তারাপীঠে দূষণ রুখতে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন

মা তারা মন্দিরের গর্ভগৃহে জমা পড়া পুণ্যার্থীদের ফুল-বেলপাতা জৈব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে কাজে লাগানো হবে। পাশাপাশি এলাকার অটো-ট্রেকারগুলি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই যাত্রী তুলবে এবং নামাবে। তারাপীঠ এলাকায় পরিবেশ দূষণ রুখতে সোমবার সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এ রকমই নানা সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। বৈঠকের পরে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, তারাপীঠে দূষণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৪
Share:

মা তারা মন্দিরের গর্ভগৃহে জমা পড়া পুণ্যার্থীদের ফুল-বেলপাতা জৈব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে কাজে লাগানো হবে। পাশাপাশি এলাকার অটো-ট্রেকারগুলি নির্দিষ্ট জায়গা থেকেই যাত্রী তুলবে এবং নামাবে। তারাপীঠ এলাকায় পরিবেশ দূষণ রুখতে সোমবার সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এ রকমই নানা সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা প্রশাসন।

Advertisement

বৈঠকের পরে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “তারাপীঠে দূষণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিনই দুর্গাপুর থেকে রামপুরহাটে এসেছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দু’জন আধিকারিক। ওঁদের উপস্থিতিতে ‘তারাপীঠ লজ মালিক অ্যাসোসিয়েশন’, ‘তারামাতা সেবাইত সমিতি’ এবং অটো-ট্রেকার মালিকদের নিয়ে তারাপীঠ এলাকার পরিবেশ দূষণ কীভাবে ঠেকানো যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য লজ মালিক অ্যাসোসিয়য়েশন এবং তারামাতা সেবাইত সমিতির সদস্যদের বেশ কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে।”

আজ, মঙ্গলবার থেকে আগামী এক মাস পৌষ কালী দর্শণে তারাপীঠে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে। সেই ভিড় সামাল দিতে তারাপীঠে অটো এবং ট্রেকার যাতায়াতে নিয়ন্ত্রণ আনা দরকার বলে মনে হয়েছে প্রশাসনের। তারই জন্য ঠিক হয়েছে, এ বার থেকে তারপীঠ পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ‘কর্মতীর্থ’ গ্রামীণ হাট এলাকা থেকেই একমাত্র অটো ও ট্রেকার দাঁড়াবে। সেখান থেকেই যাত্রীদের নিয়ে চালকদের আসা-যাওয়া করতে হবে। পাশাপাশি তারাপীঠের দ্বারকা সেতুর উপরেও কোনও অটো ও ট্রেকারকেই যাত্রীদের নিয়ে ওঠানামা করাই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। তা দেখতে বিশেষ পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এ ছাড়া এত দিন পর্যন্ত তারাপীঠ মন্দির চত্বরে মায়ের গর্ভগৃহ থেকে ফুল, বেলপাতা, ধূপকাঠি, সিঁদুর-সহ অন্যান্য পুজো সামগ্রী মায়ের মন্দির চত্বর থেকে বের করে তারাপীঠ তিনমাথা মোড় লাগোয়া এলাকায় নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হতো। সেই আবর্জনাগুলি জৈব পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে। একই সঙ্গে তারাপীঠ শ্মশানে সাধুদের জন্য একটি থাকার ঘর তৈরির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসনের সিদ্ধান্তগুলিকে সব পক্ষই স্বাগত জানিয়েছে। তারাপীঠ তারামাতা মন্দির সেবাইত সমিতির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “আজ থেকে তারাপীঠ মন্দির চত্বর থেকে পুজোর সামগ্রী বিক্রি করা দোকানগুলিকে সরিয়ে এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করা হবে।” এ ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তারাপীঠ লজ মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবীপ্রসাদ মণ্ডলও। তিনি বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশ নিয়ে তারাপীঠের সমস্ত লজ মালিকদের নিয়ে খুব শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী দিনে সরকারি নির্দেশ মেনে কাজ করা হবে।” অন্য দিকে, প্রশাসনের কাছে তারাপীঠে শবদাহের জন্য বৈদ্যুতিন চুল্লি বসানোর আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূলের রামপুরহাট ২ ব্লক সভাপতি সুকুমার মুখোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে এসডিও বলেন, “এর জন্য জেলাশাসকের অনুমোদনের দরকার। দেখা যাক কী করতে পারি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement