শুধু ব্রিটিশ প্রভুরাই কাঁটা হেরি ক্ষান্ত ছিলেন। তাদের জন্য অভিজাত হোটেলে তৈরি হত নিষ্কণ্টক স্মোকড ইলিশ।
Hilsha

নাটক শেষে দর্শকদের হাতে আস্ত ইলিশ

বাকি জনপ্রিয় নাটককে টেক্কা দিতে এক থিয়েটার-মালিকের উপহার। মঙ্গলকাব্য থেকে সংস্কার লোকাচার, সবেতেই জয়জয়কার জলের এই রুপোলি শস্যের।

Advertisement

শুভাশিস চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২১ ০৭:০৩
Share:

আষাঢ়ের আকাশ। বৃষ্টির দমকে গঙ্গার উপরে কুয়াশার মতো মায়া। বেলুড় আশ্রমের ঘর থেকে দেখা যায় শত শত মাছ ধরার নৌকো। স্বামীজি কাজ ভুলে দেখেন জেলেদের ইলিশ ধরার আনন্দ। সে বার গঙ্গার একটা প্রমাণ মাপের ইলিশ কেনা হল। সেই মাছ দেখে স্বামী বিবেকানন্দ শিশুর মতো হয়ে গেলেন। পূর্ববঙ্গীয় শিষ্য শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তীকে ডেকে বললেন, ‘তোরা নূতন ইলিশ পেলে নাকি পূজা করিস, কি দিয়ে পূজা করতে হয় কর।’ স্বামী প্রেমানন্দ লিখেছেন, ‘...আহারের সময় অতি তৃপ্তির সহিত সেই ইলিশ মাছের ঝোল, অম্বল, ভাজা দিয়া ভোজন করিলেন।’ দ্বিপ্রাহরিক এই তৃপ্ত ভোজন স্বামী বিবেকানন্দের অন্তিম আহার। সেই রাতে তিনি প্রয়াত হন।

Advertisement

ভারতের অনেক কিছুতে সাহেব-প্রভুদের মন মজলেও ইলিশপ্রেম জমেনি। কারণ ইলিশ-অভিসারের পথ কণ্টকাকীর্ণ! তাই শ্বেতচর্ম রাজেশ্বরদের এই স্বর্গীয় স্বাদের ভাগ দিতে বঙ্গদেশের কতিপয় অভিজাত হোটেলে পাওয়া যেত কণ্টকমুক্ত ‘স্মোকড ইলিশ’। প্রজ্ঞাসুন্দরী দেবী এর বঙ্গীকরণ করেছিলেন ‘ধূমপক্ব ইলিশ’। রবীন্দ্রনাথ ‘ছেলেবেলা’-য় আব্দুল মাঝির গল্প বলতে গিয়ে পদ্মানদী থেকে জ্যোতিদাদার জন্য নিয়ে আসা ইলিশ মাছের স্মৃতিচারণ করতে বিস্মৃত হননি। সিরিয়াস রবীন্দ্রনাথেও উঠে আসে মাছের উদাহরণ— ‘ইলিশ মাছ অমনি দিব্যি থাকে, ধরলেই মারা যায়। প্রতিজ্ঞাও ঠিক তাই, তাকে বাঁধলেই সর্বনাশ।’

