পয়লা বৈশাখে শহর জুড়ে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় বিশেষ বাঙালি খাবার। ছবি: সংগৃহীত।
বাঙালির বারো মাসে হাজার পার্বণ। আর বাঙালির পার্বণ মানে ভূরিভোজ। কয়েক দিন পরেই পয়লা বৈশাখ। তাই নতুন বছরের পরিকল্পনা নিয়েও বাঙালির তোড়জোড় কম নয়। নববর্ষের বাঙালি খাবারের স্বাদ না নিলে, যে কোনও উৎসবই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। পয়লা বৈশাখে শহর জুড়ে বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় বিশেষ বাঙালি খাবার। ‘স্টার্টার’ থেকে ‘ডেজার্ট’, সব কিছুতেই বাঙালিয়ানার ছোঁয়া থাকে এই সময়ে। আর বাঙালির কাছে রসনাতৃপ্তি হলে উৎসব উদ্যাপনও সফল। নববর্ষে শহরের কোন রেস্তরাঁয় কী কী বিশেষ পদ থাকছে?
করিম’স
বাংলা বছরের প্রথম দিনটি অনেকেই রেস্তরাঁয় খেতে যান। তেমন কোনও পরিকল্পনা থাকলে চলে যেতে পারেন করিম’স-এ। ধর্মতলা, উল্টোডাঙ্গা এবং চিনার পার্ক— শহরের তিন জায়গায় এই রেস্তরাঁর শাখা রয়েছে। সুবিধামতো কোনও একটিতে ঢুঁ মারতে পারেন। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে থাকছে বাটার গার্লিক মাশরুম, পনির মাখানাওয়ালা, দম কি ডাল, ভেজ দম বিরিয়ানি, মটম বরা চাপ, মাটন দম বিরিয়ানি, চিকেন লেহরি, মটন করাচির মতো জিভে জল আনা বিশেষ কয়েকটি পদ। শেষপাতে থাকছে মালাই ফিরনি, ক্যারামেল কাস্টার্ড এবং আরও অনেক মিষ্টি পদ। চাইলে বাড়িতেও অর্ডার করে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকার উপরে অর্ডার করলে পাবেন ১০ শতাংশ ছাড়।
ক্যাফে ড্রিফটার
পয়লা বৈশাখের রাতে বন্ধুদের নিয়ে চলে যেতে পারেন লেক রোডের ড্রিফটার ক্যাফেতে। এমনিতে সারা বছরই নানা স্বাদের খাবার পাওয়া যায় এখানে। তবে নববর্ষে সেই তালিকায় যোগ হয়েছে আরও বেশ কিছু নতুন খাবার। চানা কড়াইশুঁটির চপ, ফিশ ফ্রাই, হিং আলুর দম, ভাজা মুগের ডাল, কাঁচালঙ্কা মুরগি, কাজু পোলাও, বাসমতি ভাত, পুদিনা পরোটা, লাচ্ছা পরোটা, মটন কারির মতো সুস্বাদু সব পদ চেখে দেখতে পারবেন। এখানকার আমপোড়া শরবত খেতে কিন্তু ভুলবেন না। গরমে গলা ভেজাতে খেতে পারেন কোকোনাট মোহিতো, গন্ধরাজ মোহিতোর মতো পানীয়ও। দু’জনের খাওয়াদাওয়া খরচ পড়বে ট্যাক্স ছা়ড়া ১২০০ টাকা মতো।
করিম’স-এর চিকেন পোটলি কবাব। ছবি: সংগৃহীত।
ইলিশ ট্রুলি বং রেস্টুরেন্ট
পয়লা বৈশাখে পাতে ইলিশ থাকবে না কি চিংড়ি, তা নিয়ে লড়াই চলতেই থাকে। উৎসবের দিন ধন্দে না থেকে বরং দু’টিই খেতে চলে যেতে পারেন পার্ক স্ট্রিটের ‘ইলিশ ট্রুলি বং রেস্টুরেন্ট’-এ। নববর্ষে থাকছে গন্ধরাজ ঘোল, নারকেলি মুগ ডাল, বাসমতি চালের ভাত, শাক ভাজা, তপসে ফ্রাই, চিংড়ির পুর দেওয়া পটল পোস্ত, ভেটকি পাতুরি, ডাব চিংড়ি, মটন কষা, পাবদা এবং রূপনারায়ণ মাছের ঝাল, ভাপা ইলিশ। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ২১০০ টাকা মতো।
ক্যান্টিন পাব অ্যান্ড গ্রাব
নববর্ষে মনের মানুষের সঙ্গে নৈশভোজের পরিকল্পনা? তা হলে সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে চলে যেতে পারেন সেক্টর ফাইভে ‘ক্যান্টিন পাব অ্যান্ড গ্রাব’-এ। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এই রেস্তরাঁর বিশেষ আমিষ থালিতে থাকছে বাসমতি চালের ভাত, আলু ভাজা, মুগডাল, এঁচোড় চিংড়ি, পাবদার তেলঝাল, মটন কষা। নিরামিষ খাবারেরও ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে থাকছে ধোকার ডালনা, আলু পোস্ত, ছানার কোফতা। মিষ্টিমুখের জন্য থাকছে রসগোল্লা এবং ভাপা সন্দেশ। দু’টো থালির সঙ্গেই থাকছে অফুরন্ত বিয়ার। নিরামিষ থালি এবং বিয়ারের দাম পড়বে ১৩৯৯ টাকা। আর আমিষ থালির আর বিয়ারের দাম ১৫৯৯ টাকা।
ক্যাফে ড্রিফটার-এর আমপোড়া শরবত। ছবি: সংগৃহীত।
হ্যাংলাথেরিয়াম
নববর্ষে বাড়িতে আত্মীয়রা আসবেন। কিন্তু এই গরমে হেঁশেলে ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন? অত না ভেবে বরং সকলকে নিয়ে বৈশাখী মহাভোজের জন্য চলে যেতে পারেন ‘হ্যাংলাথেরিয়াম’ রেস্তরাঁয়। নববর্ষের বিশেষ পদের তালিকায় থাকছে বাটার টিক্কা কবাব, নার্গিসি কবাব, মটন বিরিয়ানি, চিকেন বিরিয়ানি, চিকেন কষা, মটন কষা, ফিরনি এবং কোল্ড ড্রিংক। দু’জনের খাওয়াদাওয়ার খরচ পড়বে ১২৫০ টাকা।
ট্রাইব ক্যাফে
নববর্ষের সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে চলে যেতে পারেন ‘ট্রাইব ক্যাফে’-তে। পয়লা বৈশাখের জন্য বিশেষ মেনু নিয়ে হাজির এই ক্যাফে। এখানকার সব পদেই থাকছে আমের ছোঁয়া। বৈশাখী আড্ডার ফাঁকে মুখ চালানোর জন্য থাকছে ম্যাঙ্গো কোটেড ফিশ ফিঙ্গার, ম্যাঙ্গো কোটেড স্পাইসি চিকেন উইংস, স্পাইসি থাই ম্যাঙ্গো স্যালাড, ম্যাঙ্গো চিকেন স্যালাড, গ্রিলড চিকেন উইথ ম্যাঙ্গো রিডাকশন। দু’জনের খাওয়াদাওয়ায় খরচ পড়বে ৮০০ টাকা।