ধাক্কা: অসুস্থ সৌরভকে দেখতে হাসপাতালে সুধীর। নিজস্ব চিত্র
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে বিশেষ অনুমতি চাইতে এসেছেন কলকাতায়। চেন্নাইয়ে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট দেখার জন্য। বুধবার বিকেলে সৌরভের বেহালার বাড়ির সামনে গিয়েও হাজির হন তিনি। তত ক্ষণে পরিবারের সদস্যেরা সৌরভকে নিয়ে ছুটেছেন হাসপাতালে। বোর্ড প্রেসিডেন্টের অসুস্থতার খবর শুনে তিনিও ভেঙে পড়েন। সৌরভের সঙ্গে যিনি দেখা করতে এসেছেন, তাঁর নাম সুধীর গৌতম। করোনা আবির্ভাবের আগে শঙ্খ নিয়ে তেরঙ্গায় শরীর রাঙিয়ে যিনি গ্যালারি একাই জমিয়ে দিতেন। সচিন-ভক্ত হলেও 'মাস্টার ব্লাস্টার'-এর অবসরের পরে ভারতের প্রত্যেকটি ম্যাচে গ্যালারিতে থাকতেন তিনি।
করোনার আবির্ভাবের পর থেকে মাঠে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু ভারতীয় দলের ভক্ত হিসেবেই যাঁরা পরিচিত, গায়ে তেরঙ্গা এঁকে দলের সঙ্গে প্রত্যেক মাঠে এত দিন যাঁরা ঘুরে বেরিয়েছেন, তাঁদের কাছে এই পরিস্থিতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। সচিন-ভক্ত সুধীর গৌতমের অবস্থাও সে রকমই।
এত দিন মাঠে গিয়ে খেলা দেখার জন্য স্পনসর পেতেন। সেই টাকায় চলত তাঁর সংসার। করোনার আবির্ভাবের পর থেকে ট্যাক্সিও চালিয়েছেন। অর্থ উপার্জনের চেষ্টাও করেছেন। কোনও লাভ হয়নি। তাই সময় নষ্ট না করে সরাসরি কলকাতা এসে হাজির সুধীর। বৃহস্পতিবার তিনি বাইপাসের ধারের হাসপাতালেও পৌঁছে যান, যেখানে ভর্তি ছিলেন সৌরভ। কোনও উপায় খুঁজে না পেয়ে সচিন তেন্ডুলকরকে ফোন করেন সুধীর। তাঁকে অনুরোধ করেন, সৌরভের সঙ্গে এক বার কথা বলে তাঁর ম্যাচ দেখার অনুমতি করে দিতে। চেন্নাইয়ে সমর্থকদের প্রবেশাধিকার না থাকলেও চেষ্টা করে যেতে চান তিনি। আনন্দবাজারকে সুধীর বলেন, ‘‘দাদা বোর্ড প্রেসিডেন্ট। তাই ওঁর থেকে ম্যাচ দেখার অনুমতি চাইতে এসেছিলাম। বেহালার বাড়িতেও গিয়েছি বুধবার। নিরাপত্তারক্ষীরা বললেন, দাদা হাসপাতালে ভর্তি। শুনেই মন খারাপ হয়ে গেল আমার।’’ বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সামনে গেলেন কেন? সুধীরের উত্তর, ‘‘জানতাম না দাদার শরীর এতটা খারাপ হয়েছে। ভেবেছিলাম দেখা হবে হয়তো। তবুও দু'দিন থাকব এই শহরে। শেষ চেষ্টা করে যাব।’’