বার্মিংহ্যামে নজর কাড়ছে অনাহত। ছবি: টুইটার।
বয়স ১৪। বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের কনিষ্ঠতম প্রতিযোগী অনাহত সিংহ। স্কোয়াশ দলের অন্যতম সদস্যই এখন গেমস ভিলেজে ভারতীয় দলের আকর্ষণের কেন্দ্রে।
দিল্লির চানক্যপুরীর একটি বেসরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী অনাহত। মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৫ পর্যায়ে অনাহতই এখন এশিয়ার এক নম্বর স্কোয়াশ খেলোয়াড়। জাতীয় দলের ট্রায়ালে অংশ নিয়ে কমনওয়েলথ গেমসের জন্য নির্বাচিত হয়েছে অনাহত। আট বছর থেকে খেলতে শুরু করা অনাহতকে আগামী দিনে ভারতীয় স্কোয়াশের উজ্জ্বলতম মুখ মনে করা হচ্ছে।
অনাহতের বাবা গুরশরণ সিংহ আইনজীবী। মা তনি সিংহ অন্দরসজ্জা শিল্পী। কমনওয়েলথ গেমসের প্রথম দিনেই কোর্টে নেমেছে অনাহত। মহিলাদের সিঙ্গলসের প্রথম রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছিল সেন্ট ভিনসেন্টের জাডা রোজের। ১৪ বছরের কিশোরী জয় পেয়েছে ১১-৫, ১১-২, ১১-০ ব্যবধানে। প্রথম রাউন্ডে বিদায় নিলেও রোজ অভিনন্দন জানান অনাহতকে। ম্যাচের পর শুধু করমর্দন করেই থামেননি। জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানান। বয়সে অনেক ছোট প্রতিপক্ষের কাছে হেরেও অখুশি নন তিনি।
প্রথম ম্যাচ জিতে উচ্ছ্বাস গোপন করেনি অনাহতও। ১৪ বছরের কিশোরী বলেছে, ‘‘ভীষণ ভাল লাগছে। খুব মজা হয়েছে। সিনিয়র পর্যায়ে এটাই আমার প্রথম প্রতিযোগিতা। তাই আমার কোনও প্রত্যাশা ছিল না। আমার কিছু হারানোর ছিল না। প্রথম ম্যাচ জিতে অবশ্য আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে।’’ কোচ ক্রিস ওয়াকারও খুশি প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্সে। ক্রিস বলেছেন, ‘‘১৪ বছর বয়সেই যা খেলছে, তাতে অনেক দূর যেতে পারে। অল্প দিন ওর সঙ্গে কাজ করছি। অনাহত খুবই প্রতিভাবান।’’
অনাহতের বাবা-মা দু’জনেই হকি খেলতেন। হকিতে কখনই আগ্রহ ছিল না অনাহতের। আগ্রহ ছিল না স্কোয়াশেও। বরং তার পছন্দ ছিল ব্যাডমিন্টন। অনাহতের প্রিয় খেলোয়াড় পিভি সিন্ধু। পাঁচ বছর বয়সে ব্যাডমিন্টন দিয়ে খেলাধুলো শুরু অনাহতের। দিল্লির একাধিক বয়স ভিত্তিক ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতায় পদক রয়েছে তার। আট বছর বয়সে পছন্দ বদলায় অনাহত। দিদি আমিরাকে দেখে স্কোয়াশ খেলতে শুরু করে। অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে দেশের অন্যতম সেরা স্কোয়াশ খেলোয়াড় আমিরা। তার কাছেই স্কোয়াশের তালিম শুরু অনাহতর। পরে আমজাদ খান, আশরাফ হোসেনদের কাছেও প্রশিক্ষণ নিয়েছে সে।
মাত্র দু’বছরের মধ্যে অনূর্ধ্ব ১১ পর্যায়ে দেশের এক নম্বরে উঠে আসে। ক্রমতালিকায় শীর্ষ স্থান বজায় রেখেছে অনূর্ধ্ব ১৩ পর্যায়েও। এর মধ্যে ব্রিটিশ জুনিয়র স্কোয়াশ ওপেন, জার্মান জুনিয়র স্কোয়াশ ওপেন, ইউএস ওপেন স্কোয়াশ ওপেনের মতো আটটি বয়স ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার খেতাব জেতা হয়ে গিয়েছে অনাহতর। জাতীয় স্তরের ৪৬টি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সে। প্রথম ভারতীয় হিসাবে ব্রিটিশ জুনিয়র স্কোয়াশ ওপেন এবং ইউএস ওপেন স্কোয়াশ ওপেনের অনূর্ধ্ব ১৫ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অনাহত।