মনস্বিনী: ইউনিস ফুটে। শখের গবেষক, তাই হয়তো আজও অনেকাংশে উপেক্ষিত
মানুষ আজকাল আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি পরিবেশ-সচেতন। স্কুল থেকে পরিবেশ পাঠের দৌলতে বিশ্ব-উষ্ণায়ন নিয়ে কচিকাঁচারাও ওয়াকিবহাল, দিব্যি গড়গড় করে বলে দিতে পারে জীবাশ্ম-ঘটিত জ্বালানির যথেচ্ছ ব্যবহারে বায়ুমণ্ডলে বেশ কিছু গ্যাসের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। তাদের বলে ‘গ্রিনহাউস গ্যাস’। এরাই আমাদের ভূপৃষ্ঠকে ক্রমাগত উত্তপ্ত করে চলেছে। এই উত্তাপ বৃদ্ধির পোশাকি নাম ‘গ্রিনহাউস এফেক্ট’। এতে বায়ুমণ্ডলের বেশ কিছু গ্যাস পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ শুষে নিয়ে বায়ুমণ্ডলে এবং ভূপৃষ্ঠে বার বার বিকিরণ করে চলে। ফলে বায়ুমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা বেড়ে যায়। একেই বলে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উষ্ণায়ন। মিথেন, নাইট্রাস-অক্সাইড, জলীয় বাষ্প ইত্যাদি গ্রিনহাউস গ্যাস হলেও, এদের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসটি সবার খুব চেনা। সারা পৃথিবীতে এ গ্যাসের উৎপাদন আর তার জন্য পরিবেশের উষ্ণায়নের ব্যাপারে কয়েক দশক জুড়ে সারা পৃথিবীর রাষ্ট্রনেতাদের মধ্যে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও আলোচনা অব্যাহত।
যদি প্রশ্ন করা হয়, বিশ্ব উষ্ণায়ন বিষয়ে প্রথম সভ্য মানুষকে সচেতন করেছিলেন কে? পরিবেশবিদ বিশেষজ্ঞেরা নিশ্চিত বলবেন আইরিশ পদার্থবিদ জন টিন্ড্যাল-এর কথা। তিনিই নাকি প্রথম বিশ্ববাসীকে জানান পরিবেশে জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেন, জলীয় বাষ্প আর কার্বন ডাই অক্সাইড-এর কথা। এ বিষয়ে তাঁর একাধিক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় ১৮৫৯ থেকে ১৮৬১ সালে। কিন্তু বিজ্ঞানের ইতিহাস বলছে এই ব্যাপারে জন টিন্ড্যাল নন, কৃতিত্বের শিরোপা পাওয়ার কথা এক নারীর। হয়তো তিনি তেমন প্রতিষ্ঠিত গবেষক ছিলেন না, নেহাতই শখে গবেষণা করতেন। তাই পরিবেশ সংক্রান্ত আলোচনায় আজও তিনি উপেক্ষিতা। হবেন না-ই বা কেন? দু’শো বছরেরও বেশি আগে আমেরিকায় জন্ম নেওয়া এই নারীর নাম ক’জনই বা শুনেছেন? মাত্র এক দশক আগে নতুন করে তাঁকে আবিষ্কার করা হয়েছে। তিনি ইউনিস নিউটন ফুটে।
উনিশ শতকের আমেরিকার এক বর্ণময় নারী ইউনিস ফুটে ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইজ়্যাক নিউটনের দূর সম্পর্কের আত্মীয়া। প্রথাগত উচ্চশিক্ষার অধিকার না পেলেও তিনি ছিলেন অসামান্য বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী এবং নারীর অধিকারের, বিশেষত নারীর ভোটাধিকারের দাবির সক্রিয় সদস্য। দেড়শো বছর আগে অনাড়ম্বর কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে তিনিই প্রথম দেখিয়ে ছিলেন মাটির কাছাকাছি থাকা ভারী কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসটির সূর্যের তাপ ধারণ করার ক্ষমতা যথেষ্ট বেশি, আর এরই জন্য পরিবেশের তাপমাত্রা বাড়ে। সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে দেখা যাক তাঁর গড়ে ওঠার পর্বটি।
আমেরিকার কানেক্টিকাট প্রদেশের গশেন অঞ্চলের এক সফল কৃষকের ঘরে এই কন্যা জন্মেছিলেন ১৮১৯ সালের ১৭ জুলাই। ইউনিসের আরও পাঁচ ভাই আর ছয় বোন ছিল। লেখাপড়া শুরু সতেরো-আঠারো বছর বয়সে, ট্রয় ফিমেল সেমিনারিতে, সেখানে শিক্ষক হিসেবে পেলেন এক অসাধারণ মানুষকে। তিনি আমোস ইটন, বিখ্যাত আমেরিকান উদ্ভিদবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, ভূতত্ত্ববিদ, আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষার প্রবক্তা এবং নারীশিক্ষায় উৎসাহী। ট্রয় ফিমেল সেমিনারির ছাত্রী হিসেবে স্থানীয় কলেজে কেমিস্ট্রি, বায়োলজি পড়ার অনুমোদন পেলেন। জ্ঞানের জগৎ খুলে গেল চোখের সামনে, বটানির বই পড়ে দারুণ প্রভাবিত হলেন। বাইশ বছর বয়সে বিয়ে করলেন গণিতজ্ঞ এবং বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের উদ্ভাবক এলিশা ফুটে-কে।
প্রথাগত ভাবে বিজ্ঞানের শিক্ষায় বেশি দূর এগোতে না পারলেও নিজের বাড়িতেই নিজের মতো করে অনেক রকম বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। ১৮৫৫ সালে বাড়িতেই খুব সামান্য উপকরণে সাজিয়েছিলেন তাঁর পরীক্ষা পদ্ধতি। চার ইঞ্চি ব্যাস আর ত্রিশ ইঞ্চি লম্বা কাচের দু’টি সিলিন্ডারের ভিতর পারদ থার্মোমিটার আর ভিন্ন ভিন্ন গ্যাস ভরে, তাদের সরাসরি সূর্যের আলোয় অথবা ছায়ায় রেখে পর পর পরীক্ষা করে গেছেন। দেখালেন বায়ুর ঘনত্ব বেড়ে গেলে বায়ুমণ্ডলের তাপ শোষণ ক্ষমতা বেড়ে যায়, আবার জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ুর তাপ ধারণ করার ক্ষমতা শুষ্ক বায়ুর তুলনায় অনেক বেশি। বাস্তব উদাহরণ দিয়ে বললেন, এ ভাবেই পাহাড়ের উপরে বায়ুর ঘনত্ব কম বলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কম। বোঝালেন, বৃষ্টির আগে গুমোট দিনে কেন বেশি গরম লাগে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাটি ছিল সূর্যের আলোয় বিভিন্ন গ্যাসের উত্তপ্ত হয়ে ওঠার ঘটনা। অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, জলীয় বাষ্প আর কার্বন ডাই-অক্সাইড, এই চারটির মধ্যে তুলনা করে দেখালেন, প্রথম দু’টি গ্যাসের তাপ শোষণ করার ক্ষমতা বেশ কম, জলীয় বাষ্পের কিছুটা বেশি আর কার্বন ডাই-অক্সাইডের তাপ শোষণ করার ক্ষমতা সর্বাধিক, এই গ্যাসের জন্য সিলিন্ডারের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে পৌঁছেছিল ১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে।
পরীক্ষার ফলাফল থেকে ইউনিস ফুটে বলেছিলেন, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইডের অনুপাত পরিবর্তিত হলে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতারও পরিবর্তন হয়। হতেই পারে, দূর অতীতে কখনও বায়ুমণ্ডলে অনেক বেশি পরিমাণে এই গ্যাস থাকার জন্য তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল।
সে যুগের পটভূমিতে এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে বিশেষ কৃতিত্ব দাবি করতে পারত। কিন্তু তেমন কিছু হল না। যদিও ১৮৫৬ সালের সেপ্টেম্বরে ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ পত্রিকায় ‘সায়েন্টিফিক লেডিজ়’ শিরোনামের নিবন্ধে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা হয়। এই গবেষণার ফল ১৮৫৬ সালের ২৩ অগস্ট, ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য আডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স’ (এএএএস)-এর কনফারেন্সে পাঠের জন্য নির্বাচিত হল। সম্ভ্রান্ত পুরুষ বিজ্ঞানীতে পূর্ণ সভায় নিজের কাজের কথা বলতে কি তাঁর দ্বিধা ছিল? গবেষণাপত্র পাঠ করলেন জোসেফ হেনরি (পরবর্তী সময়ে আমেরিকার এক বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী) নামে স্মিথসোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণ গবেষক। ইউনিসের কাজের প্রসঙ্গে প্রথমেই তিনি বলেছিলেন, “সায়েন্স ওয়াজ় অব নো কান্ট্রি, অ্যান্ড অব নো সেক্স। নারী শুধুমাত্র সৌন্দর্য ও প্রয়োজনীয়তাই আপন করে নেয় না, নারী সত্যকেও আপন করে নেয়।”
ইউনিসের গবেষণাপত্রটির শিরোনাম ছিল, ‘সারকামস্ট্যান্সেস আফেক্টিং দ্য হিট অব দ্য সান’স রেজ়’। ১৮৫৬ সালের নভেম্বরে ‘আমেরিকান জার্নাল অব সায়েন্স অ্যান্ড আর্টস’-এ প্রকাশিত হল। আর তার পরের বছর প্রকাশিত হল গবেষণার একটি ছোট সারাংশ। কিন্তু তাও এক সময় মানুষ ভুলে গেল তাঁর কাজ। তেমন কারও চোখেই সেটি পড়ল না। তা হলে প্রায় দু’শো বছর পরেই বা কী করে তাঁর কথা জানা গেল?
