Music

গব্বর ঢুকলেও তাঁরই সুর

পাথরের উপর আছড়ে পড়ছে খলনায়কের বেল্ট, আবহে হারমোনিকার চাপা সুর। রাহুল দেব বর্মণও প্রভাবিত হয়েছিলেন এনিয়ো মোরিকোনের সুরে। কয়েক দশক ব্যাপী কেরিয়ারে সুর দিয়েছেন চারশোরও বেশি ছবিতে। গত সোমবার প্রয়াত হলেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের বন্দিত সুরকার। শিশির রায়বিশ্ব চলচ্চিত্রে এমন তাবড় সুরস্রষ্টারা আছেন, যাঁদের ‘লেখা’ সুর ছবির আবহে মিশে এক-একটা ছবিকে চিরস্মরণীয় করে তুলেছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

নায়ক: ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ (১৯৬৬) ছবিতে ক্লিন্ট ইস্টউড। ডান দিকে, এনিয়ো মোরিকোনে। ছবি: গেটি ইমেজেস

বাঙালি গান মনে রাখে সহজে। বাংলা ছবির জমিতে গান এমন ভাবে বোনা, বাঙালির স্মৃতিতে তার ফুল ফোটে অহরহ। আবহসঙ্গীত কিন্তু মনে থাকে না তত। অথচ সেও তো সুর। তারও ভাষা আছে, উপযুক্ত ব্যবহারে সে রসাভাস ঘটায় দর্শকের মনে। সঙ্গীত পরিচালককে সেই সুরও তৈরি করতে হয় বিস্তর মাথা আর মন খাটিয়ে। দু-একটা সুর কালজয়ী হয়ে যায়। যেমন ‘পথের পাঁচালী’র থিম, সত্যজিৎ রায় যা আশ্চর্য কৌশলে ব্যবহার করেন অপু ট্রিলজির বাকি দুটো ছবিতেও। যেমন বহু দিন পর হরিহর বাড়ি ফিরলে, স্বামীর কাছে মেয়ে দুর্গার মৃত্যুর খবর জানানোর দৃশ্যে সর্বজয়ার কান্নায় ডুকরে ওঠে রবিশঙ্করের তারসানাইয়ের সুর। যেমন ‘মেঘে ঢাকা তারা’-য় সাঁই সাঁই চাবুক চালান ঋত্বিক ঘটক, বা নাগরিক কলকাতার যান্ত্রিক ঘর্ঘরে বেসুরো জীবন চেনান মৃণাল সেন। এই সব সুর গান নয়, কিন্তু গানেরও বেশি।

Advertisement

বিশ্ব চলচ্চিত্রে এমন তাবড় সুরস্রষ্টারা আছেন, যাঁদের ‘লেখা’ সুর ছবির আবহে মিশে এক-একটা ছবিকে চিরস্মরণীয় করে তুলেছে। বিদেশি এই সুরস্রষ্টাদের খবর আমরা তেমন একটা রাখি না। সদ্যপ্রয়াত এনিয়ো মোরিকোনে এমনই এক জন। নাম বললে তাঁকে হয়তো অনেকেই চিনবেন না, অথচ যদি বলা হয় এ হচ্ছে সেই মানুষ যিনি ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’-র মতো ছবির বহু পরিচিত থিম মিউজ়িক, বা ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দি ওয়েস্ট’-এর সেই বিখ্যাত হারমোনিকার সুরটা বানিয়েছেন, তক্ষুনি হয়তো উত্তর আসবে, এই সুর খুব চেনা। এতই চেনা যে আমাদের সত্তর দশকের হিন্দি ছবির আবহেও সেই সুর নানা রঙে-ঢঙে ফিরে আসে, মোবাইল ফোনে হয়ে ওঠে রিংটোন বা কলার টিউন।