সেই কোন কালিদাসের কালে জীমূতবাহন আর সর্বানন্দ ‘ইল্লিষ’-এর প্রশস্তি করে গেছেন। সর্বানন্দের ‘টীকাসর্বস্ব’ গ্রন্থে আছে ইলিশ-তেলের কথা। ইলিশ নাকি নিরামিষ মাছ! এক উদ্ভট শ্লোকের দাবি এমনই— ‘ইলিশো খলিশশ্চৈব... পঞ্চমৎস্যাঃ নিরামিষাঃ’— এখানে ইলিশ ছাড়াও আরও চারটি মৎস্যকে তালিকাভুক্ত করেছেন সেই উদারহৃদয় শ্লোকস্রষ্টা। মনসার-মাস শ্রাবণে চাঁদ সদাগরের ভৃত্য দুই ভাই জালু ও মালু নদীতে হাজার প্রচেষ্টায় কোনও মাছ পায় না। শেষে সর্পদেবীর স্তুতিফলে জাল ভরে ওঠে অগণ্য মাছে, ‘ইলশা ধরিল কাতলাগুটি’ (ক্ষেমানন্দ)। পঞ্চদশ শতকের বিজয়গুপ্ত, ষোড়শ শতকের দ্বিজবংশীদাস হয়ে পলাশি-দেখা ভারতচন্দ্র রায়— মঙ্গলকাব্য জুড়ে ইলিশের মাঙ্গলিকী। বিজয়গুপ্তের রন্ধনশালায় ‘আনিয়া ইলিশ মৎস্য/ করিল ফালা ফালা/ তাহা দিয়া রান্ধে ব্যঞ্জন/ দক্ষিণ সাগর কলা’। দ্বিজবংশীদাসের হেঁশেল থেকে সৌরভ ছড়িয়ে পড়ে ‘ইলিশ তলিত করে, বাচা ও ভাঙ্গনা’-র কারণে।

Advertisement

লাজুক মুখে নতুন জামাই দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। এ বার তার ‘ইন্টারভিউ’! খুড়শাশুড়ি গোত্রের কেউ ধাঁধা জিজ্ঞেস করছেন: ‘এবার বলো তো বাবাজীবন, রূপোর পাতে মারে ঘা/ পানির বুকে ফেললে পা— এর উত্তর কী হবে?’ জামাই বললেন ‘ইলিশ’, সঠিক উত্তর দেওয়ায় মিলল তার প্রবেশাধিকার। ইলিশ-পর্ব জামাইদের জীবনে এখানেই শেষ নয়। কুমিল্লা জেলায় বিজয়া দশমীর দিন ইলিশ নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়। তাকে পিঁড়েয় বসিয়ে, কুলোর উপর মাছটি রেখে গান ধরেন এয়ো বধূরা— ‘...ইলিশ মাছ কাইন্দা বলে/ আমরা লো বড় সতী/ আমাগোরে খাইতে হইলে/ আনো কচুর লতি।’ ফরিদপুর, মাদারিপুর ও বিক্রমপুরের কিছু অঞ্চলে হিন্দু-মুসলমান সব পরিবারে জামাইয়ের প্রশংসা বা নিন্দা নির্ভর করে ইলিশের উপরে। শ্বশুরবাড়ি এসে সে এক দিন বাজার থেকে ইলিশ কিনে আনবে, এটাই নিয়ম। মাছের আকার ছোট হলে ঠাকুমা-দিদিমাদের নিন্দা-ছড়া: ‘জামাই ইলিশ আনছে খাইবার লিগা?/ না চায়া চায়া দেখবার লিগা?’ এর সঙ্গে শ্যালক-শ্যালিকার ছড়ায় রসিকতা: ‘ট্যাঁকেতে নাই পয়সা/ জামাইবাবু আনছে ইলশা।’ ওই সব অঞ্চলে বিজয়া দশমীর দিন ইলিশের ডিম খাওয়ার রীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিবিড় সংস্কার।

