লাল গ্রহ থেকে ছুটে আসা কণারা আছড়ে পড়ছে চাঁদে। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
জোরালো টান নেই বলে নিজের শ্বাসের বাতাসকেই ধরে রাখতে পারেনি, পারছে না মঙ্গল। তার বায়ুমণ্ডল যেটুকু ছিল সেটাও উবে যাচ্ছে। আর সেই বায়ুমণ্ডল থেকে ছিটকে বেরনো কণারা গিয়ে আছড়ে পড়ছে মঙ্গলের দু’টি চাঁদের একটি- ‘ফোবস’-এর গায়ে।
এই ঘটনা ধরা পড়েছে মঙ্গলের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা নাসার মহাকাশযান ‘মার্স অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল এভোলিউশন (মাভেন)’-এর অত্যন্ত শক্তিশালী ক্যামেরায়। সেই সব ছবি তুলে পাঠিয়েছিল মাভেন। আর সেই সব বিশ্লেষণ করেই এই তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার জিওসায়েন্স’-এ। গত ১ ফেব্রুয়ারি।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, প্রতি মুহূর্তেই রাশি রাশি কণা লাল গ্রহ থেকে ছিটকে বেরিয়ে ছুটে যাচ্ছে তার অন্যতম চাঁদ ফোবস-এর দিকে। ফোবস-এর গায়ে আছড়ে পড়ছে। ওই সব কণারা আদতে অক্সিজেন, কার্বন, নাইট্রোজেন আর আর্গনের আয়ন।
আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলেও আছে এরা। কিন্তু তা এই পরিমাণে আমাদের চাঁদের গিয়ে আছড়ে পড়ছে না। তার প্রথম কারণ, পৃথিবীর জোরালো চৌম্বক ক্ষেত্রের টানে বায়ুমণ্ডল উবে যায়নি। মঙ্গলের সেই চৌম্বক ক্ষেত্র অনেকটাই দুর্বল। তাই কয়েকশো কোটি বছর আগেই লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডলের প্রায় পুরোটাই উবে গিয়েছিল। নাসার মহাকাশযানের পাঠানো তথ্যাদি ও ছবিগুলি জানাচ্ছে যেটুকু বায়ুমণ্ডল (পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ১ শতাংশ) ছিল মঙ্গলের সেটাও উবে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কারণ, আমাদের চাঁদের থেকে পৃথিবীর যতটা দূরত্ব, মঙ্গলের থেকে তার ৬০ ভাগের এক ভাগ দূরত্বে রয়েছে তার দু’টি চাঁদের একটি- ফোবস।
নাসার গবেষকরা জানিয়েছেন, এই কণাগুলিকে খতিয়ে দেখেই এ বার লাল গ্রহের অতীত ইতিহাস খুঁড়ে বার করার চেষ্টা হবে। জানার চেষ্টা হবে কয়েকশো কোটি বছর আগে কতটা পুরু ছিল মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল, তা কী ভাবে কত দিন আগে থেকে উবে যেতে শুরু করেছে।