ফাইল চিত্র
রাজকোট, ১২ মার্চ: মরসুমের শুরু থেকে বাংলার ক্রিকেটারদের একটিই কথা বলে এসেছেন কোচ অরুণ লাল। ‘‘ফলের আশা কোরো না। পরিশ্রম করো। সেরাটা দাও। ফল এমনিই আসবে।’’
মরসুম শেষ হওয়ার আগের দিনও তাঁর মন্ত্রের সুর একই রকম। দলীয় বৈঠকে বলে দিয়েছেন, ‘‘আগে মন জেতো। তার পরে ম্যাচ জিতবে।’’ কোচের এই মন্তব্য দার্শনিকসুলভ মনে হলেও, দলের উপর থেকে চাপ কমিয়ে দিতে বাধ্য। একটি দল যারা ইতিহাস রচনা করার দোরগোড়ায়, তাদের উপর চাপ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু কোচই যদি এতটা চাপহীন থাকতে পারেন, ক্রিকেটারেরা কেন পারবেন না?
বাংলা শিবিরে রঞ্জি ট্রফির গন্ধ পাওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অনুষ্টুপ মজুমদার ও অর্ণব নন্দীর সপ্তম উইকেটের জুটি ইতিমধ্যেই যোগ করেছে ৯১ রান। আর ৭২ রান করতে পারলেই প্রথম ইনিংসে এগিয়ে যাবে বাংলা। কিন্তু মাত্র একটি উইকেটের পতনে বদলে দিতে পারে পুরো অঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে অনুষ্টুপকে কী বললেন অরুণ? সাংবাদিকদের কোচ বলেন, ‘‘রুকুকে (অনুষ্টুপের ডাক নাম) বলে দিয়েছি, তোকে অমর হতে হবে। স্থান করে নিতে হবে ইতিহাসে। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করে প্রমাণ করে দিয়েছিস নিজের প্রতিভা। ফাইনালেও তোরই নায়ক হয়ে ওঠার সময়।’’
শেষ রাত থেকেই ঘুমের সমস্যা শুরু হয়েছে ঈশান পোড়েল, আকাশ দীপদের। চোখ বন্ধ করলেই স্বপ্ন দেখছেন রঞ্জি ট্রফির। কোচও একই স্বপ্নে ডুবে। বলছিলেন, ‘‘শেষ কয়েকটি রাত ঠিক মতো ঘুমোতে পারছি না। ঘুম ভাঙলে আর ঘুম আসতে চাইছে না। তবে এই অনুভূতি উপভোগ করছি। সকালেই প্রত্যেককে বলে দিয়েছি, তোরা ম্যাচ জেতার জন্য খেলবি না। মন জেতার জন্য খেলবি।’’
কী মনে হচ্ছে? বাংলার রঞ্জি জেতার সম্ভাবনা কতটা?
কোচের উত্তর, ‘‘১১০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে। ড্রেসিংরুমের পরিবেশও ইতিবাচক। প্রত্যেক বলের মান অনুযায়ী খেলব। লড়াই করে যাব শেষ সম্ভাবনা পর্যন্ত। এটাই দলের মন্ত্র।’’ কোচের এই মন্তব্য সাধারণ কাউকেও উদ্বুদ্ধ করে দিতে পারে। তাই এক সময় কার্যত হারিয়ে যাওয়া অর্ণব নন্দী এখন বাংলাকে রঞ্জি জেতার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। মরসুমের প্রথম তিন ম্যাচে বাদ পড়া অনুষ্টুপ নায়ক। বাদ পড়া সুদীপ চট্টোপাধ্যায় আসল সময় জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস উপহার দিয়ে গেলেন। কোচ পাশে থাকলে অনেক কঠিন পথ অতিক্রম করা সম্ভব।