Bangladesh

মুক্তিযুদ্ধের গানওয়ালারা

‘আমার সোনার বাংলা’ গাইতে গিয়ে কাঁদলেন সুচিত্রা মিত্র। প্রস্তুতি ছাড়াই গান গাইলেন সন্জীদা খাতুন। । দর্শকাসনে ঋত্বিক, দেবেশ রায়, শঙ্খ ঘোষ।

Advertisement

অংশুমান ভৌমিক

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২১ ০৮:০৯
Share:

শিল্পীসমাবেশ: একাত্তরের সেই অনুষ্ঠানে সই দিচ্ছেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়।

কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছিল না তাঁকে। রবীন্দ্র সদনের উইংসের ধারে দাঁড়িয়ে অদ্ভুত জেদ ধরেছিলেন তিনি। তারিখটা ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৩ জুলাই।

Advertisement

তখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলছে। মুজিবনগর সরকারের পত্তন হয়েছে। কলকাতার থিয়েটার রোডে সেই অস্থায়ী সরকারের ঘাঁটি। পূর্ব বাংলা জুড়ে লড়াইয়ে শামিল হয়েছেন গানের শিল্পীরাও। যে দিন সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের পাকিস্তান উপদূতাবাসে স্টার অ্যান্ড ক্রেসেন্টের বদলে পূর্ব দিগন্তে সূর্য আঁকা পতাকা উড়েছে, সেই ব্রাহ্মমুহূর্তে ‘আমার সোনার বাংলা’ গেয়েছেন সমবেত সুধীজন। পুরোভাগে সুচিত্রা মিত্র। অন্য দিকে আকাশবাণী কলকাতার দৌলতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে অংশুমান রায়ের গাওয়া ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি’।

এর ক’মাস পরই দু’দিনের অনুষ্ঠান রবীন্দ্র সদনে। হাউসফুল। অনুষ্ঠান শুরু হব-হব। করছে। কিন্তু কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছে না সেই মানুষটাকে। সে দিন তিনি গাইবেনই। এমনিতে তিনি গাইলেই কৃতার্থ হন আয়োজকরা। তখন তাঁর গানের যা কদর ও কাটতি, তাতে আর কারও না গাইলেও চলে। কিন্তু সে দিন নয়, পরের দিন তাঁর গাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁর অকাট্য যুক্তি, ‘আমি তো বাংলাদেশের লোক। আমাকে কেন এ পারের লোকদের সঙ্গে দিয়েছ?’

Advertisement

তিনি দেবব্রত বিশ্বাস। হেমাঙ্গ বিশ্বাস এক বার তাঁর ‘জর্জদা’কে নিয়ে লিখেছিলেন, ‘তিনি পূর্ববাংলাকে বলতেন ‘মা’, আর পশ্চিমবঙ্গকে বলতেন ‘বিমাতা’।’ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এমন অগুনতি ঠাঁইনাড়া মানুষের অস্তিত্বে ধাক্কা দিয়েছিল। তৈরি হয়েছিল এক গণউন্মাদনা। আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছিল, ‘সারা ভারতবর্ষ যেন বাংলাদেশ-এ পরিণত হয়েছে। ভাবা যায় না। সাম্প্রদায়িক মনোভাবের ঊর্ধ্বে উঠে এদেশে হিন্দু-মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এই সম্প্রীতির মনোভাব অন্য উপলক্ষ্যে কখনও ঘটেনি।’ মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে যুক্তবঙ্গের নাছোড় টানকে আষ্টেপৃষ্ঠে অনুভব করেছিল আপামর বাঙালি।

‘বড়ো অভিমানী ছিলেন জর্জদা’— স্মৃতি হাতড়াতে হাতড়াতে আজও আবেগতাড়িত হন সন্‌জীদা খাতুন। যাঁদের হাতের নাগালে পেয়ে সে দিন অমন অবুঝ আবদার জুড়েছিলেন দেবব্রত, তাঁদের অন্যতম। সে দিন আশপাশে আরও যাঁরা ছিলেন, তাঁদের আসল কারিগর দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তো কবেই চলে গেছেন। এক বছরের মধ্যে চলে গেলেন দেবেশ রায়, শঙ্খ ঘোষ। তবু ছলনা করে না অষ্টাশি পেরোনো সন্‌জীদার স্মৃতি। আজও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের এই প্রবাদপ্রতিমার চোখে লেগে আছে সেই দুটো দিন। একাত্তরের তেসরা আর চৌঠা জুলাই।

