SARS COV-2

মানবকোষে সার্স কভ ২-র বংশবৃদ্ধিও রোখা যাবে? কোভিড চিকিৎসায় অন্য পদ্ধতির হদিশ

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকাগোষ্ঠী ‘সেল প্রেস জার্নাল’-এর গবেষণা পত্রিকা ‘আইসায়েন্স’-এ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২১ ১৫:৩৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোভিড চিকিৎসায় একেবারেই অভিনব একটি পথের হদিশ মিলল। অতিমারির দেড় বছরের মাথায়। মানুষ-সহ যে কোনও প্রাণীর দেহকোষে ঢুকে ভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটাতে মূল ভূমিকা নেয় যে প্রোটিন, তারই কলাকৌশল এই প্রথম জানা গেল গবেষণায়।

Advertisement

বিশেযজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এর ফলে প্রাণীকোষের ভিতরে ঢুকে সার্স কভ-২ ভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি টিকা বা ওষুধ দিয়ে রোখার সম্ভাবনা তৈরি হল। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকাগোষ্ঠী ‘সেল প্রেস জার্নাল’-এর গবেষণা পত্রিকা ‘আইসায়েন্স’-এ।

টিকা বা ওষুধ, যা-ই হোক এত দিন বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য ছিল, কী ভাবে মানবকোষে সার্স কভ-২ ভাইরাসের প্রবেশ বন্ধ করা যায়। তার জন্য ভাইরাসের পিঠে থাকা শুঁড়ের মতো স্পাইক প্রোটিনকে কী ভাবে বেঁধে ফেলা যায় টিকা বা ওষুধ দিয়ে মানবদেহে অ্যান্টিবডি তৈরি করে, মূলত সেই গবেষণাই হয়েছে বিশ্বজুড়ে গত দেড় বছরে।

Advertisement

কিন্তু ভাইরাসের ভিতরে যে প্রোটিন থাকে, যে কোনও প্রাণীর দেহকোষে ঢুকে যা ভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে, সেই নিউক্লিওক্যাপসিড প্রোটিন বা এন প্রোটিনকে বাগে আনার তেমন কোনও প্রচেষ্টা হয়নি কোভিডের টিকা বা ওষুধ আবিষ্কারের লক্ষ্যে। না হওয়ার কারণ, এত দিন সে ভাবে বোঝাই যায়নি মানবকোষের ভিতরে ঢোকার পর কী ভাবে ভাইরাসের দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটাতে মূল ভূমিকা নেয় সার্স কভ-২ এর ভিতরে থাকা এন প্রোটিন। আর সেই কাজে কী ভাবে তাকে সাহায্য করে মানবকোষেরই কয়েকটি প্রোটিন।

সেই সবের খোঁজে গবেষকরা ভাইরাসটির গোটা জিনোম পরীক্ষা করে দেখেছেন। দেখেছেন, তাদের জিনোমে ডিএনএ থেকে আরএনএ-তে যাওয়ার পথে খুব ক্ষুদ্র একটি পরিসর থাকে। সেই পরিসরের নাম বিজ্ঞানের পরিভাযায়, ‘অলিগোনিউক্লিওটাইড্স’। সেই ক্ষুদ্র পরিসরে সার্স-কভ ২ ভাইরাসের এন প্রোটিন যদি একটু বেশি জায়গা পেয়ে যায়, তা হলেই খুব দ্রুত আকার বদলাতে শুরু করে এন প্রোটিন। তখনই ভাইরাসের ওই প্রোটিনের সঙ্গে মানবদেহকোষের অন্যান্য প্রোটিনের ‘সখ্য’ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যায়। সেই সখ্যয় ভাইরাসের খুব উপকার হয়। মানবদেহকোষে সে দ্রুত বংশবৃদ্ধি শুরু করতে পারে। আর তখনই এমন কিছু মিউটেশন দেখা দেয় মানবদেহকোষে জন্মানো ভাইরাসের বংশধরদের যা মানুষের পক্ষে প্রচণ্ড ক্ষতিকারক হয়ে ওঠে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এ বার যদি টিকা বা ওষুধের মাধ্যমে অলিগোনিউক্লিওটাইড্‌সের ক্ষুদ্র পরিসরে ভাইরাসের এন প্রোটিনের বেশি জায়গা পাওয়ার সুযোগ কমিয়ে দেওয়া যায় বা কোনও ভাবে সেই পথ একেবারে বন্ধ করে দেওয়া যায়, তা হলে সার্স-কভ ২ আর মানবদেহকোষে ঢুকে দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটাতে পারবে না। সংক্রমণও হয়ে উঠবে না ভয়াবহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement