কল্পনা-সুনীতাদের পরে মহাকাশে এ বার শাওনা

নাসার যানে চড়ে ফের এক কন্যা মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছেন, শিকড় যাঁর ভারতে। শাওনা পাণ্ড্য।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৪১
Share:

শাওনা পাণ্ড্য।

নাসার যানে চড়ে ফের এক কন্যা মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছেন, শিকড় যাঁর ভারতে। শাওনা পাণ্ড্য।

Advertisement

জন্ম কানাডার অ্যালবার্টায়। তবে পরিবারের অনেকেই থাকেন মুম্বইয়ের মহালক্ষ্মীতে। ৩২ বছরের শাওনা পেশায় চিকিৎসক। নিউরোসার্জন। কল্পনা চাওলা, সুনীতা উইলিয়ামসের পরে শাওনাই তৃতীয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত কন্যা, যিনি এই বিরল অভিজ্ঞতার জন্য যোগ্য নির্বাচিত হলেন। শাওনা মহাকাশে যাবেন ২০১৮ সালে, আরও ৮ জন নভশ্চরের সঙ্গে। সেখানে ঠিক কী করবেন তিনি?

মুম্বইয়ে বসে এক সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে শাওনা জানালেন, তাঁদের গবেষণার মূল বিষয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফল। তিনি কাজ করবেন চিকিৎসাবিজ্ঞান, বিশেষ করে ‘বায়ো-মেডিসিন’ নিয়ে। এই গবেষণা করতে হবে ভূতল থেকে ৫০ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে থাকা স্তর ‘মেসোস্ফিয়ার’-এ। তবে বিজ্ঞানের জটিল বিষয় ব্যাখ্যা করতে করতেই শাওনা পৌঁছে যান তাঁর ছোটবেলার স্বপ্নগুলির জগতে। জানান, ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ তাঁকে টানত। ভাল লাগত দূরের ঝিকমিক করা তারাদের। সেই ভাল লাগার প্রসঙ্গেই বললেন, ‘‘জানেন, স্কুলে থাকতে বিজ্ঞানের যত প্রোজেক্ট করেছি, তার সবই ছিল মহাকাশ নিয়ে। মানুষের জানার চৌহদ্দিটাকে আরও বড় করে তোলে এমন কোনও রোমাঞ্চকর অভিযানে বেরিয়ে পড়ার ভাবনাটাই তাড়িয়ে বেড়াত আমাকে।’’

Advertisement

মুম্বইয়ে এসেছেন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে। এখানকারই এক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের শোনাচ্ছিলেন, নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে কী ভাবে এগিয়েছেন তিনি। সেই সূত্রেই মেলে ধরলেন কিছু উপলব্ধির কথাও। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে মেডিক্যাল পডুয়াদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারছি, তারাও কোনও একটা অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য ছটফট করছে ভিতরে ভিতরে। কিন্তু কোন পথে এগোতে হবে, সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না অনেকে।’’ শাওনার তাই পরামর্শ, ‘‘বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গোটা বিশ্বে কোথায় কী অগ্রগতি ঘটছে, সে সম্পর্কে ওয়াকবহাল থাকাটা জরুরি। আর চাই জেদ ও নিরন্তর বড় কিছু করার চেষ্টা।’’

মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ‘সিটিজেন সায়েন্স অ্যাস্ট্রোনট’ কর্মসূচিতে নাম লিখিয়েছিলেন মোট ৩২০০ জন। তাঁদের মধ্যে থেকে চূড়ান্ত স্তরের জন্য দু’জনকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। সবশেষে শাওনাকেই যোগ্যতম বলে ঘোষণা করা হয়। অ্যালবার্টা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নায়ুবিজ্ঞানে স্নাতক হয়ে এমএসসি করেন মহাকাশ বিজ্ঞানে। এমডি করেন মেডিসিনে। চিকিৎসা ও মহাকাশ বিজ্ঞান শুধু নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রেই অবাধ বিচরণ এই তরুণীর। জানেন ফরাসি, স্প্যানিশ ও রুশ। লেখক, অপেরা গায়ক শাওনা তাইকোন্ডোতেও চ্যাম্পিয়ন। প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ‘মুয়াই থাই’ মার্শাল আর্টেরও। ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল ‘সুপারহিরো’ হওয়ার। পরে বুঝতে পারেন ওটা বাস্তব নয়।

তবে শাওনার সঙ্গে কথা বলা ছাত্রছাত্রীদের মুখগুলিই বলে দিচ্ছিল, মহাকাশে উড়তে চলা এই মেয়ে তাদের কাছে সুপারহিরোর চেয়ে কম কিছু নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement