে ২০১২ সালে। কিন্তু আমাদের মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া হয়ে ওঠেনি এত দিন। স্ত্রীকে কথা দিয়েছিলাম। এ বার ওকে খুশি করতে হবে,’’ বলেন তিনি। অবসর নেওয়ার কথা বলা শুরু করতেই আবেগে গলা বুজে আসে ৩৬ বছরের লি-র। প্রায় মিনিটখানেক কথা বলতে পারেননি। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়তে থাকে জল।
লি-র অবসরের কথা শুনে টুইট করেছেন ভারতের ব্যাডমিন্টন তারকা সাইনা নেহওয়াল। তাঁর টুইট, ‘‘বহু বছর তোমার খেলায় মুগ্ধ হয়েছি। তুমি ব্যাডমিন্টনের কিংবদন্তি। তোমার অবসরের কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে। ভবিষ্যত জীবন খুব ভাল কাটুক। নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রেখো।’’
বর্ণময় খেলোয়াড় জীবনে লি অনেক সম্মানই পেয়েছেন। কিন্তু তাঁর আক্ষেপ থেকে যাবে টানা তিন বার অলিম্পিক্স ফাইনালে উঠলেও সোনা না জেতার। যার মধ্যে দু’বার তাঁর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী লিন ডান এবং গত বার চেন লং-এর বিরুদ্ধে হারেন। পাশাপাশি তিন বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠলেও (২০১১, ২০১৩ ও ২০১৫) এই সম্মানটাও অধরাই থেকে গেল কিংবদন্তি লি চং-এর।