গত ৬ জুলাই, ৯১ বছর বয়সে মারা গেলেন বিশ্ব চলচ্চিত্রের বিখ্যাত কম্পোজ়ার এনিয়ো মোরিকোনে। অভিনেতা আর পরিচালক ছাড়াও, ছবির নেপথ্য কারিগরদেরও খোঁজখবর রাখেন যাঁরা, তাঁরা জানেন এনিয়ো মোরিকোনে, জন উইলিয়ামস, হান্স জ়িমারদের নাম। এঁরা প্রত্যেকেই তাবড় সুরস্রষ্টা। আর এনিয়ো মোরিকোনে নামটা প্রায় কিংবদন্তি। ষাটের দশকে কলকাতার সিনেমাহলে ইংরেজি ছবি দেখার স্মৃতি এখনও তরতাজা যাঁদের, তাঁদের মনে পড়তে পারে সার্জিয়ো লিয়োনে পরিচালিত ‘স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন’ ছবিগুলোর কথা। ওয়েস্টার্ন ছবি কিন্তু ইটালিতে তৈরি, তাই ও রকম নাম। কয়েকটা ছবি ইতিহাস হয়ে আছে— ‘আ ফিস্টফুল অব ডলারস’, ‘ফর আ ফিউ ডলারস মোর’, আর সবচেয়ে বেশি পরিচিত ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’। তিনটে ছবিতেই অন্যতম প্রধান চরিত্রে ছিলেন ক্লিন্ট ইস্টউড। ছবির প্রেক্ষাপট শুকনো প্রান্তর, পাহাড় বা মরুভূমি, তার মধ্যে কতকগুলো ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ চরিত্র সোনা বা টাকার সন্ধানে মরিয়া। গুলি চালাতে বা ডুয়েল লড়তেও তাদের বাধে না। এই ছবিগুলোয় অভিনয়ের নাটকীয়তা আর মেলোড্রামা ফুটিয়ে তুলতে পরিচালকের দোসর ছিলেন এনিয়ো মোরিকোনে। ইউটিউবে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’-র থিম মিউজ়িক বা ‘দি এক্সট্যাসি অব গোল্ড’ সার্চ করে এক বার ভিডিয়োটা চালালেই শোনা যাবে মোরিকোনের বিখ্যাত সুরের জাদু।

Advertisement

ছয়-সাত দশক জুড়ে বিস্তৃত সুরজীবনে পাঁচশোর ওপর ছবির আবহ (অরিজিনাল স্কোর, এবং গানও) তৈরি করেছেন মোরিকোনে। নিজে ইটালির লোক, রোমের বাসিন্দা। হলিউডে নাম করার পর পাকাপাকি ভাবে আমেরিকায় থাকার, বিনি পয়সায় ভিলার অফার এসেছিল, ফিরিয়ে দিয়েছেন। সারা জীবন থেকেছেন রোমেই, ইংরেজি বলতেন নামমাত্র। তাতে কী। সুর যাঁর ভাষা, শিল্প ও শিল্পীর সঙ্গে সংযোগে তাঁর অসুবিধে হওয়ার নয় কখনও। হয়ওনি। তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন ডোনাল্ড সিগল, মাইক নিকোলস, ব্রায়ান ডি পালমা, ব্যারি লেভিনসন, অলিভার স্টোন, ওয়ারেন বিটি, জন কার্পেন্টার-এর মতো তাবড় মার্কিন পরিচালক। ব্রিটিশ পরিচালক রোল্যান্ড জফ-এর ছবি ‘দ্য মিশন’-এ মোরিকোনের করা সুর ঢুকে গিয়েছে আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট-এর ‘সর্বকালের সেরা ২৫ ছবির সুর’ লিস্টিতে। ইটালির পরিচালক পিয়ের পাওলো পাসোলিনির একটা ছবি নিয়ে তুমুল হইচই হয়েছিল— ‘সালো, অর দ্য হানড্রেড টোয়েন্টি ডেজ় অব সোডোম’। ফরাসি লেখক মার্কি দ্য সাদ-এর লেখা বইয়ের কাহিনিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এনে ফেলেছিলেন পাসোলিনি। ছবিতে ফ্যাসিস্ট রিপাবলিক অব সালো নামের দেশে চার ইটালীয় অভিজাত আঠারো জন কিশোরকে বন্দি করে রাখে, তুমুল মানসিক, শারীরিক, যৌন নির্যাতন চালায়। এতই ভায়োলেন্স আর বিতর্কিত ব্যাপারস্যাপার ছিল এই ছবিতে যে ইটালি-সহ বহু দেশেই নিষিদ্ধ হয়েছিল তা। একেবারে অন্য ধারার এই ছবিতে ব্যবহার হয়েছিল মোরিকোনের সুর।

