বার্ধক্য রোখা যাবে এই দইয়ে? -ফাইল ছবি।
বয়সকে তো ঠেকিয়ে রাখা যায় না। তাকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়াও অসম্ভব। বয়স বাড়বেই। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাতে বার্ধক্য গ্রাস না করে, যতটা বয়স তার অনুপাতে যাতে অকাল-বার্ধক্যের ছায়া না পড়ে শরীরে, তার জন্য নতুন এক ধরনের দই বানালেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। বয়স বাড়লেও যা শরীরকে বুড়িয়ে যেতে দেবে না। আমাদের সুস্থ, সবল রাখতে পারবে। বাড়াতে পারবে আয়ুষ্কালও।
গুয়াহাটির ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডি ইন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএএসএসটি)-র বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট’-এ। শুক্রবার।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। অস্বাভাবিক স্থূলত্বের শিকার হতে হয়। পার্কিনসন্স ডিজিজ, অ্যালঝাইমার্স ডিজিজের মতো নানা ধরনের স্নায়ুঘটিত জটিলতা দেখা দেয়। গ্রাস করে নানা ধরনের হৃদ্রোগ, ডায়াবিটিস, ক্যানসার। দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার কিছু কোষ, কলা ঘরশত্রু বিভীষণের মতো আচরণ করতে শুরু করে। দেখা দেয় প্রদাহজনিত নানা ধরনের রোগ। ভারত ও চিনের মতো জনসংখ্যাবহুল দেশে যা উত্তরোত্তর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।
গবেষকরা এমন এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন, যা মানবশরীরের পক্ষে খুব উপকারী। ব্যাক্টেরিয়াটির নাম— ‘ল্যাক্টোব্যাসিলাস প্ল্যান্টেরাম জেবিসি-৫’। পরে সেই ব্যাক্টেরিয়াটিকে গবেষকরা একটি বিশেষ ধরনের কৃমির দেহে ঢুকিয়ে দেন। কৃমির সেই প্রজাতির নাম ‘সিনরহ্যাবডিটিস এলিগ্যান্স’। এই প্রজাতির কৃমি খুব রুক্ষ নয়, আবার খুব ভিজেও নয়-- এমন ধরনের মাটিতে থাকে।
গবেষকরা দেখেছেন, এই ব্যাক্টেরিয়া ওই কৃমির আয়ুষ্কাল গড়ে ২৭.৮১ শতাংশ বাড়িয়ে দিতে পারছে। বয়স বাড়লেও কৃমির দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কৃমির তরুণতর অবস্থার মতোই সক্রিয় শক্তিশালী করে তুলতে পারছে।
তার পর এই ব্যাক্টেরিয়া দিয়েই বিশেষ ধরনের দই বানিয়েছেন গবেষকরা। যাতে তা মানুষের পক্ষেও সমান ভাবে কার্যকরী হয়। ওই দইয়ের পেটেন্ট করানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন গবেষকরা।
আইএএসএসটি-র অধিকর্তা আশিস মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘এই দই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অস্বাভাবিক স্থূলত্ব, হৃদরোগ, স্নায়ুঘটিত নানা রোগের আশঙ্কা কমাতে পারবে। বার্ধক্যেও দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে পারবে।’’