সেই দু’দিন ব্যাপী সম্মেলনের এক তোলপাড় করা প্রস্তুতিপর্ব ছিল।

তখন মুক্তিযুদ্ধ তুঙ্গে। তত দিনে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাথায় রেখে বাংলাদেশ সহায়ক শিল্পী-সাহিত্যিক সমিতি গড়ে উঠেছে। সমিতির পুরোভাগে দীপেন্দ্রনাথ। সঙ্গে প্রসূন বসু, অমিতাভ দাশগুপ্ত, দেবেশ রায়, শঙ্খ ঘোষের মতো আরও অনেকে। পূর্ব বাংলার সংস্কৃতির দুনিয়ার কেউ তাঁদের কাছে এলেই কোথাও না কোথাও থাকার বন্দোবস্ত করছেন তাঁরা। কামাল লোহানী বা আনিসুজ্জামানের মতো কেউ কেউ খুঁজে নিচ্ছেন শৈশবে ছেড়ে যাওয়া কিম্বার স্ট্রিট বা কংগ্রেস এগজ়িবিশন রোডের ঠিকানা। আহমদ ছফা তখন বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক সংগ্রাম শিবিরের সম্পাদক, যে সংস্থার সভাপতি অজয় রায়। তখনকার কলকাতায় দিন কাটানোর এক অবিস্মরণীয় ধারাভাষ্য লিখেছিলেন আহমদ ছফা। নাম ‘অলাতচক্র’। তেসরা-চৌঠা জুলাইয়ের অনুষ্ঠানের অনেক কুশীলব নড়েচড়ে বেড়িয়েছেন অলাতচক্র জুড়ে।

কলকাতায় সমবেত সুরের জগতের মানুষদের একটা বড় বাড়ি ভাড়া করে রাখতে চেয়েছিলেন সমিতির সদস্যরা। গানের রেওয়াজ চলবে। সদলবলে নানা জায়গায় অনুষ্ঠান করে বেড়ানো যাবে। রোজগারপাতি যা হবে তাতে দিন গুজরানের সুরাহা হবে। সন্‌জীদা একমত হননি। বলেছিলেন শিল্পীরা যে যেখানে আছেন, থাকুন। কলকাতার মধ্যিখানে একটা মহড়াঘরের বন্দোবস্ত করলেই চলবে। তাই হল। ১৪৪ নং লেনিন সরণিতে, রাজা সুবোধচন্দ্র মল্লিকের ভদ্রাসনের পেছনে একটা বাড়ির একটা বড়সড় ঘর মহড়ার জন্য নেওয়া হল।

শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন— ‘ধর্মতলা স্ট্রিটের সেই ভাঙা বাড়িটার দোতলায় মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী-সংস্থার মহড়া, সেখানে নেতৃত্বে আছে সন্‌জীদার সঙ্গে ওয়াহিদ।’ ওয়াহিদ মানে ওয়াহিদুল হক। যিনি বন্ধু শঙ্খর বাড়িতে পৌঁছে কপট রাগ দেখিয়ে বলতেন— ‘তোমাদেরই কোনো গরজ নেই, তা নইলে কবেই দুই বাংলা এক হয়ে যেত... আর তখন দেখতে বাঙালি কাকে বলে...’

এই গানের দল, যাকে বলা হত ‘স্কোয়াড’, তাতে ওয়াহিদুল-সন্‌জীদা ছাড়াও নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মাহমুদুর রহমান বেনু। সেই বেনু, যাঁকে অমর করে রেখেছে তারেক মাসুদ-ক্যাথরিন মাসুদের তথ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’। দলে যোগ দিয়েছিলেন ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ, সিলেট থেকে কলকাতা বা তার আশপাশে মাথা গোঁজা শিল্পীকুল। প্রথম দিন সবাই মিলে দেশাত্মবোধক গানের একটা তালিকা বানালেন। সে কাল-এ কালের গানে দুই বাংলা মিলে গেল। সন্‌জীদার বয়ানে আছে— “রাজশাহীর সারওয়ার জাহান সলিল চৌধুরীর ‘আমার প্রতিবাদের ভাষা’র সঙ্গে নিজের কথা আর সুরের ‘জাগো, প্রদীপ নিভায়ে দাও’ শেখাবেন ঠিক হল। খুলনার কালীপদ রায়, সাধন সরকারের সুর-করা আবুবকর সিদ্দিকের লেখা ‘ব্যারিকেড, বেয়োনেট, বেড়াজাল/ পাকে পাকে তড়পায় সমকাল’ শেখাবেন। ঢাকার শেখ লুত্‌ফর রহমানের সুরে সিকান্দার আবু জাফরের লেখা ‘জনতার সংগ্রাম চলবে’, আবু বকর সিদ্দিকের লেখা একই সুরকারের ‘বিপ্লবের রক্তরাঙা ঝান্ডা ওড়ে আকাশে’, সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত ‘প্রিয়, ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য’ কবিতার প্রিয় ছেঁটে ফেলে লুত্‌ফর ভাইয়েরই সুর করা গান শেখাবে ঠিক হল সদ্য-কৈশোর-উত্তীর্ণা ডালিয়া নওশীন।”

