বেঙ্গালুরু এফসিকে উড়িয়ে দেওয়ার পর টিম হোটেলে খোশ মেজাজে রয় কৃষ্ণ ও শুভাশিস বসু। ছবি - এটিকে মোহনবাগান
গত আইএসএল-এ ১৫ গোল করার পর এএফসি কাপের অভিষেক ম্যাচেও গোল। বেঙ্গালুরু এফসি-কে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়ে ৯০ মিনিটের যুদ্ধে ফের বাঁশি বাজিয়ে দিলেন রয় কৃষ্ণ। ম্যাচের সেরা হলেন। তবে নিজের খেলা নয়, দলকেই এগিয়ে রাখছেন সবুজ-মেরুন অধিনায়ক।
ম্যাচের শেষে রয় বলেন, “এটা আমাদের কাছে খুবই কঠিন ও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ছিল। সব বিভাগেই ভাল খেলেছি আমরা। গোল করে ভাল লাগছে। কারণ, এএফসি কাপে এটাই আমার প্রথম গোল। কিন্তু কৃতিত্ব আমার একার নয়। হুগোর দুর্দান্ত কর্নারে শুভাশিস অসাধারণ একটা হেড করেছিল। গোলে ঢোকার আগে বলটা শুধু আমার মাথা ছুঁয়ে যায়।”
সতীর্থদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমরা আরও বেশি গোলে জিততে পারতাম। এটা আন্তর্জাতিক মঞ্চ। ভারতীয় ফুটবলারদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার সেরা জায়গা এটা। আমাদের রক্ষণ খুব ভাল খেলেছে। মাঝমাঠের সঙ্গে রক্ষণ ও ফরোয়ার্ডদের বোঝাপড়াও জেতার একটা বড় কারণ।”
বল দখলের লড়াইয়ে রয় কৃষ্ণ। ছবি - এটিকে মোহনবাগান
আইএসএল-এর পর এএফসি কাপেও সুনীল ছেত্রীর দলের বিরুদ্ধে এটিকে মোহনবাগান দাপট দেখাল। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আক্রমণাত্মক ফুটবল ও খেলোয়াড়দের একতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন কোচ আন্তোনিয়ো লোপেজ হাবাস।
গরমের সঙ্গে যোগ হয়েছিল শুকনো মাঠ। তবে পাঁচ মাস পরে সবুজ-মেরুন মাঠে নামলেও ফুটবলারদের মধ্যে কোনও জড়তা ছিল না। হাবাস বলেন, “গরমের সঙ্গে যোগ হয়েছিল শুকনো মাঠ। এমন প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে পাঁচ মাস পরে আমরা খেলতে নেমেছিলাম। ছেলেদের দায়িত্ববোধ ও পারফরম্যান্সে আমি খুশি। বেঙ্গালুরু সব সময়ই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। কিন্তু এ দিন আমরা দুর্দান্ত ছিলাম।”
শনিবার ২১ অগস্ট মাজিয়া এফসি-র বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে নামবে সবুজ-মেরুন। তার আগে এই জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলে মনে করেন স্প্যানিশ কোচ। তবে সাবধানে পা ফেলতে চাইছেন। তিনি বলেন, “মাজিয়া এফসি-র বিরুদ্ধে আগে কখনও খেলিনি আমরা। তাই সাবধানে এগোতে চাই।”
গোল করে শুভাশিসের হুঙ্কার। ছবি - এটিকে মোহনবাগান
এ দিন ২৬ বছরে পা দিলেন শুভাশিস বসু। ৩৯ মিনিটে রয় কৃষ্ণকে দিয়ে গোল করার সঙ্গে ৪৬ মিনিটে গোল করে দলের ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন জাতীয় দলের এই লেফট ব্যাক। জন্মদিনে গোল করে ও গোল করিয়ে স্বভাবতই খুশি শুভাশিস।
তাঁর প্রতিক্রিয়া, “আমি নিজে গোল করেছি। রয়কে গোল করতে সাহায্যও করেছি। তবে সবচেয়ে বড় কথা দল হিসেবে খেলে আমরা জিতেছি। জন্মদিনে এর চেয়ে বড় উপহার আর কী হতে পারে? আমার জীবনের সেরা দিন হয়ে থাকল এটা। এএফসি কাপে আগেও খেলেছি। কিন্তু গোল করিনি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল করতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। এ ভাবেই জিততে হবে আমাদের। আমার এই স্মরণীয় গোলটা উৎসর্গ করতে চাই সারা বিশ্বের সবুজ-মেরুন সমর্থকদের, যাঁরা আমাদের খেলা দেখেছেন ও আমাদের জয়ের জন্য প্রার্থনা করেছেন। পরের ম্যাচগুলোতেও সেরাটা দেওয়ার জন্য আমরা সবাই প্রস্তুত।”