পুবদেশে বিয়েবাড়িতে উনুনকে বরণ করার সময় মহিলাদের বন্দনাগীতি: ‘ইলিশ মাছ কাটে বৌ/ ধার নাই বঁটি দিয়া/ ইলিশ মাছ রান্ধে বৌ/ কচু বেগুন দিয়া।’ মেদিনীপুরে বিবাহ-আচারে ‘কাঁদন গীত’ আবশ্যক। বাপের বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় কনেকে কাঁদতে কাঁদতে গাইতে হয়: ‘ইলিশ মাছের চেতরা কাঁটা, দাদা গো...’ আবার রাঢ় দেশে ইলিশ সহজলভ্য নয় তাই তারা ‘পোস্তপন্থী’। টুসুগানে উঠে আসে এর সমর্থন: ‘অ টুসু ইলিশ ইলিশ করিস না/ ইলিশ লিয়ে তুর লালসা মানায় না।/ গঙ্গা পদ্মায় যেমন ইলিশ মেলে/ রাঢ়েরা খুশি পুস্তু পেলে।’ এর সঙ্গে যেন মিলে যায় নিরামিষ আহারী বৈষ্ণবদের খেদোক্তি: ‘কেন মাইতবো ইলিশে/ পুস্ত আমার কম কিসে?’ ভাদুগানে টুসুর মতো পোস্তপন্থা না নিয়ে ভাদুকে দেওয়া হয়েছে ইলিশ-আশ্বাস: ‘ভাদ্রমাসে ভাদু খাবে ইলিশ/ গেলে পদ্মায় গঙ্গায়।’ পৌষ সংক্রান্তির দিন অথবা সরস্বতী পুজোর দিন নানা অঞ্চলে ইলিশ-কেন্দ্রিক লোকাচার আছে। জোড়া ইলিশ সিঁদুর-হলুদ মাখিয়ে, প্রদীপ জ্বেলে, ধান-দুব্বো দিয়ে বরণ করে ঘরে তোলা হয়। উলুধ্বনির সঙ্গে কোথাও আবার গানের রীতি আছে: ‘...ইলিশ মাছ হাইস্যা বলে/ খলসা মাছ রে ভাই/ তুই থাকস ঝাড় জঙ্গলে/ আমি পদ্মায় যাই…।’ ইলিশ কাটার পর তার আঁশগুলি ঘরের প্রধান খুঁটির নীচে পুঁতে রাখা হয় এই বিশ্বাসে, মেয়ের বিয়ের সময় এগুলো পয়সা হয়ে যাবে! নুরপুর, তারাগঞ্জে জেলেরা প্রথম যে ইলিশটিকে ধরে, তার আঁশ কপালে টিপের মতো পরে।

রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রম্যনাটক ‘কষ্টিপাথর’-এ বাবু নবীন এক টাকায় এক জোড়া ইলিশ কিনে দর্শকদের দেখিয়ে বলছে: ‘রাজপুত্তুর মশাই রাজপুত্তুর। কী যে গড়ন যেন ননীর চাপ থেকে কেটে তুলেছে। দিব্বি দোহরা, একটু পাশ থেকে গোলাপীর আভা মাচ্চে।’ ১৮৯৭-এর এই নাটকের আশপাশের সময়ে বঙ্গদেশের এক থিয়েটার-মালিক জনপ্রিয় থিয়েটারগুলোকে টেক্কা দিতে নাটক শেষে দর্শকদের উপহার দিতেন আস্ত একটা ইলিশ! সংবাদপত্রে প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের ভাষ্য ছিল এ রকম: ‘অভিনয় দেখিতে আসিবার সময় গৃহিণীকে বিশেষ করিয়া বলিয়া আসিবেন যেন শেষ রাত্রে উনানে আগুন দিয়া তৈল প্রস্তুত রাখেন। অভিনয় দেখিবার পর, বাড়ি গিয়া গরম গরম ইলিশ মাছ ভাজা খাইয়া মন ও রসনায় তৃপ্তি সাধন করিবেন।’ রসরাজ অমৃতলাল বসু নাটক রচনার আগে নকশার জন্য নিয়মিত গান লিখতেন। অক্ষরবৃত্তে রচিত চোদ্দো পঙ্‌ক্তির একটি দুষ্প্রাপ্য অমৃত-কবিতা উদ্ধার করেছেন ‘ইলিশ পুরাণ’ গ্রন্থের লেখক দিগেন বর্মন—

‘পাড়াতে কড়াতে কেহ মাছ ভাজে রাতে।/ রন্ধনে আনন্দ বাড়ে গন্ধে মন মাতে।।/ লাউপাতা সাথে ভাতে সর্ষেবাটা মাখা।/ সেই বোঝে মজা তার যার আছে চাখা॥’

‘...আকাশ-ভাঙা বর্ষণমুখর গহিন রাতে ষাঁড়াষাঁড়ির বান-ডাকা ফেনা ওগরানো নদীতে ইলিশের জাল ফেলে উদ্দাম চিৎকারে গান জুড়েছে কলিমদ্দি মাঝি। তার সঙ্গী দুজন দাঁড়ি কানাই আর ইয়ার আলী নাচ জুড়েছে হাত তুলে কোমর দুলিয়ে দুলিয়ে’— লিখেছেন আবদুল জব্বার। ১৯৬৯-এর জুলাই থেকে টানা এক বছর সাপ্তাহিক ‘দেশ’ পত্রিকার পাঠক অপেক্ষায় থাকতেন তাঁর ‘বাংলার চালচিত্র’ পড়ার জন্য। সেই ধারাবাহিকে এই রচনাটির শিরোনাম ছিল ‘মিঠেজল: রূপালী ইলিশ/ পাথর কালো জেলে’। জব্বার সাহেবের ‘ইলিশ মারির চর’ উপন্যাসকে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র পরিপূরক বললে অতিশয়োক্তি হবে না। এই দুইয়ের পাশে বইয়ের তাকে রাখতে হবে সমরেশ বসুর ‘গঙ্গা’, আশিস মণ্ডলের ‘ইলিশের দিন’। তবে বাংলা সাহিত্যে ইলিশের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান জানিয়েছেন বুদ্ধদেব বসু। তাঁর ‘ইলিশ’ শীর্ষক সনেটের ‘জলের উজ্জ্বল শস্য’ কথাটি এখন প্রবাদ। শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের একটি পদ্যে ‘জেলেরা ইলিশ মারে মারুক/ কাছে এসে দরদাম পাড়ুক/ এক হালি দুশো বিশ বলে/ দরদাম তবুও তো চলে’-তে জেলেজীবন ধরা পড়েছে গভীর মমত্বে।

বু্দ্ধদেব বসুর ‘ভোজনশিল্পী বাঙালী’ রন্ধন-সাহিত্যের উজ্জ্বল শস্য। সেখানে ‘পঞ্চপদী ইলিশ’-এ মধুময় সুখাদ্য বিলাসের ইশারা। ইলিশের মুড়োর সঙ্গে স্নিগ্ধ লাউ, কাঁটা দিয়ে রাঁধা ঘন মুগডাল, কচি কুমড়োর সঙ্গে কালোজিরে দিয়ে ইলিশের পাতলা ঝোল, ‘সর্ষপমণ্ডিত’ কলাপাতায় মোড়া পাতুরি, সবশেষে ইলিশপুচ্ছায়িত একটা ঠান্ডা অম্বল। পরিমল গোস্বামী ১৯৭১-এর ৬ জুন আকাশবাণী-তে ইলিশ বিষয়ক রম্যকথিকা পাঠ করেছিলেন। এই রসজ্ঞ লেখক তাঁর ‘স্মৃতি চিত্রণ’-এ জানিয়েছেন ‘ইলিশ মাছের লুকার বড়া’-র কথা। দেশের বাড়িতে ছেলেবেলায় তাঁরা ভোর থাকতে নদীর পাড়ের মাছ-কাটারুদের কাছ থেকে কিনে আনতেন ‘লুকা’ (যকৃৎ)। প্রেমেন মিত্তিরের ঘনাদা ডায়মন্ড হারবারের ইলিশের ভক্ত, ফাদার দ্যতিয়েন লিখেছেন অ্যান্টনি গোমেশের কথা, যিনি বাঙালিদের মতোই ‘পান খেয়ে পিক ফেলেন আর ইলিশ-ভাত খেয়ে ঢেঁকুর তোলেন।’

