বিক্রম ও প্রজ্ঞান চাঁদে অনুসন্ধান চালাবে ১৪ দিন।
ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযানটি আর অখণ্ড নেই! না, কোনও অঘটন নয়। ইসরোর পরিকল্পনা মতোই চন্দ্রযান ২ আজ দুপুরে দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এর অরবিটারকে তার কক্ষে রেখে আলাদা হয়ে গিয়েছে ল্যান্ডার বিক্রম। রোভার প্রজ্ঞানকে নিয়ে যা শুক্রবার গভীর রাতে চাঁদে নামবে। আগামিকাল ও পরশু, দু ধাপে বিক্রমকে চাঁদের আরও কাছের কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হবে। ইসরো জানাচ্ছে, এ দুপুর সওয়া একটায় বিক্রমকে অরবিটার থেকে আলাদা করা হয়েছে। উভয় অংশই ঠিকঠাক কাজ করছে।
দক্ষিণ মেরুর কাছে বিক্রম নামবে, এটা ঠিক হয়ে আছে। কিন্ত ঠিক কোথায়, কোন কোন গহ্বরের পাশে সমতল কোন জায়গাটি নামার পক্ষে সবচেয়ে উপযুক্ত হবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। বিক্রমের ক্যামেরা যে ছবি তুলে পাঠাবে, তা বিশ্লেষণ করেই অবতরণের সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গাটি ঠিক করবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
এখন গোটা অভিযানের সাফল্য যার উপরে নির্ভর করছে, সেই অরবিটার কিন্তু তার কাজ শুরু করে দিয়েছে। শুধু ছবি ও তথ্যই পাঠানোই নয়, পৃথিবীর সঙ্গে বিক্রমের যোগাযোগের মূল সেতুও এটি। ওজনে ও শক্তিতে চন্দ্রযান ২-এর তিনটি অংশের মধ্যে অরবিটারই সব চেয়ে এগিয়ে। এটির ওজন ২৩৭৯ কিলোগ্রাম। এর সব কলকব্জা চালু রাখতে বিদ্যুৎও লাগে বেশি। সোলার প্যানেল থেকে এটি ১০০০ ওয়াট শক্তি পায়। ১৪৭১ কিলোগ্রাম ওজনের ল্যান্ডার বিক্রমে ৬৫০ ওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির ব্যবস্থা রয়েছে। আর ছ’চাকার রোভার প্রজ্ঞানের ওজন ২৭ কিলোগ্রাম।
বিক্রম ও প্রজ্ঞান চাঁদে অনুসন্ধান চালাবে ১৪ দিন। অরবিটারের কাজের মেয়াদ এক বছর। চাঁদকে পাক খেতে খেতে অরবিটার তার ‘টেরেন ম্যাপিং ক্যামেরা ২ (টিএমসি ২)’ দিয়ে ছবি তুলে চলেছে। এক এক পাকে চাঁদের পিঠের ২০ কিলোমিটার চওড়ার ফিতের মতো এলাকার ছবি তুলছে ওই ক্যামেরা। এ ছাড়াও অরবিটারে রয়েছে ‘চন্দ্রযান টু লার্জ এরিয়া সফ্ট এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার (ক্লাস)’, ‘সোলার এক্স-রে মনিটর (এক্সএসএম)’, ‘অরবিটার হাই রেজলিউশন ক্যামেরা (ওএইচআরসি)’ ইমেজিং ইনফ্রা-রেড স্পেকট্রোমিটার (আইআইআরএস)’, ‘ডুয়াল ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপারচার রেডার (ডিএফএসএআর)’, ‘অ্যাটমোস্ফিয়ারিক কম্পোজিশনাল এক্সপ্লোরার ২ (সিএইচএসিই ২)’ এবং ‘ডুয়াল ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়ো সায়েন্স (ডিএফআরএস) নামে একটি পরীক্ষা যন্ত্র।