মজার কথা হল, ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’-র মতো ছবির সূত্রে জনপ্রিয়তা পেলেও এনিয়ো মোরিকোনের সুর দেওয়া ওয়েস্টার্ন ছবির সংখ্যা কিন্তু চল্লিশও পেরোবে না। এই শিল্পীর বিশেষত্ব আসলে তাঁর সুরের বিরাট পরিধি। পাসোলিনির পিরিয়ড ড্রামাতে যেমন সুর দিয়েছেন, তেমনই রোমান পোলানস্কির করা থ্রিলার ছবি ‘ফ্র্যান্টিক’-এও তাঁর সুর। হালকা রোম্যান্টিক কমেডি ছবিতেও তাঁর সুরের মূর্ছনা, আবার ‘দি এগজ়রসিস্ট-টু’-র মতো হরর-ছবিতেও। ‘দ্য ব্যাটল অব আলজিয়ার্স’ বা বার্নার্দো বের্তোলুচ্চি-র ‘১৯০০’-এর মতো ইতিহাসভিত্তিক ছবি তাঁর সুর ছাড়া ভাবা যায় না, আবার টিন্টো ব্রাস-এর ইরোটিক ছবি

‘দ্য কি’ তাঁকে ছাড়া আলুনি। আম-দর্শক ছবি বেশি মনে রাখেন অভিনেতাদের সূত্রে। তা দিয়েই যদি দেখা যায়, ক্লিন্ট ইস্টউড, মার্লন ব্রান্ডো, রবার্ট ডি নিরো, হ্যারিসন ফোর্ড, শন কনারি, মেল গিবসন, কেভিন কস্টনার, রিচার্ড গেয়ার, ব্র্যাড পিট, লিয়োনার্দো ডিক্যাপ্রিয়ো— মোরিকোনের সুরে রুপোলি পর্দায় সবার নায়কপনা কিস্তিতে বেড়েছে!

কী করে সুর বানাতেন তিনি? কখনও প্রাচীন ফুঁ-যন্ত্র ‘ওকারিনা’ থেকে গা-শিউরোনো কয়োটের ডাক ছিটকে তুলে তাকে মেশাচ্ছেন গ্যালপিং বিটের সঙ্গে, কখনও হারমোনিকার মিষ্টি রিনরিনে সুরকে স্রেফ কয়েকটা কর্ডের সঙ্গে পিংপং খেলিয়ে করে তুলছেন গা ছমছমে। আবার কখনও প্যান ফ্লুটের মতো যন্ত্রে হুইসলিং করিয়ে ডেকে আনছেন সুরের বিপ্লব। মোরিকোনে নিজে প্রতিষ্ঠিত ট্রাম্পেট-বাজিয়ে, সেই ট্রাম্পেট আর তার বেরাদর ট্রম্বোনকে ব্যবহার করেছেন জ্যাজ় ও রক এলিমেন্ট হিসেবে, ওয়েস্টার্ন ছবির আবহকে প্রাণ দিয়েছেন ইলেকট্রিক গিটারে। আর এই সবই লোফালুফি করেছেন অনায়াসে। পাশ্চাত্য সুরের কেরদানি বলতে আমাদের চোখে মঞ্চ-ভরা দু-তিনশো শিল্পীর সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা বা চেম্বার মিউজ়িকের জটিল একটা ছবি ফুটে ওঠে। মোরিকোনের জগদ্বিখ্যাত সব সুর আজ সে ভাবেই পরিবেশিত হয় বটে, কিন্তু আদতে ওঁর সুরের আত্মাটি একেবারে সরল। প্রয়াত মোরিকোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আর এক পরিচালক-সুরকার জন কার্পেন্টার বলেছেন, মানুষটা ছিলেন যেন এক্স-রে’র মতো। ছবির মধ্যে থেকে তার আত্মাটা বার করে আনতে পারতেন সুর দিয়ে। প্রয়াত মোরিকোনের প্রতি শ্রদ্ধায় এই সময়ের আর এক বিখ্যাত কম্পোজ়ার হান্স জ়িমার বলেছেন, এই নিখাদ বিশুদ্ধতা অনায়াসে সুরে ফুটিয়ে তুলতে পারা যে কী কঠিন!

‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’-র মতো ছবিতে পরিচালক সার্জিয়ো লিয়োনের বাজেট ছিল অল্প। অথচ সুরের গুণমানে তিনি আপস করবেন না। মোরিকোন তাই খেললেন অন্য রকম ভাবে। গুলির শব্দ, বুটের আওয়াজ, ঘোড়ার চিঁহিঁ, বাতাসের শনশন— সব ঢুকে এল সুরে। ছবির স্ক্রিপ্ট লেখারও আগে থেকে ওঁর সঙ্গে সুর নিয়ে কথা বলতেন পরিচালক। তাই আবহসঙ্গীত আগে তৈরি হয়েছে, স্ক্রিপ্ট পরে, এমন আশ্চর্য ঘটনাও ঘটত। শুটিংয়ের সময় লোকেশনে মোরিকোনের সুরের রেকর্ড চলত, সুরের ওঠাপড়া আর নাটকীয়তা অনুযায়ী শট নিতেন লিয়োনে। সুরও যে ক্যামেরার লেন্সিংকে পথ দেখাতে পারে, ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ দেখলে বোঝা যায় তা। ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’ (১৯৮৪) ছবির শুটিংয়ে রবার্ট ডি নিরো মোরিকোনের সুর শুনে চরিত্রের মুড আনতেন!

এক-এক জন পরিচালকের সঙ্গে এক-এক জন অভিনেতা আর কলাকুশলী জড়িয়ে যান। সত্যজিতের ‘পথের পাঁচালী’ বলতে যেমন রবিশঙ্করকে মনে পড়ে, আকিরা কুরোসাওয়ার ‘সেভেন সামুরাই’ বা ‘থ্রোন অব ব্লাড’ বললে মাসারু সাতো, আলফ্রেড হিচককের ‘সাইকো’ বললে মনে পড়ে বার্নার্ড হারমান-এর কথা, তেমনই সার্জিয়ো লিয়োনে বললেই আসে এনিয়ো মোরিকোনের নাম। মজার কথা, লিয়োনের সঙ্গে শৈশবে এক স্কুলে পড়েছিলেন মোরিকোেন। কিন্তু শুধু কি তিনি? বিশ্ব চলচ্চিত্রের আর এক তাবড় ছবি-করিয়ে গিউসেপ্পে তোরনাতোরে-র তেরোটা ছবিতে সুর করেছেন মোরিকোনে। তার মধ্যে দুটো ছবি খুব বিখ্যাত— ‘নোভো সিনেমা পারাদিসো’ আর ‘মালেনা’। কান, গোল্ডেন গ্লোব, বাফটা, অস্কার কাঁপানো ‘সিনেমা পারাদিসো’-র শেষ দৃশ্যে মোরিকোনের করা আলতো নরম সুরের ‘লাভ থিম’ কাঁদিয়ে ছাড়ে। আর মোনিকা বেলুচ্চির অভিনয়ঋদ্ধ ছবি ‘মালেনা’? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইটালিতে সাগরপাড়ের এক ছোট্ট শহরে থাকে মালেনা। এ শহরে সে একা, তার স্বামী ভিন্‌দেশে যুদ্ধ করছে। স্বভাবতই একাকিনী যুবতীকে সব পুরুষ, এমনকি কিশোররাও পেতে চায়, আর মহিলারা ঘেন্না করে তাকে। বছর তেরোর এক কিশোরের চোখ দিয়ে এক দিকে বিশ্বযুদ্ধ, অন্য দিকে স্বপ্ন-কামনা-যৌনতার আশা ও আশাভঙ্গের কাহিনিকে যে সুরে বেঁধেছিলেন মোরিকোনে, তার তুলনা মেলা ভার। আর এই সময়ের বিখ্যাত পরিচালক কোয়েন্টিন ট্যারান্টিনো-র মোরিকোনে-প্রীতি তো প্রায় অবসেশন। ‘কিল বিল’, ‘ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস’, ‘জ্যাঙ্গো আনচেনড’-এর মতো ছবিতে মোরিকোনের পুরনো সুর ব্যবহারের পর, ২০১৫ সালে ‘দ্য হেটফুল এইট’-এ কম্পোজ়ার হিসেবে আগাগোড়া মোরিকোনেকে পেয়েছিলেন ট্যারান্টিনো। এই ছবির সুরই মোরিকোনেকে এনে দিয়েছে সেরা অরিজিনাল স্কোরের অস্কার। আগে ২০০৭-এ পেয়েছেন সাম্মানিক অস্কারও।