এ ছাড়া বাছা হল রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি। ‘সার্থক জনম আমার’ বা ‘আমার সোনার বাংলা’র পাশাপাশি একেবারেই অপ্রচলিত রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘দেশে দেশে ভ্রমি তব দুখগান গাহিয়ে’ যেন সেই গানের দলের দারুণ মর্মব্যথা শুনিয়ে দিল।

রোজ সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা মহড়া চলত। থাকতেন তরুণ সান্যাল, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, মণীন্দ্র রায়, সিদ্ধেশ্বর সেন প্রমুখ। এক সময় ঠিক হল যে, শিল্পীদের জন্য অর্থ সংগ্রহ এবং বাংলাদেশের সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য বড় মাপের অনুষ্ঠান হবে। রবীন্দ্র সদনে। তেসরা আর চৌঠা জুলাই। শনি আর রবিবার। প্রথম দিন পূর্ব বাংলার শিল্পীরা। পরের দিন পশ্চিম বাংলার।

গানের সঙ্গে নাচও এল। মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনার ভার দেওয়া হল চিত্রকর মুস্তাফা মনোয়ারকে। গীতি আলেখ্য রচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল জহির রায়হানকে। জহির সময় করতে পারলেন না বলে দায়িত্ব বর্তাল শাহরিয়ার কবিরের কাঁধে। গানের ওপর নির্ভর করে ইতিহাসের রূপরেখা তৈরিই ছিল উদ্দেশ্য। সমকালীন রাজনীতির প্রেক্ষাপটে কাজটা একেবারেই সহজ ছিল না। খসড়ার ওপর বিস্তর ঘষামাজার পর ‘রূপান্তরের গান’ নামে এই গীতি-আলেখ্য তৈরি হয়। তেসরা জুলাই সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদনে সেই আলেখ্য পাঠ করেন সৈয়দ হাসান ইমাম।

সে দিন মুস্তাফা মনোয়ারের দৃশ্য পরিকল্পনায় মুষ্টিবদ্ধ হাত দিয়ে মঞ্চের দখল নিয়েছিলেন এক জন মানুষ। তাকে ঘিরে রেখেছিল শেকল। গীতি-আলেখ্যের একেবারে শেষে মঞ্চের পেছনে সাইক্লোরামার মাঝখান দিয়ে সূর্য উঠেছিল। লাল টুকটুকে। আর তখনই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল কাগজে বানানো সেই শেকল। দেবেশ রায় নাকি দীপেন্দ্রনাথের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে দেখিয়েছিলেন সেই অবিস্মরণীয় দৃশ্যায়ন। দর্শকাসনে বসা শাহরিয়ার কবিরের এখনও মনে পড়ে, যৎসামান্য যন্ত্রপাতির ব্যবহারে আলোক প্রক্ষেপণের ওই মুনশিয়ানা দেখে তাপস সেন জড়িয়ে ধরেছিলেন মুস্তাফা মনোয়ারকে। শাহরিয়ারের মনে পড়ে, তেসরা জুলাইয়ের উপচে পড়া প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিলেন ঋত্বিক ঘটক, হরিসাধন দাশগুপ্তর মতো ব্যক্তিত্বও।

সে দিন আবার কথা নেই বার্তা নেই হুট করে সন্‌জীদাকে উদ্বোধনী সঙ্গীত গাওয়ার জন্য ধরেছিলেন দীপেন্দ্রনাথ। পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে’ গেয়েছিলেন সন্‌জীদা। শুনে বিস্মিত বিষ্ণু দে-র মন্তব্য — ‘এত বড়ো একটা সংকট, সেই সময় বক্তব্য কিনা ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে!’ দীপেন্দ্রনাথ ও দেবেশ তাঁকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন যে এ গানের মধ্যেই আছে ‘চলো যাই কাজে মানবসমাজে, চলো বাহিরিয়া জগতের মাঝে’ এমন পঙ্‌ক্তি। উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন কবি।

