বিরাটের পরামর্শে শুটিং ইডেনে
jhulan goswami

ঝুলনের কাছে প্রতি সপ্তাহেই বোলিং-পাঠ অনুষ্কার

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের জার্সি-ট্রাউজার ও টুপি পরে মাঠের ভিতর আবির্ভূত হলেন অনুষ্কা। 

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪৮
Share:

মুখোমুখি: শুটিংয়ের ফাঁকে অনুষ্কার সঙ্গে ঝুলন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ইডেনে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের পেসার ঝুলন গোস্বামীর বায়োপিক-এ শুটিং করার জন্য শনিবার তাঁর আসার কথা ছিল দুপুরে। যিনি অভিনয় করবেন, সেই অনুষ্কা শর্মার অনুরাগীরা ভিড় জমিয়েছিলেন ইডেনের সামনে।

Advertisement

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেও দেখা নেই অনুষ্কার। তবুও ভিড় সরেনি। মাঠে অবশ্য দুপুর থেকেই হাজির ছিলেন বায়োপিকের প্রযোজক সংস্থার লোকজনেরা। রাত আটটার পরে প্রবল শীত উপেক্ষা করেও ইডেন ও তার আশেপাশে থেকে গিয়েছিলেন বলিউড অভিনেত্রীর অনুরাগীরা। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ প্রতীক্ষার সমাপ্তি।

মাঠে তখন পরিচালক প্রসিত রায়ের তত্ত্বাবধানে শুটিং চলছিল ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের মাঠে নামার দৃশ্য। সেই সময়েই ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের জার্সি-ট্রাউজার ও টুপি পরে মাঠের ভিতর আবির্ভূত হলেন অনুষ্কা।

Advertisement

ভারতীয় ক্রিকেটের ‘ফার্স্ট লেডি’ মাঠে নেমেই সোজা চলে গিয়েছিলেন পরিচালকের কাছে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঝুলন স্বয়ং। ঝুলনকে জড়িয়ে ধরেন অনুষ্কা। হাত মিলিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বাংলার এই লড়াকু মহিলা ক্রিকেটারের সঙ্গে। তার পরেই শুরু হয়ে যায় রুপোলি পর্দায় ঝুলনের ভূমিকায় অভিনয় করা অনুষ্কার রান-আপ। ঝুলনের মতোই চুল ছোট করে কেটেছেন। হাঁটাচলাও পাল্টাতে হয়েছে। তাঁর মতো পকেটে হাত দিয়ে হাঁটার প্রস্তুতি নিলেন কিংবদন্তি পেসারের পাশে দাঁড়িয়ে। ঝুলন যখন শেখাচ্ছিলেন, একেবারে ছাত্রীর মতো দাঁড়িয়ে শুনছিলেন বিরাট-পত্নী। রান-আপ নেওয়া শুরু করার সময় যে ভাবে দু’হাত তোলেন ঝুলন, সেই ভঙ্গী মাঠেই শুট হয় অনুষ্কার।

মাস দেড়েক আগে ইডেেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলাপি বলে দিনরাতের টেস্টে সেঞ্চুরি করে গিয়েছেন বিরাট কোহালি। সেই ইডেনেই বল হাতে সারা রাত শুটিং করে গেলেন তাঁর স্ত্রী।

ছবির নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ‘চাকদহ এক্সপ্রেস’ নাম হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে প্রযোজক সংস্থার কারও কারও মত, নাম হতে পারে ‘ঝুলন’। এর আগে প্রসিতের ‘পরী’ ছবিতে অভিনয় করেছেন অনুষ্কা। কিন্তু বলিউড অভিনেত্রী দক্ষ ক্রিকেটারের মতো বোলিং করা শিখলেন কী ভাবে?

খোঁজখবর করে জানা গেল, প্রতি সপ্তাহে মুম্বই উড়ে যাচ্ছেন ঝুলন। অনুষ্কাকে হাতে ধরে বোলিং শেখানোর জন্য। মুম্বইয়ের বিশেষ মাঠে ঝুলনের কাছে এত দিন চলছিল তাঁর বোলার হওয়ার তালিম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রোডাকশনের এক কর্মী জানালেন, বলের গ্রিপ ধরা থেকে বোলিংয়ের সময় হাতের অবস্থান কী রকম থাকবে, রান-আপ কেমন হবে, কত দূর থেকে তা শুরু হবে, ডেলিভারির সময়ে কতটা লাফ দিতে হবে, ঝুলনের কাছ থেকে শিখেই কলকাতায় এসেছেন অনুষ্কা।

আরও জানা গিয়েছে, বিরাটের সঙ্গে আলোচনা করেই কলকাতায় শুটিং পর্ব রাখা হয়। ঝুলনের কাছে বোলিং শেখার ফাঁকেই তাঁর জীবনের লড়াইয়ের কথা শুনে মোহিত হয়ে যান অনুষ্কা। ভারতীয় দলের হয়ে খেলার সময়েও চাকদহ থেকে কৃষ্ণনগর লোকালে চেপে খেলতে আসার কথা জেনে অবাক হয়ে যান ‘রব নে বনা দে জোড়ি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশকারী অভিনেত্রী। সূত্রের খবর, বিরাটই নাকি পরামর্শ দেন, ঝুলনের বায়োপিকের শুটিং হোক ইডেনে। এমনকি ভারতীয় অধিনায়কই অনুষ্কাকে অনুপ্রেরণা দেন ঝুলনের ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য। কারণ এই মাঠই যে চাকদহের মেয়ের ঘাম-রক্ত ঝরিয়ে দেশের সেরা পেসার হয়ে ওঠার আঁতুড়ঘর। অনুষ্কা নাকি কলকাতায় শুটিং হলে প্রচারমাধ্যমের ভিড় বাড়বে, গোপন অনেক তথ্য বাইরে চলে যেতে পারে বলে এখানে শুটিং না করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু বিরাটের হস্তক্ষেপেই শুটিং হয় কলকাতাতে। এমনকি কৃষ্ণনগর লোকালে চেপে ঝুলনের কলকাতায় খেলতে আসার দিনগুলোও ফুটিয়ে তোলার জন্য লোকাল ট্রেনে অভিনয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement