বৃষ্টির দিনেও হোক জমিয়ে ভূরিভোজ, রান্নার উপকরণ লাগবে নামমাত্র। ছবি: শাটারস্টক।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র প্রভাব শহরে তেমন ভাবে না পড়লেও রাত থেকেই কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। এমন বৃষ্টিভেজা দিনে কেউ বাড়ি থেকেই কাজে বসে পড়েছেন, কেউ আবার বৃষ্টি একটু কমলে অফিস বেরোনোর কথা ভাবছেন। বাড়ির গৃহিণীদের চিন্তা আবার অন্য দিকে। বৃষ্টির মধ্যে বাজারে যাওয়ার তো অবকাশ নেই, তাই ফ্রিজে টুকিটাকি যা আছে তাই দিয়ে দুপুরের খাবার সারতে হবে। পুজোর ছুটির কারণে বাড়িতে খুদেরাও আছে, তাই চটজলদি খিচুড়ি বানিয়ে দিলে তাদের আবার মুখভার হয়ে যাবে। তা হলে উপায়? বাজারে না গিয়েই বৃষ্টির দিনে কী ভাবে বাড়িতেই দারুণ ভোজের আয়োজন করবেন রইল হদিস।
ডাল আবার চচ্চড়িও। ছবি: শাটারস্টক।
ডাল চচ্চড়ি: মুসুর ডাল ভাল করে ধুয়ে নিয়ে আধ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন। আবার কড়াইয়ে তেল নিয়ে তাতে গোটা গরমমশলা, তেজপাতা আর শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিন। এর পর পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়াচড়া করুন। পেঁয়াজ লালচে হয়ে এলে রসুন বাটা আর টম্যাটো কুচি দিয়ে দিন। এর পর হলুদ, ধনে আর লঙ্কার গুঁড়ো একে একে দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন। এ বার জল ঝরানো ডাল কড়াইয়ে দিয়ে মিশিয়ে নিন। এর পর সামান্য জল দিয়ে অল্প আঁচে ঢেকে রান্না করুন। প্রয়োজন হলে আর একটু জল দিতে পারেন। তবে লক্ষ রাখবেন রেসিপিটি যেন মাখো মাখো হয় আর ডাল যেন একেবারে গলে না গিয়ে একটু দানা দানা থাকে। ফ্রিজে ধনেপাতা থাকলে রান্নার শেষে উপরে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে দিন।
মাছের এই পদের সঙ্গেই জমবে দুপুরের ভোজ। ছবি: শাটারস্টক।
হাতে মাখা মাছ: ফ্রিজে রয়েছে এমন যে কোনও বড় মাছ দিয়েই চটজলদি বানিয়ে ফেলতে পারেন এই পদ। রুই, কাতলা, কিংবা ভেটকি মাছের টুকরোগুলি একটি কড়াইয়ে ছড়িয়ে রাখুন। তার পর মাছের সঙ্গে পেঁয়াজ বাটা, আদা বাটা, টম্যাটো কুচি, হলুদ গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, নুন, কাঁচা লঙ্কা, সামান্য চিনি আর বেশ খানিকটা সর্ষের তেল দিয়ে ভাল করে মেখে নিন। এ বার কড়াই আঁচে বসানোর আগেই অল্প করে জল দিতে হবে মাছের মিশ্রণে। প্রথমে আঁচ একটু বেশি রাখুন, তার পর আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে রান্না করুন মিনিট পনেরো। মাঝে আলতো হাতে মাছগুলি উল্টে দিতে হবে। মশলা থেকে তেল ছেড়ে এলে বুঝবেন মাছ রান্না হয়ে গিয়েছে। উপর থেকে ধনেপাতা কুচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
ইলিশের মাথা দিয়েই বানিয়ে ফেলুন টক-ঝাল-মিষ্টি এক রেসিপি। ছবি: সংগৃহীত।
ইলিশের টক: বাঙালি খাবারের শেষপাতে একটু চাটনি না হলে ঠিক জমে না। তবে ফ্রিজে আম, চালতা কিছুই নেই। বর্ষার মরসুমে অনেকের বাড়িতেই ইলিশ মাছ থাকে। মাছ খাওয়া হয়ে গেলেও মাথা অনেকেই খেতে চান না। সেই মাথা দিয়েই বানিয়ে ফেলুন ইলিশের টক। ইলিশ মাছের মাথা কেটে ধুয়ে ভাল করে নুন, হলুদ মাখিয়ে হালকা করে ভেজে তুলে রাখুন। মাছ ভাজার তেলের মধ্যেই শুকনো লঙ্কা, সর্ষে এবং মৌরি ফোড়ন দিন। এর পর কড়াইয়ে দিয়ে হলুদ, লঙ্কা গুঁড়ো, জিরের গুঁড়ো দিয়ে কিছু ক্ষণ কষিয়ে নিন। তেল ছাড়তে শুরু করলে আগে থেকে ভেজে রাখা মাথার টুকরোগুলি কড়াইয়ে দিয়ে হালকা হাতে নেড়ে নিন। কিছু ক্ষণ পর তেঁতুলের ক্বাথ, চিনি, পরিমাণ মতো নুন দিয়ে আরও কিছু ক্ষণ কষিয়ে জল দিয়ে ফুটিয়ে নিন। জল শুকিয়ে একটু মাখো মাখো হয়ে এলে নামিয়ে নিন।
ব্যস, এত সব রান্নার পর একটু বাসমতী চালের ভাত বসিয়ে দিন। গরমাগরম ভাতের সঙ্গে জিভে জল আনা এই পদগুলি দারুণ জমবে!