ফানুস বসির ফেসবুক
তালিবান শাসনে ফুটবল খেলা তো দূরের কথা, নিজেদের প্রাণ নিয়েই সংশয়ে ছিলেন আফগানিস্তানের মহিলা ফুটবল দলের সদস্যরা। তাই নিজেকে বাঁচাতে লুকিয়ে ফ্রান্সে উড়ে গিয়েছেন ফানুস বসির। ফুটবল নিয়ে ভাবতে বসলেই মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে তাঁর। নতুন দেশে শূন্য থেকে জীবন শুরু করতে চান ফানুস।
আফগানিস্তানের ফুটবল নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলতে গিয়ে ফানুস বলেন, ‘‘আফগানিস্তানের মহিলাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। সে সব শেষ হয়ে গেল। সব স্বপ্ন বদলে গিয়েছে দুঃস্বপ্নে। আফগানিস্তানে মহিলাদের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তালিবান সব দখল করে নেবে।’’
তালিবান আফগানিস্তানের দখল নেওয়ার পর থেকেই বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ফানুসের। ভয়ে বাবা-মা কে নিয়ে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে সেখানেও বিপত্তি। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে তিনদিন আটকে থাকতে হয়েছিল তাঁদের। প্রচুর মানুষের ভিড়ের মধ্যেই গুলি চালাতে থাকে তালিবান। সেখানে তাঁদের এক প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন ফানুস। মহিলা হওয়ায় তাঁর সঙ্গে কথাই বলতে চাননি আফগানিস্তানের বর্তমান শাসক গোষ্ঠীর সেই প্রতিনিধি।
বিমানবন্দরের বাইরে থাকতে থাকতে একটা সময় দেশ ছাড়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন ফানুস। সেই সময় ফরাসী দূতাবাস থেকে ঘোষণা করা হয়, বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য বাসের ব্যবস্থা করা হবে। সেখান থেকে ফ্রান্সের বিমান ছাড়া হবে। এই সুযোগ আর হাতছাড়া করতে চাননি ফানুস। বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে ফ্রান্সে চলে গিয়েছেন আফগান ফুটবলার।
নিজের দেশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন ফানুস। ফ্রান্সে এসে নতুন চাকরি খোঁজার ইচ্ছে রয়েছে। তবে এখনও নিজের দেশের ভয়াবহ অবস্থার কথা মনে পড়লেই শিউরে উঠছেন ফানুস। এখনও আতঙ্ক কাটছে না তাঁর। শূন্য থেকে সবটা শুরু করতে চান আফগান ফুটবলার। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশ, আমাদের স্বপ্ন সমস্ত কিছু ভুলে যাওয়া খুব কঠিন। এখন শূন্য থেকে সবটা শুরু করব।’’