লকডাউনের জেরে বাড়ি বসেই চলছে স্কুল-কলেজ-অফিসের কাজ। হু হু করে ব্যবহার বাড়ছে জুমের মতো ভিডিয়ো কলিং অ্যাপের। কিন্তু বার বার অভিযোগ আসছে সেই অ্যাপের স্বচ্ছতা নিয়ে।
দেশের অন্যতম সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ইন্ডিয়ান কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম আগেই জুম নামের ওই অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছে। ওই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও।
এই অবস্থায় যাঁদের এই মুহূর্তে ভিডিয়ো কলিং অ্যাপের প্রয়োজন ভীষণ ভাবেই, তাঁরা দিশাহারা। কী করা উচিত, বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই।
তাঁদের জন্যই রইল আরও কিছু অ্যাপের সন্ধান। তবে বলে রাখা দরকার, এই অ্যাপগুলোও যে সম্পূর্ণ নিরাপদ, সে দাবি করছে না আনন্দবাজার।
স্কাইপির ‘মিট নাও’ ফিচার। অ্যাপের বাঁ দিকে মিট নাও অপশনে ক্লিক করে ভিডিয়ো কনফারেন্স করা যাবে। সর্বাধিক কত জনকে সংযুক্ত করা যাবে? এ ক্ষেত্রে তা নির্ভর করে ব্যবহৃত ডিভাইসের উপর।
সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই রয়েছে ওয়েবেক্স ভিডিয়ো কনফারেন্সিং অ্যাপ। ২০০৭ সালে সিসকো এটা অধিগ্রহণ করে। মূলত বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং কোম্পানি এটা ব্যবহার করে থাকে। টানা ৪০ মিনিট এই অ্যাপে ভিডিয়ো কল করা যায়।
স্টারলিফ অ্যাপটিও এত দিন মূলত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করত। কিন্তু এই লকডাউন পরিস্থিতিতে এর ব্যবহার আরও বেড়েছে। এই অ্যাপে সর্বাধিক ২০ জনকে একসঙ্গে সংযুক্ত করা যায় ৪৬ মিনিটের জন্য। তার পর ফের কানেক্ট করতে হয়।
আরও একটি অন্য উপযোগী ভিডিয়ো কনফারেন্সিং অ্যাপ হল জিত্সি মিট। খুব সহজেই এই অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিয়ো কল করা যায়। সর্বাধিক ৭৫ জন সংযুক্ত হতে পারেন।
হোয়্যারবাই। এই অ্যাপের সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য অ্যাপের থেকে তুলনামূলক কম। সর্বাধিক মাত্র ৪ জনকে সংযুক্ত করা যাবে এর মাধ্যমে।
গুগলের হ্যাংআউটেও এই সুবিধা রয়েছে। এর মাধ্যমে সর্বাধিক ১০ জনকে সংযুক্ত করা যাবে।
দেশের প্রতিটা মানুষের তথ্য যাতে সুরক্ষিত থাকে তাই সম্প্রতি দেশি সংস্থাগুলির কাছে একটি সুরক্ষিত অ্যাপ তৈরির চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক বলেছে এমন একটি ভিডিয়ো কনফারেন্স কলিং অ্যাপ বানাতে হবে যা কম্পিউটার থেকে মোবাইল, সব কিছুতেই কাজ করবে। এবং যা হবে সম্পূর্ণ নিরাপদ।
শুধু তাই নয়, অ্যাপকে কাজ করতে হবে এমন জায়গায় যেখানে ইন্টারনেটের গতি কম। অবশ্যই এই অ্যাপ হবে এনক্রিপ্টেড। অর্থাৎ, কোনও তৃতীয় পক্ষ সেই কথোপকথনে আড়ি পাততে পারবে না।
১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এই অ্যাপ তৈরির জন্য নাম নথিভুক্ত করার কাজ। যা চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। জয়ী সংস্থাকে দেওয়া হবে এক কোটি টাকা।
২৯ জুলাই জানানো হবে বিজয়ীর নাম। সারা ভারতে সেই অ্যাপ ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক। ভবিষ্যতে যদি ফের কখনও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, তা হলে আর বিদেশি অ্যাপের উপর নির্ভর করে থাকতে হবে না। তথ্য চুরির হাত থেকেই নিস্তার মিলবে। এমনটাই মনে করছে মন্ত্রক।