বহু ঘাটের ইলিশ খেয়ে যশস্বী যমদত্তের উপলব্ধি: ‘পূবদেশের ইলিশে তেল আর কলকাতার ইলিশে সুগন্ধ বেশি।’ কিন্তু কমলকুমার মজুমদারের প্রশ্ন: ‘গঙ্গার ইলিশ দুশো বছর ধরে কোম্পানির তেল খেয়েছে। এই ইলিশের সঙ্গে অন্য ইলিশ পাল্লা দেবে কি করে?’ ইলিশের পদ্মা-গঙ্গা, বাঙাল-ঘটির ঝগড়ায় ঘৃতাহুতি দিয়েছিলেন লীলা মজুমদার: ‘ঘটিরা বাঙালদের মতো কাঁচা ইলিশের ঝোল রান্না করে দেখাক তো!’ মুখের উপর জবাব দিয়ে দিয়েছেন জ্যোৎস্না দত্ত: ‘দই-ইলিশ ঘটিদেরই দান।’ দুই বাংলা জুড়ে ইলিশ-পদাবলিতে কমবেশি সাড়ে চারশো পদের সমাহার, তাদের বাহারি সব নাম— ইলিশ তিলোত্তমা, ইলিশের পাটিসাপটা, ইলিশের লটপটি, আরও কত কী!

ভোজনরসিক কলকাতার বাবুরা একদা ইলিশ চেখেই বলে দিতে পারতেন মাছটি বাবুঘাটের না বাগবাজার ঘাটের, নাকি মাঝগঙ্গার। এই প্রতিভাবানরা হারিয়ে গেছেন বলে রাধাপ্রসাদ গুপ্ত আফসোস করেছেন। তার পরও ইলিশের প্রতি অনিবার্য টানের কাহিনিরা ঘুরে বেড়ায় শহর বা দূরের অজানা জনপদের নানা কোণে। সুপ্রিয়া দেবী শক্তি সামন্তের ‘আরাধনা’ ছবিতে রাজেশ খন্নার বিপরীতে অভিনয় করবেন। অগ্রিম নিয়েছেন। গোল বাঁধল ডায়টিশিয়ানের পরামর্শে। টাকা ফেরত দিয়ে দিলেন ইলিশ খেতে পারবেন না বলে। ভি বালসারা সর্ষে-ইলিশ খাওয়ার লোভে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর নিমন্ত্রণ যেচে নিতেন। সুভাষ ভৌমিক নিজে গাড়ি চালিয়ে চলে যেতেন ডায়মন্ড হারবার, রুপোলি শস্যটির আশায়।

উত্তরবঙ্গের সকরিগলি, মণিহারিঘাট এবং পূর্ববঙ্গের বুক জুড়ে গোয়ালন্দ-বরিশাল-ঝালকাঠি-নোয়াখালির স্টিমার ঘাট, ইলিশ আর স্টিমার মিলেমিশে একাকার বাঙালির স্মৃতি, সত্তা ও সাহিত্যে। মুজতবা আলী থেকে সুভাষ মুখোপাধ্যায়— কে না লিখেছেন এই জলপথের ইলিশমঙ্গল। স্বামী বিবেকানন্দ এক বার স্টিমারে গোয়ালন্দ যাচ্ছিলেন। পথে একটা নৌকার দিকে চোখ গেল। জেলেদের জাল জুড়ে রূপসি ইলিশ। ‘বেশ ভাজা ইলিশ খেতে ইচ্ছে হচ্ছে’— স্বামীজির কথার ইশারা সারেঙ বুঝল। দু’টাকায় কেনা হল ষোলোটা ইলিশ, সঙ্গে দু’-চারটে ফাউ। এ বার স্বামীজির আকাঙ্ক্ষা: ‘পুঁইশাক হলে বেশ হত, সঙ্গে গরম ভাত।’ স্টিমার এক গ্রামের পাশে দাঁড় করিয়ে জনৈক গ্রামবাসীর বাগান থেকে আনা হল পুঁইশাক। ইলিশের মুড়ো দিয়ে সেই শাক খেয়ে আহ্লাদিত স্বামী বিবেকানন্দ ফেরার পথে পুঁইবাগানের মালিককে দীক্ষা দিয়ে গেলেন। এমনই ইলিশের মহিমা!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement