ছবি: পিটিআই।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই চাঁদের উল্টোপিঠে আছড়ে পড়তে পারে ৩ থেকে ৪ টন ওজনের ১৫ মিটার লম্বা রকেট। এলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্স-এর ফ্যালকন রকেট বুস্টার এটি। ইউএস ডিপ স্পেস ক্লাইমেট অবসারভেটরি (ডিএসসিওভিআর)-কে মহাকাশে পৌঁছনোর জন্য ২০১৫ সালে এটির উৎক্ষেপণ। সেই থেকে চাঁদ ও পৃথিবীর পরিমণ্ডলে এটি ভেসে বেড়িয়েছে।
এখানেই আশঙ্কা থাকছে ভারতীয় মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান’- এর জন্য। মহাকাশবিজ্ঞানীদের অনুমান, চাঁদে আছড়ে পড়ার আগে ফ্যালকন ৯ রকেটটির ভগ্নাংশ ধাক্কা খেতে পারে চন্দ্রযান বা নাসার লুনার রিকনেস্যান্স অরিবিটারের সঙ্গে। এই দু’টি মহাকাশযান চাঁদকে প্রদক্ষিণ করে বিভিন্ন তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করছে। ফ্যালকন ৯-এর কোনও অংশের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে বড় ক্ষতি হতে পারে ভারতীয় ও আমেরিকান যান দু’টির।
আমেরিকার গবেষক বিল গ্রে চাঁদের সঙ্গে স্পেস এক্স ফ্যালকনের এই সম্ভাব্য সংঘর্ষের কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন। তাঁর অঙ্ক অনুযায়ী, চাঁদের নিরক্ষরেখার থেকে সমান্য উত্তরে ৪ মার্চ সকাল সাতটা ছাব্বিশে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে ওই রকেট।
বিলের বক্তব্য, সংঘর্ষ সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য আপাতত তাঁর হাতে না থাকলেও, আগামী ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি স্পেস এক্স ফ্যালকনের গতিবিধি আরও সামনে থেকে পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ থাকবে।
ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির স্পেস ডেবরি অফিসের প্রধান হোলগার ক্রেগের মতে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অযাচিত প্রবেশ এড়াতে চাঁদের মাটির সঙ্গে অনেক রকেট বুস্টারের সংঘর্ষ ঘটানো হলেও, এ রকম উদ্দেশ্যহীনভাবে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়া যথেষ্ট ব্যতিক্রমী ঘটনা। যদিও পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অযাচিত প্রবেশের চেয়ে সেটাই অনেক বেশি স্বস্তির। কিন্তু এর ফলে চাঁদের পৃষ্ঠের ক্ষতি হবে কী? তার অবস্থানের কোনও বদল হবে কী? এই সব প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এখনও অজানা।
তবে অনেক মহাকাশবিজ্ঞানীই আশ্বাস দিচ্ছেন, সে রকম কোনও অঘটন ঘটবে না। আমেরিকান মহাকাশ গবেষক জেনিথন ম্যাকডাওয়েলের কথায়, ‘‘হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, ফ্যালকন ৯-এর বর্জ্য চাঁদে আছড়ে পড়বে। কিন্তু তাতে বিশেষ ক্ষতি হবে না বলেই আমাদের ধারণা।’’ এর আগে এলন মাস্কের সংস্থার তৈরি একটি উপগ্রহ চিনা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র তিয়ানগংয়ে ধাক্কা মারার উপক্রম করেছিল। সে যাত্রা রক্ষা পেয়ে যায় চিনা উপগ্রহটি। চন্দ্রযান ও নাসার যান অতটা ‘ভাগ্যবান’ হবে কি না, তা জানা যাবে সপ্তাহখানেক পরে।