গ্রিনল্যান্ডে (বাঁ দিকে) ও সুইডেনের কেবনেকেইজ হিমবাহের শৃঙ্গ। - ছবি টুইটারের সৌজন্যে।
কোনও দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ধীরে ধীরে বসে যাচ্ছে। বেঁটে হয়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও বা পুরু তুষারশৃঙ্গের উপর এতটাই বৃষ্টিপাত হয়েছে যা আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে বিরল। উষ্ণায়নের জন্য খুব দ্রুত বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনই হয়ে উঠেছে এই সবের এক ও একমাত্র কারণ।
একটি ঘটনা ঘটেছে গ্রিনল্যান্ডে। অন্যটি সুইডেনে।
আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের গ্রিনল্যান্ড সামিট স্টেশনের দেওয়া পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, গত ১৪ এবং ১৫ অগস্ট তুমুল বৃষ্টিপাত হয়েছে গ্রিনল্যান্ডের পুরু বরফের চাদরের শৃঙ্গে। আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে যা বিরল ঘটনা। সেই তুমুল বৃষ্টিতে ওই দু’দিনেই গ্রিনল্যান্ডের পুরু বরফের চাদরের শৃঙ্গের উপর আছড়ে পড়েছে ৭০০ কোটি টন ওজনের জল। কোনও তুষারপাত হয়নি ওই দু’দিন গ্রিনল্যান্ডে পুরু বরফের চাদরের শৃঙ্গে। শুধুই হয়েছে বৃষ্টিপাত। বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে। একনাগাড়ে। আমেরিকার ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টার জানাচ্ছে, ওই দু’দিনে তুমুল বৃষ্টিপাত গ্রিনল্যান্ডের পুরু বরফের চাদরের ৮ লক্ষ ৭২ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকার বরফ গলিয়ে দিয়েছে। ন্যাশনাল স্নো অ্যান্ড আইস ডেটা সেন্টারের বিজ্ঞানী টেড স্ক্যামবস বলেছেন, “দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যই এটা হয়েছে। এটা অভূতপূর্ব ঘটনা। আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসে বিরল।”
ও দিকে, সুইডেনের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেবনেকেইজ হিমবাহের বরফ খুব দ্রুত গলতে শুরু করেছে। তার ফলে কেবনেকেইজ হিমবাহের শৃঙ্গের উচ্চতা গত এক বছরে সাড়ে ৬ ফুট কমে গিয়েছে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)-র পাঠানো ভূপর্যবেক্ষণ উপগ্রহ ‘সেন্টিনেল-২’ গত ২৮ জুলাই কেবনেকেইজ হিমবাহের শৃঙ্গের যে ছবি পাঠিয়েছে তাতেই তার উচ্চতা কমে যাওয়ার কথা জানা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উষ্ণায়নের জন্য কেবনেকেইজ হিমবাহের বরফ খুব দ্রুত গলতে শুরু করায় উচ্চতা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গিয়েছে।
কোনও হিমবাহের উচ্চতা হ্রাসই উষ্ণায়নের মাত্রাবৃদ্ধির সেরা পরিমাপক, বলেছেন সুইডেনের বোলিন সেন্টার্স টার্ফালা রিসার্চ স্টেশনের গ্লেসিওলজির অধ্যাপক বিজ্ঞানী পের হোলমুন্দ।