ঘি খাঁটি না ভেজাল, চেনার সহজ উপায় জেনে নিন। ছবি: ফ্রিপিক।
শুধু ভাতের সঙ্গেই হোক বা রান্নায় ব্যবহার— বাঙালির কাছে ঘি খুবই প্রিয়। সঙ্গে নুন, কাঁচালঙ্কা আর আলুভাতে হলে তো কথাই নেই। অবাঙালিরাও ঘিয়ের ভক্ত। কিন্তু বাজার থেকে কেনা ঘি সব সময় খাঁটি হয় না। লেবেল-এ ‘খাঁটি’ শব্দটা বড় করে লেখে সবাই। কিন্তু তার পরেও যে ভেজাল থাকে, তার প্রমাণ অতীতে অনেক বার দেখা গিয়েছে।
মনে রাখবেন, বাজারের ঘি বলে যেগুলি বিক্রি হয়, তার অনেকগুলিতেই প্রচুর পরিমাণে সাধারণ বনস্পতি (ডালডা) ও পাম তেল থাকে। ভেজাল ঘিয়ে কৃত্রিম রং, সুগন্ধি, রাসায়নিক মেশানো হয়। আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই খাঁটি ও ভেজাল ঘিয়ের তফাত বুঝতে পারি না। হয়তো খাঁটি ভেবে ভেজাল ঘি কিনে আনি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ভেজাল ঘি শরীরে অতিরিক্ত মেদ তৈরি করে। তা থেকে ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ-সহ নানা রোগ হতে পারে।
ঘি খাঁটি না তাতে ভেজাল মেশানো বুঝতে পারবেন সহজেই
১) কিছুটা ঘি হাতের তালুতে নিয়ে ঘষে নিন। তার পর শুঁকে দেখুন। যদি কিছু ক্ষণ পরে গন্ধ উবে যায়, তা হলে বুঝবেন, সেটা ভেজাল ঘি। কারণ আসল ঘিয়ের গন্ধ অনেক ক্ষণ পর্যন্ত হাতে থেকে যায়। এমনকি জল দিয়ে হাত ধোওয়ার পরেও ঘি-এর গন্ধ যায় না।
২) হাতের তালুতে এক চামচ ঘি নিন। যদি ঘি গলতে শুরু করে, তবে তা খাঁটি। সাধারণত খাঁটি ঘি শরীরের তাপমাত্রায় গলতে থাকে।
৩) একটি পাত্রে ঘি নিয়ে গরম করতে দিন। যদি দেখেন তাড়াতাড়ি গলে যাচ্ছে তাহলে বুঝবেন সেই ঘি খাঁটি। যদি দেখেন ঘি গলতে অনেক সময় নিচ্ছে এবং হলুদ রং হয়ে যাচ্ছে, তবে তা খাঁটি নয়।
৪) কোনও পাত্রে গরম জল করে তার মধ্যে ঘিয়ের শিশি বসিয়ে দিন। ভিতরের ঘি গলে যাবে। এর পরে সেই শিশি ফ্রিজে রেখে দিন। ঘি জমে যাবে। তার পর খেয়াল করে দেখবেন, গোটা শিশিতে জমে যাওয়া ঘিয়ের রং যদি একই হয় তা হলে সেটা খাঁটি। যদি তেল, বনস্পতি মিশিয়ে ভেজাল ঘি তৈরি হয়, তা হলে সেগুলির আলাদা আলাদা স্তর তৈরি হবে। প্রতিটা স্তরের রংও হবে আলাদা।
৫) ভেজাল ঘি চেনার আরও উপায় আছে। যদি ঘি ফ্রিজে রেখে পরীক্ষা করতে না চান, তা হলে অনেকটা ঘি একটি পাত্রে নিয়ে জ্বাল দিন। প্রথমে আঁচ কমিয়ে, তার পরে আঁচ বাড়িয়ে দিন মিনিট দুয়েক জ্বাল দিয়ে নিন। হালকা ঠান্ডা করে কাঁচের জারে ভরে রাখুন। ঠান্ডা হলে যদি দেখা যায় পাত্রের নীচের দিকে সাদা জমাট বেঁধে গিয়েছে এবং উপর দিকে তেল উঠে এসেছে, তা হলে বুঝতে হবে সেটা ভেজাল ঘি। খাঁটি ঘিয়ের ক্ষেত্রে এমন হবে না।
৬) এক চামচ ঘিয়ের মধ্যে ৫ মিলি হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড যোগ করুন। যদি ঘি লাল হয় তবে বুঝবেন কৃত্রিম রং মেশানো আছে। বনস্পতি মেশালেও এমন হতে পারে।
৭) এক চামচ ঘিতে ৪-৫ ফোঁটা আয়োডিন যোগ করুন। যদি ঘিয়ের রং বদলে নীল হয়ে যায়, তা হলে বুঝতে হবে সেই ঘি খাঁটি নয়।