স্কোয়ার কাট
ICC

বিদেশে টেস্ট জিতলে এ বার থেকে বেশি পয়েন্ট দিক আইসিসি

ক্রিকেটের চিরন্তন রীতি হল, যে ক্রিকেটার বিদেশে সাফল্য পায়, তাকে আলাদা মর্যাদা দেওয়া হয়।

Advertisement

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:১৪
Share:

নিউজ়িল্যান্ডের কৃতিত্ব একটুও ছোট না করে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে একটা প্রশ্ন কিন্তু তোলা যায়। বা বলা ভাল, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট বণ্টন পদ্ধতি নিয়ে।

Advertisement

আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, দেশে এবং বিদেশে টেস্ট জিতলে একই সংখ্যক পয়েন্ট পাওয়া যায়। যা কিন্তু মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়। আমি মনে করি বিদেশের মাটিতে সিরিজ জিতলে বাড়তি পয়েন্ট দেওয়া উচিত। ভারত যেমন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হওয়ার পরে দু’টি বিদেশ সফরে জিতেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২-০ ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-১। তার আগেও অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় আছে। কিন্তু সেটা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে। অথচ নিউজ়িল্যান্ড নির্দিষ্ট সময়ে বিদেশে কোনও সিরিজ জেতেনি। শ্রীলঙ্কায় গিয়ে ১-১ ড্র করেছে। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ০-৩ হেরেছে। দেশের মাটিতে ভারত, পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইওয়াশ করে ফাইনালে উঠে গেল কেন উইলিয়ামসনরা!

ক্রিকেটের চিরন্তন রীতি হল, যে ক্রিকেটার বিদেশে সাফল্য পায়, তাকে আলাদা মর্যাদা দেওয়া হয়। কারণ সকলেই জানে, বিদেশে গিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ভাল কিছু করতে পারাটাই একজন বোলার বা ব্যাটসম্যানের কাছে সর্বোচ্চ পরীক্ষা। ঠিক সে ভাবেই একটা দল আলাদা সম্মান পায় বিদেশে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে টেস্ট জিতলে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা আইসিসি-ই সেটা বুঝল না। আগামী মরসুমে আশা করব, পয়েন্ট বণ্টন সংক্রান্ত নিয়মে বেশ কিছু বদল হবে।

Advertisement

এ তো গেল একটা দিক। পাশাপাশি ভারতীয় ব্যাটিং ব্যর্থতার কথাটাও অবশ্যই বলতে হবে।

ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি, নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ফাইনালে পরিস্থিতি ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরেই হেরেছে ভারত। তার উপরে দলের কেউ কেউ আবার সেই গতানুগতিক ধারায় নিজেদের ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজে ভারতকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে কিন্তু এই সময়ের মধ্যে বেশ কিছু জায়গা মেরামত করতেই হবে।

বিদেশের মাটিতে বরাবরই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ব্যাটিং। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের এই মরসুমের শুরু থেকে দেখলেই ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। ভারতীয় অধিনায়কের ব্যাটে শেষ সেঞ্চুরি এসেছে ইডেনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দিন-রাতের টেস্টে। ২০১৯-এর নভেম্বরের পর থেকে বিরাট কোহালির ব্যাটে সেঞ্চুরি নেই। বিদেশের মাটিতে এখনও তিন অঙ্কের রান করতে পারেননি রোহিত শর্মা। অস্ট্রেলিয়া সফরে অজিঙ্ক রাহানে শেষ সেঞ্চুরি করেছে।

চেতেশ্বর পুজারার ব্যাটেও নেই সেঞ্চুরি। শেষ সেঞ্চুরি করেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। অথচ ওকে দিনের পর দিন তিন নম্বরে নামার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। ম্যাচের পরিস্থিতি যে রকমই হোক, পুজারা নিজের খেলার ধরন কিন্তু পাল্টায় না। ইংল্যান্ডের মাটিতে একজন ব্যাটসম্যান কখনও উইকেটে থিতু হয় না। তাই রান করে যাওয়াই নীতি। উইকেট পড়লেও যাতে রান এগিয়ে যায়। পুজারা কিন্তু নিজের সেই পুরনো ব্যাটিং ঘরানা থেকে বেরোতে পারছে না।

ভারতের প্রথম ছয় ব্যাটসম্যান দীর্ঘদিন ধরে বড় রানের ইনিংস খেলতে না পারার ফল ভুগছে দল। বড় রান বলতে শেষ বার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ২০১৯-এর নভেম্বরে, ইনদওরে ৪৯৩। তার পর থেকে সাড়ে চারশোর গণ্ডি পেরোতে পারেনি বিরাটরা। নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ছ’ইনিংসে তো আড়াইশো রান ছুঁতে পারল না ভারত। সবাই একটা বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে বল করছে বিরাট, পুজারাদের। বিরাটকে যেমন ভিতরে আসা বল ক্রমাগত খেলিয়ে একটি বাইরে বল করা হচ্ছে। পুজারা আবার সমস্যায় পড়ছে শর্ট বল ও ইনসুইংয়ে। ঠিক তেমনই ওপেনার শুভমন গিলকে সামনের পায়ে শট খেলার প্রলোভন দেখিয়ে আউট করা হচ্ছে। এই সমস্যাগুলো যত দ্রুত মিটিয়ে নেওয়া যায়, ততই মঙ্গল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement