কে সেরা কোহলী না উইলিয়ামসন? —ফাইল চিত্র
টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, টেস্টের বিশ্বকাপ বললেও ভুল বলা হয় না। ঠিক এক মাস পর তার ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। ১৮ জুন সাদাম্পটনের সেই লড়াইয়ে ব্লেজার গায়ে টস করতে নামবেন বিরাট কোহলী এবং কেন উইলিয়ামসন। মাঠের লড়াইয়ের আগেই তাঁদের মধ্যে যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছেন মাইকেল ভন। সেই যুদ্ধে কোহলীর পাশে পাকিস্তানের সলমন বাট। ভনের কথা অনুযায়ী ব্যাটসম্যান হিসেবে কোহলীর থেকে এগিয়ে উইলিয়ামসন। বাটের আবার বক্তব্য ভনের কথা অবান্তর, পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু পরিসংখ্যান কী বলছে? টেস্টের বিশ্বকাপের আগে এগিয়ে রয়েছেন কোন দলের অধিনায়ক?
টেস্ট ক্রিকেট
লাল বলের খেলায় উইলিয়ামসনের অভিষেকের ৭ মাস পর অভিষেক হয় কোহলীর। ২০১১ সালের জুন মাসে। অভিষেক পরে হলেও এখনও অবধি বেশি ম্যাচ খেলেছেন কোহলীই। ৯১টি ম্যাচে ১৫৩টি ইনিংস খেলেছেন ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ২৭টি শতরান-সহ টেস্টে কোহলীর সংগ্রহ ৭৪৯০ রান। একটু পিছিয়ে রয়েছেন কিউই অধিনায়ক। ৮৩টি ম্যাচে তিনি খেলেছেন ১৪৪টি ইনিংস। ২৪টি শতরান-সহ উইলিয়ামসনের সংগ্রহ ৭১১৫ রান। রান কম থাকলেও উইলিয়ামসন সামান্য এগিয়ে গড়ে। টেস্টে কোহলীর গড় ৫২.৩৭ এবং উইলিয়ামসনের ৫৪.৩১। দ্বিশতরানের হিসেবে উইলিয়ামসনকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন কোহলী। এখনও অবধি ৭টি দ্বিশতরান করেছেন ভারত অধিনায়ক, কিউই অধিনায়কের ৪টি। আইসিসি-র ক্রমতালিকায় শীর্ষে রয়েছেন উইলিয়ামসন। কোহলী বেশ খানিকটা পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে।
কোন ধরনের ক্রিকেটে কে এগিয়ে? গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
একদিনের ক্রিকেট
২০০৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পরেই ভারতীয় দলে জায়গা করে নেন কোহলী। সে বারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক ছিলেন উইলিয়ামসন। তবে কোহলীর মতো সঙ্গে সঙ্গে নয়, বড়দের দলে তিনি প্রথম সুযোগ পান ২০১০ সালে। ম্যাচ খেলার ক্ষেত্রেও অনেকটাই পিছিয়ে উইলিয়ামসন। কোহলী ইতিমধ্যেই খেলে ফেলেছেন ২৫৪টি ম্যাচ। ২৪৫টি ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ১২ হাজার ১৬৯ রান। উইলিয়ামসন খেলেছেন ১৫১টি ম্যাচ। ১৪৪টি ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ৬১৭৩ রান। ম্যাচ কম খেলার কারণে তুলনা করাটা কিছুটা অনুচিত এই ক্ষেত্রে। তবে গড় বলছে এগিয়ে কোহলী। একদিনের ক্রিকেটে ভারত অধিনায়কের গড় ৫৯.০৭, উইলিয়ামসনের ৪৭.৪৮। কোহলীর সংগ্রহ ৪৩টি শতরান। এখানেও বেশ কয়েক মাইল পিছিয়ে কিউই ব্যাটসম্যান। উইলিয়ামসনের সংগ্রহ মাত্র ১৩টি শতরান। আইসিসি-র ক্রমতালিকায় প্রথম দশে নেই তিনি। কোহলী কিছু দিন আগে অবধিও শীর্ষে ছিলেন। তবে এই মুহূর্তে দ্বিতীয় স্থানে তিনি।
টি২০ ক্রিকেট
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব চেয়ে ছোট সংস্করণেও কোহলীর পরে পা রাখেন উইলিয়ামসন। ভারত অধিনায়কের অভিষেক হয় ২০১০ সালের জুনে। কিউই অধিনায়কের অভিষেক হয় ২০১১ সালের অক্টোবরে। ৯০টি ম্যাচ খেলছেন কোহলী। উইলিয়ামসন খেলেছেন ৬৭টি ম্যাচ। টি২০ ক্রিকেটে শতরান না থাকলেও কোহলীর সংগ্রহ ২৮টি অর্ধশতরান, সেখানে উইলিয়ামসনের সংগ্রহ ১৩টি। টি২০ ক্রিকেটে ভারত অধিনায়কের মোট সংগ্রহ ৩১৫৯ রান। উইলিয়ামসন করেছেন ১৮০৫ রান। গড়েও পিছিয়ে কিউই অধিনায়ক। কোহলীর গড় ৫২.৬৫, উইলিয়ামসনের ৩১.৬৬। আইসিসি-র ক্রমতালিকায় কোহলী রয়েছেন পঞ্চম স্থানে। এই ধরনের ক্রিকেটেও আইসিসি-র ক্রমতালিকায় প্রথম দশে নেই উইলিয়াসন।
ভন যতই বলুন কোহলীকে মানুষ ভাল বলেন নেটমাধ্যমে লাইক পাওয়ার জন্য, পরিসংখ্যান তেমনটা বলেছে না। বরং সব ধরনের ক্রিকেটে ৫০-এর ওপর গড় থাকা ভারত অধিনায়ক যে বেশ খানিকটা এগিয়েই রয়েছেন উইলিয়াসনের থেকে, তা বলাই যায়। টেস্ট ক্রিকেটে দু’জনের লড়াই কিছুটা সমানে সমানে। টেস্টের বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই ব্যাটসম্যান এবং অধিনায়কেরও নিজেকে প্রমাণ করার লড়াই। কে করবেন বাজিমাত?