অ্যান্ডি মারে। —ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডেই হেরে গেলেন বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় অ্যান্ডি মারে। আর্জেন্টিনার টমাস ইচভেরির কাছে ৪-৬, ২-৬, ২-৬ ব্যবধানে হেরে মোহভঙ্গ হয়েছে তাঁর। তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক ভবিষ্যতে আর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন না খেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
চোট সারিয়ে কোর্টে ফেরার পর থেকে অতীতের ছায়া হয়েই রয়েছেন মারে। টেনিস বিশ্বের ফ্যাব ফোরের অন্যতম স্কটিশ খেলোয়াড় কোনও প্রতিযোগিতাতেই সুবিধা করতে পারছেন না। তুলনায় অনামী খেলোয়াড়দের কাছেও হেরে যাচ্ছেন। যেমন সোমবার বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের ৩০তম বাছাই আর্জেন্টিনার ইচভেরির কাছে হারলেন সরাসরি সেটে। মেলবোর্ন পার্কে কোনও প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেননি ৩৬ বছরের মারে। এর আগে ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনালের প্রথম রাউন্ডে হেরে গিয়েছিলেন মারে। তাঁকে হারিয়ে ছিলেন গ্রিগর দিমিত্রভ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে বিদায়ের পর তিনি জানিয়েছেন, সমর্থকদের আবেগে আর আঘাত দিতে চান না। ভবিষ্যতে আর অস্ট্রেলিয়ান ওপেন না খেলার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি।
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মারে বলেছেন, ‘‘সম্ভবত এ বারই শেষ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেললাম। ম্যাচটা যে ভাবে শেষ হয়ে গেল, তাতে এমনই মনে করছি। সব কিছুই কেমন একটা হয়ে গেল। আমি নিশ্চিত নই। তবু মনে হচ্ছে এখানে শেষ ম্যাচ খেলে ফেললাম।’’ নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে মারে বলেছেন, ‘‘খেলার সময় আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করি। তখন নজর থাকে পয়েন্ট এবং কোর্টের মধ্যে অন্য বিষয়গুলোর দিকে। কিন্তু যখন ম্যাচ শেষ হওয়ার এক পয়েন্ট দূরে ছিলাম, তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। এত তাড়াতাড়ি ম্যাচ শেষ হয়ে যাবে ভাবতে পারিনি। সে জন্যই মনে হচ্ছে, এখানে শেষ ম্যাচটা খেলে ফেললাম।’’
পেশাদার টেনিসে সাফল্য ছাড়াও অলিম্পিক্সেও সোনার পদক রয়েছে মারের। কয়েক বছর আগেও উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ অনেক আশা নিয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতেন। দু’বার বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তিনি। কিন্তু একের পর এক চোট মারেকে প্রত্যাশিত সাফল্য থেকে দূরে রেখেছে। তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারছেন না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলতে হচ্ছে অবাছাই হয়ে। হতাশ মারে বলেছেন, ‘‘গত বছরও এর থেকে ভাল খেলেছিলাম। একটা ভাল অনুভূতি নিয়ে কোর্ট ছাড়তাম। যে দর্শকেরা, সমর্থকেরা আমার সঙ্গে থাকেন, তাঁদেরও হতাশ করেছি এ বার। আমার পারফরম্যান্স সত্যিই ভীষণ হতাশাজনক। এ ভাবে শেষ করাটা কঠিন। খুব কঠিন।’’
পেশাদার টেনিস থেকে অবসর নেওয়া নিয়ে অবশ্য কিছু বলেননি মারে। আপাতত শুধু অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মারে হয়তো চেষ্টা করবেন আগামী প্যারিস অলিম্পিক্স খেলার। চেষ্টা করবেন ঘরের কোর্টে আরও একটা উইম্বলডন খেলার। যদিও তিনি বুঝে গিয়েছেন টেনিসজীবনের শেষ প্রান্ত উপস্থিত। রজার ফেডেরার অবসর নিয়েছেন। রাফায়েল নাদাল এক বছর পর কোর্টে ফিরে আবার ছিটকে গিয়েছেন চোটের জন্য। অবসরের ইঙ্গিত দিলেন মারে। পেশাদার সার্কিটে একা হয়ে যাচ্ছেন ফ্যাব ফোরের নোভাক জোকোভিচ।