সে-ও এক মজার ঘটনা। সময়টা ছিল ২০১০ অথবা ২০১১ সাল, অবসরপ্রাপ্ত ভূতাত্ত্বিক এবং পেট্রোলিয়াম বিশেষজ্ঞ রেমন্ড সোরেনসেন-এর শখ ছিল প্রযুক্তিবিজ্ঞানের পুরনো বইপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করার। সেই সূত্রে আবিষ্কার করলেন ১৮৫৬ সালে ইউনিসের গবেষণাপ্রসূত বিশেষ বৈজ্ঞানিক তথ্যটি, জলবায়ুর পরিবর্তনে কার্বন ডাই-অক্সাইড’এর এক বিশেষ ভূমিকার কথা। গবেষণাপত্রটির সারাংশ ‘দ্য অ্যানাল্স অব সায়েন্টিফিক ডিসকভারি’ শিরোনামের গবেষণা-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। প্রায় দেড়শো বছর আগে পুরুষপ্রধান বিজ্ঞানের গবেষণার জগতে নারীর অবদানের কথা জেনে ২০১১ সালের জানুয়ারি মাসে সোরেনসেন এই চমৎকার তথ্যের কথা সর্বসমক্ষে প্রকাশ করলেন। সে কালে খুব কম ইউরোপীয় প্রকাশনায় ইউনিস ফুটের নাম পাওয়া যায়। হয়তো তিনি নারী, হয়তো গবেষণাপত্রটি সভায় তিনি নিজে পাঠ না করার কারণে, অথবা যিনি পাঠ করেছিলেন তিনি নিজেও ইউনিসের গবেষণার তাৎপর্য বুঝতে পারেননি বলে এর স্বপক্ষে প্রচারও করেননি। এই সব নানা কারণে কার্বন ডাই-অক্সাইডের আধিক্যের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো যুগান্তকারী আবিষ্কারের প্রথম গৌরব ইউনিস ফুটের পাওয়া হল না।
ইউনিস তাঁর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার ব্যাপারে খুব সামান্যই তথ্য দিয়েছিলেন, বলেও যাননি পরীক্ষাটি করার জন্য অন্য কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন কি না। তাঁরও আগে সুইটজ়ারল্যান্ডের ভূতাত্ত্বিক পদার্থবিদ হোরেস বেনেডিক্ট ১৭৭০ সালে এই ধরনের পরীক্ষা করেছিলেন। সে সময় ইউরোপের বিজ্ঞানীরা সূর্যের আলো আর ভূপৃষ্ঠ-জাত অস্পষ্ট উত্তাপের ভূমিকা অনুসন্ধান করছিলেন (বিজ্ঞানের পরিভাষায় গ্রিনহাউস এফেক্ট)। ইউনিসের গবেষণাপত্র প্রকাশের তিন বছর পর ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয় জন টিন্ড্যাল-এর গবেষণা, যিনি তাঁর কাজের ব্যাপারে হোরেস বেনেডিক্ট, আঠারো শতকের ফরাসি গণিতবিদ জোসেফ ফুরিয়ে, উনিশ শতকের ইংরেজ গণিতবিদ ও ভূতাত্ত্বিক উইলিয়াম হপকিন্স, উনিশ শতকের আর এক ফরাসি পদার্থবিদ ক্লড পলেট প্রমুখের প্রেরণা স্বীকার করেছেন, অথচ জানতেন না ইউনিস ফুটের গবেষণার কথা। তবে ইউনিসের সাধারণ মানের কাজের সঙ্গে উন্নত মানের যন্ত্রের ব্যবহারে, সূর্যরশ্মির বদলে অবলোহিত রশ্মির উপস্থিতিতে টিন্ড্যাল-এর সূক্ষ্ম গবেষণার তুলনা চলে না। তবু বিষয়গত মিল অনস্বীকার্য।
তবু ইউনিস পরিবেশ-সংক্রান্ত গবেষণার প্রথমা। সে যুগে তিনি ছিলেন আমেরিকার এক বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, নারীর ভোটাধিকারের আন্দোলনে উজ্জ্বল নেত্রী। বিজ্ঞানের সাধনায় একমাত্র নারী গবেষক। ইউনিসের জীবনে বিজ্ঞানের সাধনায় ধারাবাহিকতা ছিল। বিভিন্ন গ্যাসের বৈদ্যুতিক সক্রিয়তার উপরে কাজ করে বায়ুমণ্ডলের চাপের তারতম্য এবং তার তড়িৎ-আধানের পরিবর্তনশীলতার বিষয়ে একটি সংযোগসূত্র আবিষ্কার করেন তিনি। তখন তাঁর বয়স আটত্রিশ। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় ১৮৫৭ সালের অগস্টে, ‘প্রসিডিংস অব দ্য আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য আডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স’ নামক জার্নালে। গোটা উনিশ শতক জুড়ে আমেরিকার ১৬ জন নারী বিজ্ঞানীর মধ্যে তিনিই একমাত্র নারী, যিনি দু’টি পৃথক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। বুটজুতো আর সাধারণ জুতোয় মসমস শব্দ বন্ধ করার জন্য জুতোর সোলে ভাল্কানাইজ়ড ইন্ডিয়ান রাবার ব্যবহার করে উদ্ভাবনের পেটেন্ট নিয়েছিলেন। এ ছাড়াও ১৮৬৭ সালে আবিষ্কার করেন এক নতুন ধরনের কাগজ তৈরির মেশিন, যা থেকে তৈরি হয়েছিল শক্তপোক্ত, মসৃণ, উন্নত মানের কাগজ।
এই বিস্মৃত পরিবেশবিজ্ঞানীকে নিয়ে আবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে, বিশেষত তাঁর জন্মের দু’শো বছর অতিক্রান্ত হওয়ার প্রাক্কালে। ২০১৮ সালের মে মাসে ইউনিস ফুটের বৈজ্ঞানিক কাজকর্ম নিয়ে এক আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হয় ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্টা বারবারাতে। আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘সায়েন্স নোজ় নো জেন্ডার: ইন সার্চ অব ইউনিস ফুটে’। পরের বছরের নভেম্বর মাসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির তরফে, তাঁর আবিষ্কারের বিষয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করে দেখানো হল, কী ভাবে তিনি দাবি করেছিলেন কার্বন ডাই-অক্সাইড সূর্যরশ্মি সমভাবে শোষণ করে সেই উষ্ণতা পৃথিবীপৃষ্ঠে ফিরিয়ে দেয়। এ কালের বিশিষ্ট পরিবেশবিজ্ঞানীরা তাঁর অবদানের স্বীকৃতির জন্য মুখর হয়েছেন। সে তালিকায় রয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ক্যাথারিন হো, ইউনিসের দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিবেশবিদ লিজ়ে ফুটে, সমুদ্র বিশেষজ্ঞ আনারিটা মেরিওটি প্রমুখ। বর্তমানে পরিবেশ-বিজ্ঞানে বহু নারী বিজ্ঞানী কাজ করে চলেছেন। তবুও স্বীকৃত পরিবেশবিজ্ঞানীদের সমাবেশে, বিশেষত ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেটিক চেঞ্জ’-এ নারীর উপস্থিতি যথেষ্ট করুণ। গত শতকের ১৯৯৩ থেকে এই শতকের ২০১৮ সালের মধ্যেও নারীর প্রতিনিধিত্ব তেমন ভাবে বাড়েনি।
ইউনিস ফুটে মারা যান ১৮৮৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক শহরে। তাঁর বৈচিত্রময় ৬৯ বছরের জীবন কেন্দ্র করে একটি ছায়াছবি নির্মিত হয় ২০১৮ সালে, তাঁর জন্মের দু’শো বছর পূর্তির ঠিক আগে। বিজ্ঞানের সাধনায় পুরুষপ্রধান জগতে নারী বিজ্ঞানীদের চলার পথ কখনওই মসৃণ ছিল না, যদিও পরিবেশবিজ্ঞানের প্রথম যুগের গবেষণায় উনিশ শতকের এই নারীই বিশ্ব উষ্ণায়নের মূল সূত্রটি খুঁজে দিয়েছিলেন।