গোটা যুবভারতী জুড়েই চলছে ভাঙা-গড়ার কাজ। ছবি: উৎপল সরকার
স্পনসরদের চাপ থাকলে যা হয়!
আর সেই চাপ যদি আসে আইএসএলের মতো টুর্নামেন্টের সংগঠন কমিটির তরফে, তা হলে যা হয় ঠিক তা-ই হচ্ছে। আগামী বছর অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য মাঠের পরিকাঠামো উন্নয়ন চলাকালীনই নজিরবিহীন তৎপরতায় যুবভারতী-সহ দেশের পাঁচটি মাঠে আসন্ন আইএসএল করার সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিল এআইএফএফ।
আইএসএলের পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজির এ বার মাঠ সমস্যা নিয়ে জেরবার ছিল টুর্নামেন্ট সংগঠক। এতটাই যে, ১ অক্টোবর টুর্নামেন্ট শুরুর কথা ভাবলেও সূচি ঘোষণা স্থগিত আছে এখনও। যুব বিশ্বকাপের জন্য প্রায় সব স্টেডিয়ামে কাজ চলছে পুরোদমে। ফিফা প্রতিনিধি দলের এ দেশের স্টেডিয়াম পরিদর্শনে আসার কথা ১৮ অক্টোবর। গত মরসুমে ডার্বি-সহ আই লিগের কোনও ম্যাচ করতে দেওয়া হয়নি যুবভারতীতে। তখন ফেডারেশন মাথা ঘামায়নি। আইএসএলের ক্ষেত্রে উলটপুরাণ।
আটলেটিকো কলকাতা-সহ পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দিনকয়েক আগে পাঠানো এক গোপন ই-মেলে ফেডারেশন লিখেছে, ‘‘২০১৭ অগস্টে ফিফা এ দেশের ফুটবল মাঠ নিয়ে নেবে যুব বিশ্বকাপের জন্য। যার এখনও এক বছর বাকি। ফলে সে সব মাঠে আপাতত ম্যাচ করতে সমস্যা নেই এআইএফএফের। তাতে বরং বিশ্বকাপের একটা ট্রায়াল হয়ে যাবে স্টেডিয়ামগুলোর।’’ চিঠির ভাষাতেই পরিষ্কার, যুব বিশ্বকাপের কাজ চললেও স্টেডিয়ামে আইএসএলের ম্যাচ করার সবুজ সঙ্কেত দিচ্ছে ফেডারেশন।
ফেডারেশন সচিব কুশল দাস ফোনে ই-মেলের কথা স্বীকার করে বললেন, ‘‘যুব বিশ্বকাপের জন্য ফেডারেশনের লোকাল সংগঠন কমিটির (এলওসি) তরফে আইএসএলের টিমগুলোকে জানানো হয়েছে ২০১৭-র অগস্টের আগে স্টেডিয়ামগুলোতে ঘরোয়া ম্যাচ হতে পারে। সমস্যা নেই।’’ যদিও এটিকে, দিল্লি বা গোয়ার কর্তাদের কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইছেন না।
এটিকে কি যুবভারতীতে ম্যাচের আয়োজন করতে পারবে? স্টেডিয়াম ঘুরে কিন্তু মনে হল, কাজটা কঠিন। স্টেডিয়ামের ভিআইপি গ্যালারি, প্রেসবক্স, বাথরুম ভেঙে ফেলা হয়েছে। সবুজ মাঠের চার ধারে যে অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাক ছিল সেটা তুলে ফেলা হয়েছে। মাটি তোলা হয়েছে নতুন ট্র্যাক বানানোর জন্য। বিরাট সব গর্ত। স্টেডিয়ামের বিভিন্ন গেটে সারাইয়ের কাজ চলছে।
যুবভারতীর সিইও জ্যোতিষ্মান চট্টোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এটিকের লোকজন মাপজোক করতে এসেছিলেন। তবে গ্যালারির একটা বড় অংশ, প্রেসবক্স বা বাথরুম বন্ধ থাকলে এখন ম্যাচ হবে কী করে?’’ কলকাতা কর্তারা অবশ্য আশায়, যুবভারতীতে হাজার কুড়ি দর্শক ঢুকতে দিলেও আইএসএলে এটিকের হোম ম্যাচ করা যাবে। এখন দেখার, রাজ্য সরকার সেই ঝুঁকি নেয় কি না!