অ্যালঝাইমার্সের টিকার প্রথম হিউম্যান ট্রায়ালের আগে চূড়ান্ত প্রস্তুতি আমেরিকার ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হসপিটালে। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
দুরারোগ্য স্নায়ুরোগ অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ-এর চিকিৎসা কি এ বার আয়ত্তের মধ্যে আসতে চলেছে? ওষুধের সঙ্গে কি এ বার বাজারে আসতে পারে অ্যালঝাইমার্সের টিকাও?
গত দু’দশকে যা সম্ভব হয়নি, মাস ছয়েক আগে তা-ই হয়েছে। অ্যালঝাইমার্সের প্রথম কোনও ওষুধ আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’-এর অনুমোদন পেয়েছে। এ বার অ্যালঝাইমার্সের টিকাও বাজারে আসার সম্ভাবনা দেখা দিল। সেই টিকা নাকে দেওয়া হবে। স্প্রে করে। খুব শীঘ্রই আমেরিকায় শুরু হতে চলেছে অ্যালঝাইমার্সের টিকার প্রথম মানুষের উপর পরীক্ষা বা হিউম্যান ট্রায়াল।
সেই ট্রায়াল চালাবে আমেরিকার বস্টনে ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হসপিটাল। একটি বিবৃতিতে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ১৬ জনের উপর চালানো হবে অ্যালঝাইমার্স টিকার ট্রায়াল। যাঁদের সেই টিকা দেওয়া হবে তাঁদের বয়স ৬০ থেকে ৮৫ বছরের মধ্যে। তাঁদের মধ্যে অ্যালঝাইমার্স রোগের কয়েকটি উপসর্গ দেখা গিয়েছে। টিকা দেওয়া হবে দু’টি পর্বে। এক সপ্তাহ অন্তর। গবেষক, চিকিৎসকদের আশা, এই টিকা অ্যালঝাইমার্স একেবারে রুখতে পারবে। তা না হলে অন্তত রোগটির দ্রুত ছড়িয়ে পড়া রুখতে পারবে।
অ্যালঝাইমার্স রোগী কিছু মনে রাখতে পারেন না। ভাষা গুলিয়ে ফেলেন কথা বলার সময়। আবোল তাবোল কথা বলেন। ভোগেন অনিদ্রায়।
গবেষকরা দেখেছেন, এই রোগীদের মস্তিষ্কের একাংশে বিটা-অ্যামাইলয়েডের একটি আস্তরণ পড়ে। স্নায়ুকোষগুলির মধ্যে বিটা-অ্যামাইলয়েড প্রোটিন বেশি পরিমাণে জমা হয়ে গেলেই ওই আস্তরণের সৃষ্টি হয়। ওষুধ বা টিকা দিয়ে দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তুলে সেই আস্তরণ পুরোপুরি তুলে ফেলা বা তাকে কমানো সম্ভব।
ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হসপিটালের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম হিউম্যান ট্রায়ালে ‘প্রোটোলিন’ নামে একটি ওষুধ স্প্রে করে দেওয়া হবে নাকের ভিতরে। সেই ওষুধই দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তুলে অ্যালঝাইমার্স রোগীর মস্তিষ্কের সংশ্লিষ্ট অংশের বিটা-অ্যামাইলয়েডের আস্তরণ সরিয়ে দিতে পারবে।
গত দু’দশকে প্রথম কোনও ওষুধ- ‘অ্যাডুহেল্ম’, অ্যালঝাইমার্স রোগীর চিকিৎসার জন্য এফডিএ-র অনুমোদন পেয়েছে এ বছরের জুনেই।