দেবব্রত দ্বিতীয় দিনই গেয়েছিলেন। এ ছাড়াও রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছিলেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়রা। সুচিত্রা মিত্র গেয়েছিলেন ‘আমার সোনার বাংলা’— সে দিনের অন্যতম শ্রোতা ছিলেন পরবর্তী কালের প্রবাদপ্রতিম সম্পাদক আবুল হাসনাত। গত বছর প্রকাশিত তাঁর আত্মজীবনী ‘হারানো সিঁড়ির চাবির খোঁজে’-তে সুচিত্রার সেই গায়ন প্রসঙ্গে আবুল হাসনাত লিখেছেন— ‘রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি গাইতে গাইতে তিনি কাঁদছিলেন। পরিবেশনের সময় বিষাদে কণ্ঠ যেন আরও গম্ভীর হয়ে উঠেছিল। অন্য দিকে প্রত্যয়েও দীপ্ত। অনেক শ্রোতা সে দিন অশ্রুসংবরণ করতে পারেননি।’

তেসরার অনুষ্ঠানে গানের দলে ছিলেন তিন বোন শীলা দাস, শর্মিলা দাস, নীলা দাস। চৌঠায় তাঁরাই ছিলেন চত্বর জুড়ে, ক্যামেরা কাঁধে, অটোগ্রাফের খাতা হাতে। এখন বাংলাদেশের অগ্রণী নৃত্যশিল্পী শর্মিলা, বিয়ের পরে শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়। মা পুতুলরানির কাছে যত্নে রাখা ‘রূপান্তরের গান’-এর গীতি আলেখ্যর স্ক্রিপ্ট এখন শর্মিলার জিম্মায়। অতিমারির দাপট কমলে সেই স্ক্রিপ্ট নিয়ে দেশ জুড়ে অনুষ্ঠান করার স্বপ্ন এখনও দেখেন সন্‌জীদা।

সব যে ভালয় ভালয় মিটেছিল তা-ও নয়। খরচাপাতি বাদ দিয়ে সাকুল্যে কুড়ি হাজার টাকার তহবিল গড়া গিয়েছিল। ক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন কেউ কেউ। জানা যায়নি, কেন চৌঠা জুলাইয়ের বদলে তেসরায় গাইবেন বলে গোঁ ধরেছিলেন দেবব্রত? বিশ্বভারতী আবার তাঁর গান আটকে দিয়েছিল, তাই কণিকা-সুচিত্রার পাশে নিজেকে দেখতে চাননি বলে? না কি তাঁর সই জাল করে কেউ কিশোরগঞ্জের ইট্‌না গ্রামে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়েছে বলে আরও কাঙাল হয়ে ও পারের সঙ্গে একাত্ম হতে চাইছিলেন? সম্ভবত কোনওটাই নয়। আমরা ভুলেই গিয়েছি যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে জনমত গড়ে তুলতে কী উদ্যোগ নিয়েছিলেন দেবব্রত। একা। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় ছেলে দ্বিজেন্দ্রনাথের পৌত্র সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলেকয়ে তাঁকে দিয়ে দুটো গান লিখিয়ে মার্চিং সংয়ের আদলে সুর করিয়ে পুজোর আগেই হিন্দুস্তান রেকর্ডস থেকে বার করার ব্যবস্থা করেছিলেন। সে সবের বিক্রি ভাল করার জন্য রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গে দরাদরি করেছিলেন। গান দু’টি ছিল, ‘ওই তাঁরা চলে দলে দলে মুক্তি পতাকাতলে’ আর ‘শোনো বাংলার জনসমুদ্রে জোয়ারের হুংকার’।

গানদুটো ক্যাসেট-সিডির যুগে প্রায় হারিয়ে গিয়েছিল। এখন ইউটিউবের দৌলতে পাওয়া যায়। কেউ শুনেছেন? একাত্তরে সারা বাংলা জুড়ে লড়কে লেঙ্গে মেজাজে হয়ে চলা কত যাত্রাপালা কত নাটক গণজাগরণের দেশলাইকাঠি হয়ে উঠেছিল, তার হদিস এ বছরও করবেন না কেউ?

তথ্যঋণ: রামেন্দু মজুমদার,
খন্দকর তাজমি নূর

ছবি সৌজন্য: শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement