উড়ন্ত চাকি কি ভিনগ্রহীদের যান? নতুন ভাবে তদন্তে নামছে পেন্টাগন। -প্রতীকী ছবি।
সেগুলি কি ভিনগ্রহীদের যান? নাকি কোনও শত্রু দেশের সেনাবাহিনীর আকাশ থেকে গোপন নজরদারি? ‘আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্টস’ (ইউএফও অথবা উড়ন্ত চাকি) নামে যাদের পরিচিতি বিশ্বজুড়ে, সেগুলি আদতে কী? কাদের বানানো? কী দিয়ে বানানো সেই সব উড়ন্ত চাকি? কোথা থেকে আসে সেগুলি? কোথায়ই বা উধাও হয়ে যায়? সেগুলি কি সত্যি সত্যিই ভিনগ্রহীদের? নাকি অন্য কোনও দেশের সামরিক বাহিনী বা গোয়েন্দাদের?
ইউএফও নিয়ে এই সব কৌতূহল, রহস্য রয়েছে গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে।
সেই রহস্যের জট খুলতেই এ বার কোমর বেঁধে নামছে আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতর। এ ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ ও বিজ্ঞানভিত্তিক তদন্তের জন্য পেন্টাগন নতুন একটি কার্যালয় খোলার কথা ঘোষণা করেছে বুধবার। যার নাম- ‘এয়ারবোর্ন অবজেক্ট আইডেন্টিফিকেশান অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিনক্রোনাইজেশন গ্রুপ’। সংক্ষেপে, ‘এওআইএমএসজি’।
মঙ্গলবারই নতুন করে এই তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের উপ-সচিব (ডেপুটি সেক্রেটারি) ক্যাথলিন হিক্স।
আমেরিকার নৌবাহিনীর পাইলটরা উড়ন্ত চাকি দর্শনের যে সব ছবি জমা দিয়েছেন তার একটি। ছবি- পেন্টাগনের সৌজন্যে।
আমেরিকার নৌ ও বিমানবাহিনীর পাইলটরা গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন সময়ে দেশের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার আকাশে এই ধরনের বহু উড়ন্ত চাকি দেখতে পাওয়ার ঘটনার কথা জানান কর্তৃপক্ষকে। এদের মধ্যে অন্তত ১২০টি ঘটনার কথা নথিবদ্ধ করে পেন্টাগন। সেই সব ঘটনায় উড়ন্ত চাকিগুলিকে কী ভাবে দেখা গিয়েছিল, তার ছবিও জমা পড়ে পেন্টাগনে। সেই সময়েই এ ব্যাপারে তদন্তের দাবি ওঠে। যার প্রেক্ষিতে উড়ন্ত চাকি নিয়ে প্রাথমিক ভাবে তদন্ত শুরু করে পেন্টাগন। এ বছরের জুনে যার রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার। কিন্তু সেই রিপোর্ট এ ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি। তখনই জানানো হয়েছিল, এ ব্যাপারে আরও তদন্ত হবে। সেই তদন্ত হবে পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিক। সেই তদন্তের জন্য আমেরিকার সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা বিভাগ ও দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা-র বিজ্ঞানীদেরও সাহায্য ও পরামর্শ নেওয়া হবে।
পেন্টাগনের বুধবারের বিবৃতিতে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, ইউএফও রহস্যের জট এ বার খুলতে পারে। এই তদন্ত কেন জরুরি হয়ে পড়েছে, সে কথাও জানানো হয়েছে পেন্টাগনের বিবৃতিতে। বলা হয়েছে, বেশির ভাগ ঘটনাই এমন সব এলাকায় ঘটেছে, যেখানকার আকাশে অসামরিক বিমান চলাচল করে না। সেই এলাকাগুলি একেবারে সামরিক বাহিনীর জন্যই সংরক্ষিত। সুরক্ষিত। পেন্টাগনের ভাষায়, ‘স্পেশাল ইউজ এয়ারস্পেস (এসইউএ)’।
পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘স্পেশাল ইউজ এয়ারস্পেসে এমন ঘটনা দেশের প্রতিরক্ষাও জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।’’ এর আগে এই সব ঘটনা নিয়ে পেন্টাগনের প্রাথমিক তদন্তের দায়িত্ব ছিল আমেরিকার নৌ বাহিনীর ‘আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফেনোমেনা টাস্ক ফোর্স’-এর হাতে। এ বার তার স্থলাভিষিক্ত হবে সদ্যগঠিত এয়ারবোর্ন অবজেক্ট আইডেন্টিফিকেশান অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিনক্রোনাইজেশন গ্রুপ।