ক্রোমা। ফাইল চিত্র
সদ্যোজাত অসুস্থ কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গিয়ে নাজেহাল হলেন আনসুমানা ক্রোমা। শেষ পর্যন্ত পুলিশের সাহায্যে রবিবার মাঝরাতে পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঁচ দিনের শিশুকে ভর্তি করেন কলকাতার দুই প্রধানে খেলা লাইবেরীয় স্ট্রাইকার।
বুধবার সকালে উত্তর কলকাতার এক নার্সিংহোমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ক্রোমার স্ত্রী পূজা। মেয়ের নাম রাখেন বিন্দু। সদ্যোজাত কন্যা ও স্ত্রীকে নার্সিংহোম থেকে শনিবার কালীকাপুরে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন ক্রোমা। কিন্তু রাতেই দেখা যায় শিশুটির গায়ের রং হলুদ হয়ে গিয়েছে। রবিবার পরীক্ষার পরে জানা যায়, জন্ডিসে আক্রান্ত শিশুটি। পিয়ারলেসের কলকাতা লিগ জয়ের অন্যতম নায়কের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘শুক্রবারই আমার মেয়ের চোখটা হলুদ ছিল। নার্স গুরুত্ব দেননি। শনিবার রাতে ওর চোখ আরও হলুদ হয়ে যায়। রবিবার সকালে পরীক্ষার পরে জানা যায় জন্ডিস হয়েছে। কিন্তু নার্সিংহোম থেকে জানানো হয়, সদ্যোজাতদের চিকিৎসার পরিকাঠামো নাকি তাদের নেই।’’এখানেই শেষ নয়। পূজা যোগ করেন, ‘‘সন্ধে ছ’টা নাগাদ বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাচ্চাকে নিয়ে যাই। কিন্তু তারা করোনা সংক্রমণের ভয় দেখিয়ে আমাদের জরুরি বিভাগেই ঢুকতে দেয়নি।’’
ক্রোমা এ বার বলেন, ‘‘ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিল। এ বার যাই বাইপাস সংলগ্ন আরও একটি শিশুদের বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে বলা হয়, শয্যা নেই। তাই রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ফিরে যাই উত্তর কলকাতার সেই নার্সিহোমে। কিন্তু এ বার তারা প্রথমে করোনার ভয় দেখায়। পরে বলে, শিশুদের ওয়ার্ড সারাই হচ্ছে। বুঝতে পারি ওরা ভর্তি নিতে চাইছে না।’’
অনেক হাসপাতাল অবশ্য দাবি করেছে, কোথাও সত্যি জায়গা ছিল না। কোথাও আবার ক্রোমাকে বুঝিয়ে বলা হয়েছে, তিনি যে ধরনের চিকিৎসা চাইছেন, তাদের সেই পরিকাঠামো নেই।
ক্রোমা ও তাঁর স্ত্রীর দাবি, পুলিশ হস্তক্ষেপ করার জন্যই পার্ক স্ট্রিটের হাসপাতালে মেয়েকে ভর্তি করাতে পেরেছেন। পূজা বললেন, ‘‘উত্তর কলকাতার ওই নার্সিংহোমে প্রায় তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল আমাদের। শেষ পর্যন্ত উপায় না দেখে আমার দাদা শ্যামপুকুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান। পুলিশ এসে অনুরোধ করার পরে আমাদের অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়।’’
এর পরেই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ পার্ক স্ট্রিটের একটি বেসরকারি শিশু হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করিয়ে কিছুটা স্বস্তি পান ক্রোমা ও পূজা। রাত দু’টো নাগাদ বাড়ি ফেরেন তাঁরা। পূজা জানিয়েছেন, সোমবার শিশুটির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এবি পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দিতে হবে। তাই গোটা পরিবার ও পাড়া এখন ব্যস্ত রক্ত জোগাড় করতে।