শনিবার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। রবিবার খেলবে মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে সুখের দু’দিন। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহান্তটি উপভোগ্য হতে চলেছে তাঁদের জন্য। শনিবার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ভারত বনাম পাকিস্তান এবং রবিবার ফুটবলপ্রেমীদের জন্য থাকছে ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান। প্রথমটি শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে। দ্বিতীয়টি কলকাতায়। দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব ২,৯৯৮ কিলোমিটার। এই দূরত্ব ঘুচিয়ে দেবে দুই মহারণ।
এশিয়া কাপের ম্যাচ রয়েছে শনিবার। চার বছর পর আবার এক দিনের ক্রিকেটে মুখোমুখি হবে ভারত এবং পাকিস্তান। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে শেষ বার ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেছিল এই দুই দেশ। মাঝে শুধুই টি-টোয়েন্টি খেলেছিল তারা। রোহিত শর্মার দল এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে শনিবার। পাকিস্তান ইতিমধ্যেই নেপালের বিরুদ্ধে খেলে ফেলেছে। সেই ম্যাচ দাপটের সঙ্গে জিতেছে তারা। শনিবার জিতলেই পাকিস্তানের সুপার ফোরে ওঠা নিশ্চিত। ভারত এশিয়া কাপ শুরুই করতে চাইবে জয় দিয়ে। শেষ পাঁচ বার এক দিনের ম্যাচে চারটিতেই জিতেছে ভারত। রোহিতেরা সেই ধারা বজায় রাখতে চাইবে। শনিবার ম্যাচ শুরু দুপুর ৩টে থেকে। খেলা দেখা যাবে স্টার স্পোর্টস ১-এ। মোবাইলে খেলা দেখার জন্য প্রয়োজন হটস্টার অ্যাপটি।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে পারদ চড়তে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই হুমকি দিয়ে রেখেছেন ওয়াসিম আক্রম। পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, “শেষ বার শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপ জিতেছিল। ভারত তো ফাইনালেও উঠতে পারেনি। গত বারও আমরা ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হবে বলে ধরে নিয়েছিলাম। কিন্তু সবাইকে টেক্কা দিয়ে শ্রীলঙ্কা ট্রফি জিতে নেয়। তিনটে দলই কিন্তু বিপজ্জনক।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারতের হার্দিক পাণ্ড্য আবার এই ম্যাচ খেলতে নামার জন্য উত্তেজিত। তিনি বলেন, “ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের সঙ্গে প্রচুর আবেগ জড়িয়ে থাকে। ক্রিকেটপ্রেমীরা এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকেন। আমরা দল হিসাবে ভাল ক্রিকেট খেলতে চাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ওরা বেশ শক্তিশালী দল। সম্প্রতি এক দিনের ক্রিকেটে ওদের পারফরম্যান্সও ভাল। গোটা দুয়েক প্রতিযোগিতার ফাইনালও খেলেছে। অস্বীকার করার জায়গা নেই। এই ম্যাচে চাপ থাকেই। তবে আমরা মাঠের বাইরের বিষয়গুলো বাইরেই রাখতে চাই। মাঠে নেমে অন্য কিছু মাথায় না রেখে ভাল খেলাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।”
নেপালকে হারানোর পর পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে আমরা ভাল প্রস্তুতি নিতে পারলাম এই ম্যাচটা খেলে। নেপালের বিরুদ্ধে জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমরা প্রতিটি ম্যাচে নিজেদের ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। আশা করি পরের ম্যাচেও এটা বজায় রাখতে পারব।” যদিও বাবরকে চিন্তায় রাখতে পারে শাহিন আফ্রিদির চোট। যদিও সেই চোট খুব বড় নয় বলেই মনে করা হচ্ছে।
ভারতীয় দলে চোট সারিয়ে ফিরেছেন যশপ্রীত বুমরা এবং শ্রেয়স আয়ার। লোকেশ রাহুল যদিও এই ম্যাচ খেলতে পারবেন না। তাই ঈশান কিশনকে দেখা যাবে উইকেটরক্ষক হিসাবে। তিনি খেললেও ওপেন করবেন কি না সেই দিকে নজর থাকবে।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
অন্য দিকে, ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান ডুরান্ড কাপের ফাইনাল খেলবে ১৯ বছর পর। সেই ম্যাচ হবে যুবভারতীতে। রবিবার বিকেল ৪টে থেকে শুরু ম্যাচ। কলকাতা ডার্বি দেখা যাবে সোনি স্পোর্টস ৫ চ্যানেলে। মোবাইলে এই ম্যাচ দেখার জন্য থাকতে হবে সোনি লিভ অ্যাপটি। গ্রুপ পর্বে একে অপরের বিরুদ্ধে খেলেছিল এই দুই দল। সেখানে শক্তিশালী মোহনবাগানকে ১-০ গোলে হারিয়ে চমক দেয় ইস্টবেঙ্গল। টানা আটটি ডার্বিতে হারার পর ঘুরে দাঁড়ায় লাল-হলুদ। মোহনবাগান সেই হারের বদলা নিতে চাইবে রবিবার।
ইস্টবেঙ্গল আগের ডার্বি জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামবে ফাইনাল খেলতে। তাই তারাও সহজে ছেড়ে দেবে না। যদিও মোহনবাগান কোচ বদলার কথা বলছেন না। ফাইনালে উঠে জুয়ান ফেরান্দো বলেন, “ডার্বি আমার কাছে বদলার নয়।” যদিও সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকার আর্মান্দো সাদিকুর অন্য সুর। তিনি বলেন, “আগের ডার্বিতে আমি ভাল খেলতে পারিনি। তাই এই ডার্বিতে ভাল খেলে বদলা নিতে চাই।” ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রত ফাইনালে ওঠার পর বলেছিলেন যে, প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছেন না তিনি। কুয়াদ্রত বলেন, “১৯ বছর পর ডুরান্ডের ফাইনালে ওঠায় ক্লাবের জন্য আমি খুশি। এত বছর পরে ফাইনালে উঠতে পেরে সত্যিই দারুণ লাগছে। এ বার আমাদের বিশ্রাম নিয়ে ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। কোন দলের বিরুদ্ধে খেলতে হবে সেটা নিয়ে ভাবছি না। নিজেরা ফাইনালে উঠতে পেরেছি, তাতেই খুশি।”
কলকাতা ডার্বির টিকিটের জন্য লাইন। —নিজস্ব চিত্র।
সমর্থকেরা মুখিয়ে থাকবেন শনি এবং রবিবার তাঁদের প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতে। এশিয়া কাপের ম্যাচে ভারত-পাকিস্তানের দিকে তাকিয়ে থাকবে গোটা দেশ। কলকাতা ডার্বির দিন শহর ভাগ হয়ে যাবে নিজেদের দলের সমর্থনে। ক্রীড়াপ্রেমীরা এখন তাই অপেক্ষা করছেন রাত পোহানোর।