Russia-Ukraine Conflict

Russia-Ukraine Conflict: মহাকাশেও খাঁড়ার ঘা রাশিয়ার! জার্মানির সঙ্গে যৌথ গবেষণা বন্ধ, পরের কোপে আমেরিকা, ইইউ?

রসকসমস জানাল, আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-সহ অন্য দেশগুলি যে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তারই প্রেক্ষিতে নেওয়া হল এই সিদ্ধান্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২২ ১২:০৪
Share:

মহাকাশেও খাঁড়ার ঘা রাশিয়ার! -ফাইল ছবি।

মহাকাশেও পাঁচিল তুলে দিল রাশিয়া! বন্ধ করল জার্মানির সঙ্গে মুখ দেখাদেখি।

Advertisement

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের বারুদ-গন্ধ পৌঁছে গেল ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরে। পৃথিবীর কক্ষপথেও। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে। সরাসরি, এই প্রথম। যার বড় খেসারত দিতে হল বিজ্ঞান, প্রযুক্তির গবেষণাকে। মহাকাশবিজ্ঞানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রথের রশিতে লাগাম পরাল মস্কো।

মহাকাশ স্টেশনে আমেরিকা ছাড়াও রাশিয়ার জন্য আলাদা ভাবে রয়েছে একটি মডিউল। সেই মডিউলের একটি গবেষণাগারে মহাকাশের ভরশূন্য অবস্থায় জার্মানির বিজ্ঞানীদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘রসকসমস’ বৃহস্পতিবার একটি টুইটে সেই যৌথ গবেষণায় পূর্ণচ্ছেদ টানার ঘোষণা করল। রাশিয়ার তরফে এমন ইঙ্গিতও দেওয়া হল, আগামী দিনে ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের অন্য দেশগুলির সঙ্গেও মহাকাশে গবেষণায় দাঁড়ি টানা হতে পারে। বন্ধ হয়ে যেতে পারে মহাকাশে আমেরিকার সঙ্গে রাশিয়ার যৌথ গবেষণাও। জানানো হল ইউক্রেনে যুদ্ধের জেরে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-সহ অন্য দেশগুলি যে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাশিয়ার উপর, তারই প্রেক্ষিতে নেওয়া হল এই সিদ্ধান্ত।

যার ফলে পৃথিবীতে যুদ্ধের বারুদ-গন্ধ পৌঁছে গেল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উপরে, পৃথিবীর কক্ষপথেও। সভ্যতার মহাকাশ-যাত্রা শুরু হওয়ার পর সরাসরি, এই প্রথম।

রুশ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমস বৃহস্পতিবার একটি টুইটে বলেছে, ‘অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলির সঙ্গে খাপ খাইয়ে রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচিগুলিও বদলে নেওয়া হবে। দেশের প্রতিরক্ষার জন্য এ বার উন্নততর উপগ্রহগুলি (পড়ুন, 'গোয়েন্দা' উপগ্রহ) বানানো হবে। আর যৌথ নয়, মহাকাশে একক ভাবে গবেষণা চালানোর উপরেই বেশি গুরুত্ব আরোপ করবে রাশিয়া।’

রসকসমস-এর বৃহস্পতিবারের টুইটে এ কথাও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমেরিকাকে আর উন্নত শক্তিশালী সর্বাধুনিক রকেট ইঞ্জিনও আর সরবরাহ করবে না রাশিয়া। তা টুইট প্রকাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই বিভিন্ন দেশের আরোপ করা একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা বিশেষ করে সইতে হচ্ছে রাশিয়ার ব্যাঙ্ক ও নানা ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে। তার জেরে রাশিয়ার মুদ্রা রুব্‌ল-এর দাম পড়ে গিয়েছে অস্বাভাবিক ভাবে। সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে ইতিমধ্যেই বহু সংস্থা রাশিয়ায় তাদের উৎপাদন বা কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়েছে। বাকিরা বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

গত সপ্তাহেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকার আরোপ করা অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞার জেরে রাশিয়ার এরোস্পেস কর্মসূচি বড় ধাক্কা খাবে। তাদের (রাশিয়া) মহাকাশ কর্মসূচির মানও পড়ে যাবে।’’

এর পরেই আর দেরি না করে মহাকাশ স্টেশন থেকে রাশিয়ার পুরোপুরি সরে আসার হুমকি দিয়েছিলেন রসকসমস-এর প্রধান। উল্লেখ্য, রাশিয়া সরে গেলে মহাকাশ স্টেশন থেকে মহাকাশচারীদের ফিরিয়ে আনা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। এখন যে কাজটা সব দেশই করে রাশিয়ার মহাকাশযান সয়ুজ-এর কাঁধে ভর দিয়ে। যেহেতু ২০১১ সাল থেকে নাসা-র এই কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলন মাস্কের সংস্থা স্পেস-এক্স এ ব্যাপারে বরাত পেলেও এখনও তেমন পদক্ষেপ করতে পারেনি।

পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ স্টেশনের মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা গত বছরই করেছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানিয়েছিলেন, তার পরেই মহাকাশ স্টেশনকে ছুড়ে ফেলা হবে প্রশান্ত মহাসাগরে। রাশিয়া তখনই জানিয়েছিল, ২০২৪-এর পর মস্কো আর মহাকাশ স্টেশনে কোনও সহযোগিতা করতে রাজি নয়।

ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর উদ্ভূত পরিস্থিতি ও বৃহস্পতিবার মহাকাশ স্টেশনে জার্মানির সঙ্গে যৌথ গবেষণায় সম্পর্ক-চ্ছেদের ঘোষণা করে রসকসমস বুঝিয়ে দিল, মহাকাশে যৌথ গবেষণার অন্তিম লগ্ন আর অল্প ক’দিনের অপেক্ষা মাত্র। তার বেশি কিছু নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement