অতলান্তিক মহাসাগর। -ফাইল ছবি।
আর বড়জোর ৮০ বছর। তারই মধ্যে উত্তর আমেরিকা ও উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের উপকূলবর্তী শহরগুলি চলে যাবে অতলান্তিক মহাসাগরের গ্রাসে। আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে তাপপ্রবাহ ও সাইক্লোন।
এই অশনিসংকেত দিল সাম্প্রতিক একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞান-গবেষণাপত্রিকা ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ।
গবেষকরা দেখেছেন অতলান্তিক মহাসাগরের স্রোতের আচরণ দ্রুত বদলাচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের দরুন। সেই জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে সভ্যতার অবর্ণনীয় অত্যাচারে। তার ফলে, অতলান্তিক মহাসাগরের একটি বিশেষ ধরনের স্রোত (‘ওশ্ন কারেন্ট’) গত ১৬০০ বছরে শ্লথতম হয়ে পড়েছে। গবেষকদের সতর্কবার্তা, এই শতাব্দীর মধ্যে উষ্ণায়নের রাশ টেনে ধরা সম্ভব না হলে অতলান্তিক মহাসাগরের এই বিশেষ স্রোতের গতি তো আর ফেরানো যাবেই না, বরং তা আরও শ্লথ হয়ে পড়বে।
গাল্ফ স্ট্রিম। উপগ্রহ চিত্র। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
অতলান্তিক মহাসাগরের এই স্রোতের নাম ‘গাল্ফ স্ট্রিম’। অত্যন্ত গরম জলের স্রোত। যা গাল্ফ অব মেক্সিকো থেকে উৎপন্ন হয়ে খুব দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ে ফ্লরিডার মাথা পর্যন্ত অতলান্তিক মহাসাগরে। তার পর সেই স্রোত খুব দ্রুত গতিতে ছুটে যায় উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলরেখা ধরে। পৌঁছে যায় প্রথমে নিউফাউন্ডল্যান্ডে, পরে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে। তার আর একটি অংশ পৌঁছয় পশ্চিম আফ্রিকায়। উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপের জলবায়ু ও আবহাওয়ার অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই গাল্ফ স্ট্রিম।
গবেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন গত ১৬০০ বছরে গাল্ফ স্ট্রিমের গতি সবচেয়ে কমে যাওয়ার খুব বড় খেসারত দিতে হবে সভ্যতাকে। এর ফলে অতলান্তিক মহাসাগরের দু’পারের দেশগুলির জলবায়ু ও আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। অতলান্তিকের জলস্তর উঠে আসবে হু হু করে। যার পরিণতিতে ২১০০ সালের মধ্যেই উত্তর আমেরিকার পূর্ব উপকূলবর্তী ও লাগোয়া উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের সবক’টি শহরকে তলিয়ে যেতে হবে অতলান্তিকের অতলে।