এই প্রজাতির আরশোলাতেই রয়েছে দেদার পুষ্টিগুণ।
সুষম তো বটেই, বরং গরু-মোষের দুধের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে আরশোলার দুধে। শুধু তাই-ই নয়, এই দুধের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ক্রিস্টাল, যা মানুষের শরীরের প্রোটিন ক্রিস্টাল তৈরিরও অন্যতম সরঞ্জাম হতে পারে! এর মধ্যে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত অ্যামিনো অ্যাসিডও।
তবে তা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা। কারণ এই আরশোলা খুঁজে পাওয়া যেমন দুষ্কর, তেমনই তার শরীর থেকে দুধ বার করে তাকে ‘আহার’ হিসাবে ব্যবহার করা বেশ অসুবিধাজনকও। অনেকের কাছেই ‘ঘিনঘিনে’ এই পতেঙ্গের এক বিশেষ প্রজাতির নাড়িভুঁড়িতে ছড়িয়ে থাকা দুধে এমন জাদু দেখে তাজ্জব গবেষকরা।
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব ক্রিস্টালোগ্রাফির (আইইউসিআর) পত্রিকায় আরশোলার দুধের এমন অবাক করা গুণের কথা জানালেন গবেষকরা। ক্রিস্টাল প্রস্তুতির জন্য সহায়ক জৈব উপাদান নিয়ে গবেষণা চালাতে চালাতে আরশোলার দুধের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। অন্যান্য যে কোনও দুগ্ধপ্রদানকারী প্রাণীর চেয়ে এদের দুধে চার গুণ পুষ্টি রয়েছে বলে মত গবেষকদের।
আরও পড়ুন: মৃত্যুপথযাত্রীর অনুরোধে সাড়া নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীর
গবেষক দলের অন্যতম সুব্রহ্মণ্যম রামস্বামী জানান, ‘‘এই দুধ একেবারে সুষম আহার। পুষ্টিগুণে সেই দুধে প্রোটিন, ফ্যাট, সুগার তো আছেই, এর সঙ্গে আছে অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড।’’ তবে এ আরশোলা বাড়ির চারপাশে ঘুরে বেড়ানো আকছার দেখতে পাওয়া পতঙ্গ নয়। এটি একটি বিশেষ প্রজাতির আরশোলা, যার নাম প্যাসিফিক বিটল ককরোচ। বৈজ্ঞানিক নাম ডিপ্লোপটেরা পাঙ্কটাটা। এরা ডিম পেড়ে বংশবিস্তার করে না। বরং স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মতো বাচ্চা প্রসব করে। তাই এদের শরীরে দুধ উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াকে ‘অস্বাভাবিক’ মনে করছেন না গবেষকরা।
আরও পড়ুন: গবেষণার জন্য আন্টার্কটিকা পাড়ি প্রেসিডেন্সির শিক্ষকের
তবে এখনই এই আরশোলার চাষ করতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, এই দুধ থেকে ক্রিস্টাল তৈরি সম্ভব হলেও চাষ করে এই পোকার সংখ্যা বাড়িয়ে তা থেকে ক্রিস্টাল উৎপন্ন করা শ্রমসাধ্য ও ব্যয়সাপেক্ষ। তাই আপাতত ইস্ট থেকেই এই ক্রিস্টাল তৈরির কাজে উৎসাহী বিজ্ঞানীরা। তবে ভবিষ্যতে দরকার বুঝলে এই পোকার শরণ নেবেন তাঁরা।