প্লুটো ছাড়িয়েও আমাদের ‘বন্ধু’ রয়েছে, এই সৌরমণ্ডলে?
সে কি কোনও গ্রহ? নাকি কোনও গ্রহ-সদৃশ বস্তু বা পিএমও?
না-ও হতে পারে। এমনও হতে পারে, বহু দূর অতীতে কোনও গ্রহ এই সৌরমণ্ডল থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অভিকর্ষের টানে তার একটা অংশ থেকে গিয়েছিল কক্ষপথে। সেটাই সূর্যকে পাক মেরে যাচ্ছে।
আমাদের সেই নতুন ‘বন্ধু’র হদিশ মিলেছে সম্প্রতি। আমাদের সৌর পরিবারের ওই নতুন সদস্য রয়েছে সূর্য থেকে এক হাজার পাঁচশো পঞ্চাশ কোটি কিলোমিটার দূরে। সে-ই আপাতত আমাদের সৌরমণ্ডলের প্রান্তিক সদস্য। রয়েছে সৌরমণ্ডলের একেবারে শেষ সীমানায়। প্লুটোও অত দূরে পৌঁছতে পারেনি। সূর্য থেকে যতটা দূরে রয়েছে প্লুটো, তার তিন গুণেরও বেশি দূরত্বে রয়েছে আমাদের এই নতুন ‘বন্ধু’। মহাকাশযান ‘ভয়েজার-১’ আরও দূরে পৌঁছে গেলেও, দিতে পারেনি এর সুলুক সন্ধান।
আমাদের সৌর পরিবারের এই নতুন ‘বন্ধু’র শরীরটা আপাদমস্তক মোড়া বরফে। খুব ছোট্টখাট্টো। গোলাকার। ব্যাস বড়জোর পাঁচশো থেকে এক হাজার কিলোমিটার। এই প্রথম তাকে দেখা গেল, জাপানের সুবারু টেলিস্কোপে।
এই সৌর পরিবারের ‘নতুন’ সদস্যের একটি নামও দেওয়া হয়েছে। ‘ভি৭৭৪১০৪’।
ওই আবিষ্কারের কথা ওয়াশিংটনে, আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ডিভিশন ফর প্ল্যানেটারি সায়েন্সেসের ৪৭তম বার্ষিক অধিবেশনে ঘোষণা করা হয়েছে।
গবেষকদলটির নেতৃত্বে রয়েছেন কার্নেগি ইনস্টিটিউশন ফর সায়েন্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্কট শেপার্ড ও হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের জেমিনি অবজারভেটরির জ্যোতির্পদার্থবিদ চাদ ত্রুজিল্লো।
এর আগে এই সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে দূরের যে সদস্যের হদিশ মিলেছিল, সেই ‘এরিস’ আদতে ছিল একটি বামন গ্রহ বা ডোয়ার্ফ প্ল্যানেট। তার একটি চাঁদও রয়েছে। নাম-‘ডিসনোমিয়া’। সূর্যের চার দিকে চক্কর মারার সময় সে থাকে ৫৭০ কোটি থেকে এক হাজার চারশো ষাট কোটি কিলোমিটার দূরত্বে। এই সৌরমণ্ডলের আরও একটি গ্রহ নেপচুন সূর্য থেকে রয়েছে মোটামুটি ৪৫০ কোটি কিলোমিটার দূরে।
আমাদের এই নতুন বন্ধুকে নিয়ে দু’টি প্রশ্ন তুলেছেন বিজ্ঞানীরা।
‘ভি৭৭৪১০৪’ কি এই সৌরমণ্ডলের আরও ভেতরে ঢুকে আসছে, বামন গ্রহ ‘এরিস’-এর মতো? নাকি সেটি আরও দু’টি মহাজাগতিক বস্তু ‘সেডনা’ ও ‘২০১২ভিপি১১৩’-র মতো উত্তরোত্তর এই সৌরমণ্ডল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে?