অভিনব তারামণ্ডল ‘টিআইসি-১৬৮৭৮৯৮৪০’। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
রাতের আকাশেও থাকে দু’টি ‘সূর্য’! এমন দু’টি তারা যারা আকারে ও ঔজ্জ্বল্যে আমাদের আমাদের সূর্যের মতোই। এখানেই শেষ নয়। আর দিনের আকাশে থাকে আকারে ও ঔজ্জ্বল্যে প্রায় আমাদের সূর্যের মতোই আরও চারটি তারা। মোট ৩ জোড়া ‘সূর্য’। প্রতিটি জোড়ার প্রতিটি তারার জন্য প্রতি দিনই গ্রহণ হয় বারছয়েক। হ্যাঁ, ৬ বার! দিনে ৬ বার ‘সূর্যগ্রহণ’ সেই অচিন মুলুকে!
এমনই একটি অভিনব তারামণ্ডলের হদিশ মিলল। এই প্রথম। পৃথিবী থেকে ১ হাজার ৯০০ আলোকবর্ষ দূরে। আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায়। নাসার ‘ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট (টেস)’-এর চোখেই ধরা দিয়েছে এই অভিনব তারামণ্ডল।
তারামণ্ডলটির নাম- ‘টিআইসি-১৬৮৭৮৯৮৪০’। যেখানে রয়েছে মোটামুটি আমাদের সূর্যের আকার ও ঔজ্জ্বল্যের ৬টি তারা। যাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘সেক্সটুপ্লেট’।
গবেষকরা দেখেছেন, এই তারমণ্ডলে দু’টি করে তারা রয়েছে প্রতিটি জোড়ায়। এমন জোড়ায় থাকা তারামণ্ডলকে বলা হয় ‘বাইনারি স্টার সিস্টেম’। ব্রহ্মাণ্ডে এখনও পর্যন্ত যতগুলি তারামণ্ডলের হদিশ মিলেছে, তার বেশির ভাগই বাইনারি স্টার সিস্টেম। আমাদের সৌরমণ্ডল সে ক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রমই। সেখানে একটিই তারা রয়েছে। সূর্য। বাকি সব গ্রহ ও উপগ্রহ।
গবেষণাপত্রটি জানাচ্ছে, এর আগেও ব্রহ্মাণ্ডে এমন সেক্সটুপ্লেট তারামণ্ডলের হদিশ মিললেও প্রতিটি জোড়ার প্রতিটি তারাকে অন্য তারাদের মুখ ঢেকে প্রদক্ষিণ করতে দেখা যায়নি। ফলে, সেই সব ক্ষেত্রে ৬ বার গ্রহণও কোনও টেলিস্কোপের চোখে ধরা পড়েনি।
এই অভিনব তারামণ্ডলের তারার তিনটি জোড়ার একটিতে কয়েকটি গ্রহ থাকতে পারে বলে অনুমান গবেষকদের। তারা-জোড়াগুলির মধ্যে দু’টি রয়েছে খুব কাছাকাছি। আর একটি জোড়া বাকি জোড়াদু’টি থেকে রয়েছে বেশ কিছুটা দূরত্বে। বাকি দু’টি তারা-জোড়াকে প্রদক্ষিণ করতে তার সময় লাগে ২ হাজার বছরেরও বেশি।