UAE

UAE Moon Mission: নয়া নজির! চাঁদের বুকে নামতে চলেছেন আরব দুনিয়ার মহিলা মহাকাশচারী

আমিরশাহির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা আনন্দবাজার অনলাইন-কে জানিয়েছে, চাঁদে নামানোর জন্য দুই মহাকাশচারীকে বেছে নেওয়া হয়েছে।এক জন নোরা।

Advertisement

সুজয় চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ১৩:০৪
Share:

লক্ষ্য চাঁদ। আমিরশাহির মহাকাশচারী নোরা আলমাত্রুশি। ছবি- আলমাত্রুশির সৌজন্যে।

সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এ বার পা রাখতে চলেছে চাঁদে। চাঁদের পিঠে দুই মহাকাশচারীকে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমিরশাহি। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা।
এই প্রথম কোনও মহিলাকে চাঁদের বুকে হাঁটানোর পথে এগোচ্ছে আরব দুনিয়ার কোনও দেশ। মহাকাশেও এর আগে যাননি আরব দুনিয়ার কোনও মহিলা। কট্টরপন্থী সুন্নিপ্রধান মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘একবিংশ শতাব্দীর একটি বৈপ্লবিক পদক্ষেপ’। যুগান্তকারীও।

Advertisement

আমিরশাহির মহাকাশ গবেষণা সংস্থার তরফে আনন্দবাজার অনলাইন-কে জানানো হয়েছে, চাঁদের বুকে নামানোর জন্য দুই মহাকাশচারীকে বেছেও নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। তাঁদের এক জন ২৮ বছরের তরুণী মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার নোরা আলমাত্রুশি। অন্য জন ৩২ বছর বয়সী মহম্মদ আলমুল্লা। যাঁর এক দশক ধরে দুবাই পুলিশের হেলিকপ্টারের দক্ষ পাইলট হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দু’জনকেই দু’বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে পাঠানো হবে আর কয়েক দিনের মধ্যেই।

আরব দুনিয়ার প্রথম ভাবী মহিলা মহাকাশচারী নোরা আলমাত্রুশির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে। ই-মেল জবাবে আলমাত্রুশি লিখেছেন, “ছোটবেলা কাগজ আর কার্ডবোর্ডের বাক্স দিয়ে মহাকাশযান বানাতাম। আর স্বপ্ন দেখতাম সেই মহাকাশযানে চেপে মহাকাশে যাওয়ার। মাকে কত বার বলেছি, আমাকে এক বার যেতেই হবে চাঁদে।”

Advertisement

সেই চাঁদ যদিও এখনও দূর অস্তই আলমাত্রুশির কাছে। ই-মেলে লিখেছেন, “আমেরিকার নাগরিকরা যে ভাবে ইংরেজি বলেন, লেখেন, এখন শুধু সেই সবই শিখছি। শিখছি রুশ ভাষাও। কখনও যদি আন্তর্জাতিক মহাকাশে স্টেশনে গিয়ে থাকতে হয় রুশ মহাকাশচারীদের সঙ্গে, তার জন্য। আর মহাকাশচারী হওয়ার একেবারে সহজপাঠের প্রথম কয়েকটি বর্ণ শিখছি দুবাইয়ে। শিখছি অতলান্ত জলে কী ভাবে ডাইভ দিতে হয়। সেপ্টেম্বরে যাব নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে। সেখানেই শুরু হবে টানা দু’বছরের প্রশিক্ষণ। চাঁদ অথবা আন্তর্জাতিক মহাকাশে স্টেশনে শেষ পর্যন্ত যেতে পারলে আমার অন্তরে লুকিয়ে থাকা শিশুটিই বোধহয় সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।”

লক্ষ্য চা্ঁদ। আমিরশাহির দুই মহাকাশচারী মহম্মদ আলমুল্লা ও নোরা আলমাত্রুশি। ছবি- আলমাত্রুশির সৌজন্যে।

আলমাত্রুশি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখার পরেই তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পাশ করেন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। তার পর চাকরি করতে ঢুকেছিলেন একটি পেট্রোলিয়াম শিল্পসংস্থায়। আমিরশাহির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মহাকাশচারী খুঁজছে জানতে পেরে আবেদন করেন আলমাত্রুশি। পরীক্ষার ভিত্তিতে তাঁকে বেছে নেয় আমিরশাহির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

আমিরশাহির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তিন বছর আগেও আমিরশাহি থেকে তিন জনকে মহাকাশচারীর প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয়েছিল নাসায়। তাঁদের এক জন হাজ্জা আল মানসুরি রাশিয়ার সয়ুজ রকেটে চেপে মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে সেখানে এক সপ্তাহ কাটিয়ে আসেন বছর দু’য়েক আগে। আর এক জন সুলতান আল নায়েদিও মহাকাশ স্টেশনে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন।

শুধুই চাঁদ নয়, ক’দিন আগে মহাকাশবিজ্ঞানের গবেষণায় নেমে জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ কট্টরপন্থী সুন্নি সম্প্রদায়প্রধান মুসলিম রাষ্ট্র আমিরশাহি লাল গ্রহ মঙ্গলের দিকেও হাত বাড়িয়েছে। নাসার রোভার পারসিভের‌্যান্সের আগেই আমিরশাহির পাঠানো ‘হোপ অরবিটার’ মহাকাশযান পৌঁছে গিয়েছে মঙ্গল মুলুকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement