আধুনিক ক্রিকেটের সমস্ত অঙ্ক ও বিজ্ঞান বলছে, বিরাট কোহালি এখনও বহু দিন ভারতীয় ক্রিকেটের সেবা করবে। ছবি: এএফপি।
একজন ওয়ান ডে ক্রিকেটে খেলেছেন ৪৬৩ ম্যাচ। আর তাঁর শতরান ৪৯টি। তিনি সচিন তেন্ডুলকর।
অপর জন এ পর্যন্ত খেলেছেন ২২৪টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আর তাঁর শতরানের সংখ্যা ৪০। তিনি ভারতের বর্তমান ক্রিকেট অধিনায়ক বিরাট কোহালি।
আধুনিক ক্রিকেটের সমস্ত অঙ্ক ও বিজ্ঞান বলছে, বিরাট কোহালি এখনও বহু দিন ভারতীয় ক্রিকেটের সেবা করবে। তার ভিত্তিতেই বলতে পারি, যে গতিতে বিরাট একের পর এক শতরান করে নানা কীর্তি গড়ছে, তাতে সচিনের ওয়ান ডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি শতরানের রেকর্ড খুব বেশি দিন আর অক্ষত থাকবে না। আর কোহালি যখন খেলা শেষ করবে, তখন কোথায় গিয়ে থামবে, তা বোধহয় কম্পিউটারও বলতে পারবে না।
মঙ্গলবার সেই কোহালির শতরানই জেতাল ভারতকে। বিরাটের এই ১১৬ রানের জন্যই ভারত পৌঁছাতে পারে ২৫০ রানে। বিরাটের ওই ১১৬ রান বাদ দিলে বাকিদের সংগ্রহ ১৩৪ রান।
বিরাট কোহালির অনেক ভাল ইনিংস আমি দেখেছি। কিন্তু মঙ্গলবার নাগপুরের জামতা স্টেডিয়ামে বিরাটের ১২০ বলে ১১৬ রান ভারত অধিনায়কের জীবনের অন্যতম একটা নিয়ন্ত্রিত ইনিংস। একই সঙ্গে ওকে এ রকম দৌড়াতে দেখেও একটা বিষয় বুঝলাম, চূড়ান্ত ফিটনেস রয়েছে বলেই বিরাট উইকেটের মধ্যে এই দুরন্ত ভাবে দৌড়াতে পারে। সে কারণেই অদম্য গতিতে ও ধেয়ে যাচ্ছে সচিনের রেকর্ডের দিকে।
এই মাঠেই এ বার রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলা হয়েছে বিদর্ভ বনাম সৌরাষ্ট্রের মধ্যে। নাগপুরের এই মাঠে পিচের চরিত্র সাধারণত কিছুটা মন্থর ও টার্নার হয়। আমার মতে, বিরাট তাই হয়তো ইনিংসটা এ রকম নিয়ন্ত্রিত রাখল। দশটা চারের পাশাপাশি এ দিন কোহালি ১১৬ রানের মধ্যে ৬১টা সিঙ্গলস নিয়েছে। তবে এর মধ্যেই কোহালিয়ানাও বজায় ছিল। এ দিনও বিরাটের তিনটে শট এখনও চোখে ভাসছে। তার মধ্যে অ্যাডাম জ়াম্পাকে কভার ড্রাইভ মেরে চার রান একটি। বাকি দু’টোর মধ্যে নেথান কুল্টার নাইলকে একটি অন ড্রাইভে চার ও শতরানের সময় ওই একই বোলারকেই অফসাইডে ‘স্ল্যাশ’ করে যে চারটা মারল বিরাট, তা মুগ্ধ হয়ে দেখার মতো।
অম্বাতি রায়ডু (১৮) এ দিনও বড় রান পায়নি। আমার মতে, এ বার কিন্তু রায়ডুকে নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। তবে নজর কাড়ল বিজয় শঙ্কর (৪১ বলে ৪৬ রান)। দুর্ভাগ্য, এ দিন জ়াম্পার বলে রানআউট হয়ে অর্ধশতরান হারাল।
আমার মতে, ইংল্যান্ডের পরিবেশে কিন্তু বিজয় শঙ্কর কাজে লাগবে। বিশেষ করে ওর বোলিং। বিজয় শঙ্কর হল ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ১৯৯৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে যখন ভারতীয় দল যায়, তখন আমি জাতীয় নির্বাচক। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দলে ঢোকাতে গিয়ে ওর বোলিংয়ের উপর জোর দিয়েছিলাম। এ ক্ষেত্রেও বলব, নির্বাচকরা যেন বিশ্বকাপের দল নির্বাচন করতে বিজয় শঙ্করের বোলিংটা মাথায় রাখে।