মুগ সামলি বানানো যায় বাড়িতেই। ছবি: সংগৃহীত।
আজকাল শহরের নানা প্রান্তে পিঠেপার্বণ উৎসব হয়। দুই বাংলার প্রায় সব ধরনের পিঠেই সেখানে পাওয়া যায়। সেখানে গিয়েই বহু পুরনো, প্রায় হারিয়ে যাওয়া এক ‘মাণিক্য’-এর সন্ধান পেয়েছেন কিছু দিন আগে। এই পিঠের নাম মুগ সামলি। অনেকে একে মুগ পুলিও বলেন।
মুগডাল আর চালের গুঁড়ো দিয়ে বানানো মুগপুলি বা মুগ সামালি খেতে যতটা ভাল, করা ততটাই ঝক্কির। হয় পুলিগুলো খুব শক্ত হয়ে যায়, না হলে পুলির ভিতরে রস প্রবেশ করে না। তবে সঠিক কায়দা, সময় এবং ধৈর্য থাকলে এই পৌষে আপনিও বাড়িতে বানিয়ে ফেলতে পারেন বাংলার হারিয়ে যাওয়া বিশেষ এই পদটি। রইল প্রণালী।
উপকরণ:
১ কাপ: মুগ ডাল
১ কাপ: নারকেল কোরা
১ কাপ: পাটালি গুড়
আধ কাপ: চালের গুঁড়ো
১ টেবিল চামচ: ঘি
১ কাপ: সাদা তেল
আধ কাপ: চিনি
৪ টেবিল চামচ: জল
প্রণালী:
· প্রথমে শুকনো কড়াইতে মুগডাল হালকা করে ভেজে নিন।
· ভেজে নেওয়া ডাল জল দিয়ে ধুয়ে নিন। সামান্য নুন দিয়ে সেদ্ধ করতে বসান।
· ডাল সেদ্ধ হতে হতে নারকেলের পুর তৈরি করে নিতে হবে।
· তার জন্য কড়াইতে কোরানো নারকেল এবং পাটালি গুড় একসঙ্গে পাক দিন।
· নাড়তে নাড়তে গুড়, নারকেলের পুরটা একটু চটচটে হয়ে আসবে। তখন গ্যাস বন্ধ করে দিতে হবে।
· ডাল সেদ্ধ হয়ে গেলে জল একেবারে শুকিয়ে এলে তার মধ্যে দিয়ে দিন চালের গুঁড়ো।
· সেদ্ধ মুগডাল এবং চালের গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে একটি মণ্ড তৈরি করুন। তার পর ঢাকা দিয়ে কিছু ক্ষণ রেখে দিন।
· এ বার দু’হাতের তালুতে সামান্য ঘি মাখিয়ে নিন। চাল, ডালের মণ্ডটা ভাল করে মাখতে থাকুন।
· মণ্ড একেবারে মসৃণ করে মাখা হলে সেখান থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে নিতে হবে।
· দু’হাতের তালুর মাঝে একটি করে লেচি নিয়ে প্রথমে ভাল করে গোল পাকিয়ে নিন।
· তার পর আঙুল দিয়ে চেপে চেপে বাটির মতো গড়ে নিন।
· নারকেলের পুরটা ওই বাটির মধ্যে ভরে বাটির মুখ বন্ধ করে পুলির আকারে গড়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পুলির গায়ে যেন কোনও ফাটল না থাকে।
· কড়াইতে সাদা তেল হালকা গরম হলে তার মধ্যে পুলিগুলো ছেড়ে দিন। পুলিগুলো গাঢ় খয়েরি বা লালচে করে ভেজে নিন।
· পুলি ভাজতে ভাজতে অন্য একটি পাত্রে চিনি আর জল দিয়ে সিরা বানিয়ে নিন। এই সিরা কিন্তু খুব পাতলা হবে না। তাই জল এবং চিনির পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
· চিনি গলে গেলে ভেজে রাখা পুলিগুলো সিরায় দিয়ে দিন। হালকা নাড়াচাড়া করে প্লেটে তুলে রাখুন।
· পুলির গায়ে চিনির সিরা শুকিয়ে সাদা রঙের প্রলেপ পড়লেই সামলি তৈরি। চাইলে এই পুলি বা সামলিগুলো কাচের বয়ামে ভরে অনেক দিন পর্যন্ত রেখে দিতে পারেন।