৯১ বছরের দীর্ঘ জীবনে পুরস্কার ও সম্মানও অফুরান। গ্র্যামি, গ্র্যামি হল অব ফেম, গোল্ডেন গ্লোব, ‘বাফটা’, প্রতিযোগিতামূলক ও সাম্মানিক অস্কার, ভেনিসে সাম্মানিক গোল্ডেন লায়ন, ডেভিড দি দোনাতেল্লা, ইউরোপিয়ান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস, ফরাসি লিজিয়ঁ দ্য নঁর। গোল্ড ডিস্ক, প্লাটিনাম ডিস্ক, গোল্ড প্লেট পেয়েছে তাঁর রেকর্ড। ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট’-এর ‘ম্যান উইথ আ হারমোনিকা’-সহ অন্য সব কম্পোজ়িশনের রেকর্ড বিক্রি হয়েছে ১০ মিলিয়ন কপি, ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র ‘দি এক্সট্যাসি অব গোল্ড’ বিশ্ব জুড়ে বিক্রি হয়েছে ৩ মিলিয়ন কপি! চলচ্চিত্র-জগতের বাইরের অর্কেস্ট্রেটর-কন্ডাক্টর এনিয়ো মোরিকোনে কত যে জ্যাজ় ও পপ শিল্পীর সঙ্গে কাজ করেছেন ইয়ত্তা নেই। ওঁর সুরে ছবিতে গেয়েছেন জোন বায়েজ়ও! ১৯৭৮-এর ফুটবল বিশ্বকাপের অ্যানথেম মোরিকোনের করা, সেই তিনিই আবার ২০১৫-তে পোপ ফ্রান্সিসের মাস-এ সুর করেন।

হেভি মেটাল ব্যান্ড ‘মেটালিকা’ তাদের কনসার্ট শুরু করত মোরিকোনের করা ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র সুর বাজিয়ে। ওটাই শ্রদ্ধার্ঘ্য! ঘরের কাছে মুম্বইয়ে ১৯৭৩-এর বিনোদ খণ্ণা-প্রাণ-যোগিতা বালি অভিনীত ছবি ‘গদ্দার’-এ লক্ষ্মীকান্ত-প্যারেলালের হাতে রীতিমতো ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র সুর। আম-বাঙালি মেটালিকা না শুনুক, ‘শোলে’ তো দেখে বার বার। সেখানে গব্বর সিংয়ের এন্ট্রি সিনে, ‘কিতনে আদমি থে’-র দৃশ্যে কান পাতলে শোনা যাবে হারমোনিকায় ওঠা একটা চাপা দমবন্ধ সুর, খুব মন দিয়ে না শুনলে বোঝা যায় না। ও আসলে আর কিছু নয়, এনিয়ো মোরিকোনের সুরে প্রভাবিত রাহুল দেব বর্মণের কুর্নিশ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement