নিউ মেক্সিকোতে অবতরণের পরে স্টারলাইনার।
আক্ষরিক অর্থেই সময় ভাল যাচ্ছে না মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িংয়ের। ২০১৮-র অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়া, আর ২০১৯-এর মার্চে ইথিয়োপিয়া— মাঝ আকাশে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান। প্রায় ৩৫০ জনের প্রাণ গিয়েছিল। আগামী মাস থেকেই ওই বিমান তৈরি বন্ধ করছে বোয়িং। এরই মধ্যে ফের অঘটন। এ বার ঘড়ির কাঁটার ফেরে অভিযান অসম্পূর্ণ রেখেই মহাকাশ থেকে ফিরতে হল বোয়িংয়ের নয়া ক্যাপসুল স্টারলাইনারকে। যন্ত্রচালিত, কোনও যাত্রী ছিলেন না। তাই প্রাণহানি হয়নি— এটুকুই যা সুখবর।
২০২০-র প্রথমার্ধেই মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রক্রিয়ায় ফের শুরু করতে চায় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তার মহড়া সারতেই গত শুক্রবার নাসার আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছিল স্টারলাইনারকে। ফেরার কথা ছিল আরও ছ’দিন পরে। তার বদলে ‘ব্যর্থ’ স্টারলাইনার ফিরল আজই। বিশাল বিশাল এয়ারব্যাগ আর প্যারাশুটে ভর করে যানটি যখন নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ডস মিসাইল রেঞ্জে ‘সফ্ট ল্যান্ডিং’ করল, ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৭টা ৫৮।
গন্ডগোলটা টের পাওয়া গিয়েছিল শুক্রবারেই। অ্যাটলাস-৫ রকেটের সাহায্য নিয়ে স্টারলাইনারকে উৎক্ষেপণের পরেই নাসা টের পায়, রকেট থেকে নিজের সফটওয়্যারে ভুল সময় ‘লোড’ করে চলতে শুরু করেছে স্টারলাইনার। তার পর সময়ের ফেরে অনর্থক থ্রাস্টারে চাপ। ফল যা হওয়ার তাই! একটা সময়ে দেখা গেল, অরবিট গুলিয়ে ছুটছে যান। বোয়িংয়ের আধিকারিকেরও তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেন, ফেরাতে হবে স্টারলাইনারকে ।
কেন এই সময়ের ফের? প্রশ্ন শুনেই বোয়িংয়ের বিভাগীয় ভাইস-প্রেসিডেন্ট জিম শিল্টন বললেন, ‘‘সেটা জানলে তো ভুলটাই আটকানো যেত।’’ কিন্তু এই ক্যাপসুলে যদি মহাকাশচারী থাকতেন, তাঁর বিপদ হত না? বোয়িংয়ের দাবি, যানের মধ্যে মহাকাশচারী থাকলে হয়তো তিনিই গোলমালটা শুধরে নিয়ে স্টারলাইনারকে সঠিক পথে চালনা করতে পারতেন।
নাসা যদিও একে ‘ব্যর্থতা’ মানতে রাজি নয়। তাদের দাবি, এই অভিযান সম্পূর্ণ না-হলেও, অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু শেখা গিয়েছে। ২০২০-র অভিযান নিয়েও তাই এখনই পিছু হটার কথা ভাবছে না নাসা। বোয়িংও বলছে, অল্প সময়ের মধ্যেই স্টারলাইনার যে ভাবে স্পেস স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছিল, তা অভূতপূর্ব।