২০২০-তেই অবসর, ঘোষণা লিয়েন্ডারের

৪৬ বছর বয়সি ভারতীয় টেনিস তারকার ট্রফি ক্যাবিনেট উপচে পড়া সাফল্যে ঠাসা। যার মধ্যে ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ডাবলস খেতাবের পাশাপাশি রয়েছে ডেভিস কাপে সর্বাধিক ৪৪টি ডাবলস ম্যাচ জেতার বিশ্বরেকর্ডও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৮
Share:

সিদ্ধান্ত: টেনিসকে বিদায় জানাতে তৈরি লি। ফাইল চিত্র

টেনিস কোর্টে তাঁর সেই মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছুড়ে পরিচিত উল্লাসের ছবি আগামী মরসুমের পরে আর দেখা যাবে না। ২০২০ সালেই অবসরের কথা ঘোষণা করে দিলেন ‘চিরতরুণ’ ভারতীয় টেনিসের কিংবদন্তি—লিয়েন্ডার পেজ।

Advertisement

বুধবার নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লিয়েন্ডার লিখেছেন, ‘‘পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে ২০২০ আমার বিদায়ী মরসুম। ২০২০-তে কয়েকটা বাছাই করা প্রতিযোগিতায় নামতে চাই, নিজের দল, বিশ্বজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও সমর্থকদের সঙ্গে এই সময়টা উৎসব করতে চাই। আজ আমি যে জায়গায় উঠে এসেছি তার সমস্ত কৃতিত্বই আপনাদের, যাঁরা আমায় প্রেরণা দিয়ে এসেছেন। তাই আগামী মরসুমে আমি তাঁদের বলতে চাই, ধন্যবাদ।’’

৪৬ বছর বয়সি ভারতীয় টেনিস তারকার ট্রফি ক্যাবিনেট উপচে পড়া সাফল্যে ঠাসা। যার মধ্যে ১৮টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ডাবলস খেতাবের পাশাপাশি রয়েছে ডেভিস কাপে সর্বাধিক ৪৪টি ডাবলস ম্যাচ জেতার বিশ্বরেকর্ডও। তবে সম্প্রতি তাঁর ফর্ম ভাল যাচ্ছিল না। কয়েক দিন আগেই বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম ১০০ জনের বাইরে চলে যান। গত ১৯ বছরে যা দেখা যায়নি।

Advertisement

লিয়েন্ডারের লক্ষ্য প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে টানা আটটি অলিম্পিক্সে খেলা। প্রায় তিন দশকের খেলোয়াড় জীবনে টোকিয়োই তাঁর বিদায়ী অলিম্পিক্স হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে, যদি তিনি যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। এই মঞ্চেই তিনি ভারতের একমাত্র টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৯৬ সালে আটলান্টায় সিঙ্গলসে পদক জিতেছিলেন।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে পেজের শাসন


গ্র্যান্ড স্ল্যাম ডাবলস
•অস্ট্রেলীয় ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (২০১২)
•ফরাসি ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (১৯৯৯, ২০০১, ২০০৯)
•উইম্বলডন: চ্যাম্পিয়ন (১৯৯৯)
•যুক্তরাষ্ট্র ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (২০০৬, ২০০৯, ২০১৩)
গ্র্যান্ড স্ল্যাম মিক্সড ডাবলস
•অস্ট্রেলীয় ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (২০০৩, ২০১০, ২০১৫)
•ফরাসি ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (২০১৬)
•উইম্বলডন: চ্যাম্পিয়ন (১৯৯৯, ২০০৩, ২০১০, ২০১৫)
•যুক্তরাষ্ট্র ওপেন: চ্যাম্পিয়ন (২০০৮, ২০১৫)
অলিম্পিক্সে সাফল্য
•আটলান্টা (১৯৯৬): ব্রোঞ্জ
ডেভিস কাপ
•৪৪টি ডাবলস জিতে নজির ভারতীয় কিংবদন্তির

এক সময়ের সতীর্থ মহেশ ভূপতির সঙ্গেও নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে টেনিস বিশ্ব শাসন করেছেন লিয়েন্ডার। এই সময়ে ‘লি-হেশ’ জুটি তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পাশাপাশি বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে উঠে এসেছিল এক নম্বরে। ভারতীয় টেনিসের ইতিহাসে যা প্রথম। শুধু তাই নয়, ডাবলসে টানা ২৪টি ম্যাচ জেতার রেকর্ডও গড়েছিলেন তাঁরা। ভারতীয় টেনিসের সর্বকালের অন্যতম সেরা তারকা তাঁর বাবা-মা ভেস এবং জেনিফারকেও ধন্যবাদ দেন। যাঁরা সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ‘‘বাবা-মাকে ধন্যবাদ দিতে চাই, যাদের থেকে খেলোয়াড় হওয়ার জিন পেয়েছি, যে পরিবেশ তাঁরা তৈরি করে দিয়েছেন এবং নিঃশর্ত ভাবে ভালবেসেছেন, তার জন্য। তোমাদের সমর্থন এবং বিশ্বাস না থাকলে এই জায়গায় উঠে আসতে পারতাম না,’’ লিখেছেন লিয়েন্ডার। পাশাপাশি তিনি তাঁর দুই দিদি ও মেয়ে আইয়ানাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন আর সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘২০২০ আবেগঘন একটা বছর হতে চলেছে। সকলের সঙ্গে কোর্টে দেখা করার ইচ্ছে রইল। আপনাদের কাছে সিংহহৃদয় হয়ে উঠতে পেরে গর্বিত।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement