ছবি: সৌমেন দাস
এতগুলো বছর পর উত্তরাকে দেখে আমার রাগ, হিংসে হওয়ারই কথা। আমাদের দেখা হয়েছিল শপিং মলের গেটে। আমি ঢুকছি, ও বেরোচ্ছে। পরশু আমার ছেলে দীপ্তর বার্থডে। আমি ওর জন্য গিফ্ট কিনতে এসেছি। টেবিলে গুচ্ছের কাজ জমিয়ে রেখে ঘণ্টাখানেকের জন্য ডুব মেরেছি।
উত্তরা নামটা আমার জীবনে জন্মদাগের মতো। আমি ওর থেকে নিজেকে যত দূরেই নিয়ে যাই না কেন, পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারব না কোনও দিন। উত্তরা নিশ্চয়ই আমাকে চিনতে পারেনি। পারার কথাও নয়। আমিও পারতাম না যদি ওকে ছবিতে না দেখতাম। ছবিতে দেখেছিলাম, অস্মিতের বুকের সঙ্গে আঠার মতো লেপটে আছে মেয়েটা। দুজনের চোখে-মুখে উচ্ছল হাসি একেবারে বিদ্যুৎ-ঝলকের মতো ঝলসে যাচ্ছে। দৃশ্যগুলো দেখেই আমার বুকের ভেতরে চিতার আগুন জ্বলে উঠেছিল দাউদাউ করে। মুহূর্তের জন্য থমকে থেকে আমি চলে আসার জন্য পা বাড়ালাম। কেউ পেছন থেকে আমার হাতটা শক্ত করে জাপটে ধরল।
উত্তরার স্পর্শ আমি নিতে পারছিলাম না। শরীরের সব ক’টা শিরা দিয়ে যেন আগুনের স্রোত বয়ে যাচ্ছিল। পিছনে না তাকিয়েই আমি বুঝেছিলাম এটা উত্তরা। আমি ওর আঙুলের ফাঁস থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছিলাম। উত্তরা অনুনয় করে, “যাস না পূরবী, প্লিজ়!” বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ি। উত্তরা আমাকে একটু আড়ালের দিকে টেনে নিয়ে গেল।
“কেন টেনে আনলি আমায়?” প্রশ্নটা করার জন্য ওর দিকে তাকাতেই হল। দেখলাম আজও উত্তরার মুখ থেকে সোনা গলে পড়ছে। “সামনেই একটা ফুড কোর্ট আছে, চল একটু বসি...” বলতে বলতে উত্তরা আমাকে টেনে নিয়ে গেল।
আমরা বসেছিলাম কোণের দিকের একটা টেবিলে। বসেই এক চুমুক ঠান্ডা জল খেলাম আমি। মোবাইলের সুইচ টিপে সময় দেখলাম। উত্তরা তত ক্ষণে ইশারায় ওয়েটারকে ডেকে নিয়েছে। কফি আর ফিশ ফ্রাই অর্ডার করল ও।
“আমি কিন্তু দশ মিনিটের বেশি বসতে পারব না,” কথাগুলো ওয়েটার থাকতে থাকতেই বললাম আমি। উত্তরা স্বরে খুব বিশ্বাস রেখে বলল, “পুরো দিনটা তো নয়, কিছুটা সময় নয় দিলি বন্ধুকে। এইটুকুতে কাজের এমন কিছু ক্ষতি হবে না।” ওর মুখে বন্ধু শব্দটা আমার কান বেয়ে বুকের ভেতর পর্যন্ত শেলের মতো বিঁধল।
আমি, উত্তরা, অস্মিত— আমরা তিন জনেই একই স্কুলে পড়তাম। শালবনী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়। আমাদের তিন জনের বাবা টাঁকশালে চাকরি করত। যদিও উত্তরা এসে ভর্তি হয়েছিল ক্লাস সিক্সে। আমাদের ক্লাসের সব অ্যাটেনশন এত দিন আমি আর অস্মিত পেয়ে এসেছি। উত্তরা আসার পর সব কেমন এলোমেলো হয়ে গেল। সব ছেলেরা হামলে পড়ল ওর ওপর। সবার মুখে একটাই নাম, উত্তরা। উত্তরাকে দেখলে একটা জীবন্ত পরি মনে হত। হাসলে ওর গালে গভীর দুটো টোল পড়ে। যেন দুটো রত্নের খনি। স্যর, ম্যামরা পর্যন্ত ওকে বেশি অ্যাটেনশন দিতেন। কারও সঙ্গে ওর ঝামেলা হলে ওর প্রতিপক্ষ বরাবর বকুনি খেত। আসলে নিজেকে রক্ষা করার অদ্ভুত কৌশল ছিল ওর। খুব সহজে অন্যের মনোযোগ আদায় করে নিতেও ওর জুড়ি ছিল না।
অস্মিত আর আমি পাশাপাশি কোয়ার্টার্সে থাকতাম। টিফিন শেয়ার করতাম, পড়ার বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করতাম। অস্মিতের ঠাম্মি রাতে ঘুমোনোর সময় যে সব গল্প বলত, সেগুলো দিনের যে কোনও সময়ে অস্মিত আমাকে শোনাত। অস্মিতের প্রতি আমার তীব্র অধিকারবোধ ছিল। আমাদের তখন প্রেমে পড়ার বয়স হয়তো নয়, তবুও আমি অস্মিতকে যে অসম্ভব ভালবাসতাম, সেটা আসলে ওর প্রতি প্রেমই ছিল।
উত্তরাকে অস্মিত ‘ফুলপরি’ বলে ডাকত। ওরা একই বেঞ্চে পাশাপাশি বসত। এমনকি বিকেলে ও উত্তরাদের কোয়ার্টার্সের সামনে খেলতে যেত। আমাকেও ডাকত। আমি যেতাম না। সারা বিকেল ঘরের কোণে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতাম। আর অপেক্ষা করতাম অস্মিত এক দিন না এক দিন উত্তরাকে ছেড়ে আমার সঙ্গে খেলবে, গল্প করবে, পড়বে। শুধু আমার সঙ্গে। কিন্তু সে দিনটা আর কোনও দিনই এল না। বরং পাশের ঘরে থেকেও ও আমার থেকে অনেক দূরে সরে গেল। আমার স্পর্শের বাইরে।
সেভেনে উঠে উত্তরা আলাদা সেকশনে চলে গেল। আমি আর অস্মিত আলাদা একটা সেকশন। অস্মিত আমার সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করত, কিন্তু আমার তখন ওর সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগত না। প্রচণ্ড অভিমানে নিজেকে গুটিয়ে রাখতাম আমি। আমার মনঃসংযোগ কমছে, আমি নিজেই সেটা বুঝতে পারছিলাম। রেজ়াল্ট ক্রমশ খারাপ হতে লাগল। স্যর, ম্যাম, বাবা, মা, কোনও কিছুই আমার তখন ভাল লাগছিল না। আমি শেষ হয়ে যাচ্ছিলাম। পরের ক্লাসে আমি অন্য একটা সেকশনে চলে গেলাম, উত্তরা অস্মিতের সেকশনে ফিরে এল। আর একটা দিনের জন্যও কেউ ওদের আলাদা করতে পারেনি। মনে আছে, মা আমাকে এক জনের কাছে প্রায়ই নিয়ে যেত। লোকটা আমার সঙ্গে গল্প করত, বোঝাত জীবন অনেক বড় একটা নদী। কোনও একটা বাঁকে থেমে থাকতে নেই। এখন বুঝতে পারি উনি আসলে মানসিক রোগের ডাক্তার। ক্লাস নাইন হতেই বাবা ট্রান্সফার নিয়ে চলে এল। ধীরে ধীরে আমি লেখাপড়ায় মন দিলাম।
অস্মিতকে আমি শেষবার দেখেছি কৃশানুর গেট টুগেদারে। কৃশানুর বাবার সঙ্গে আমার বাবার ফ্রেন্ডলি রিলেশন ছিল। সম্ভবত ভানু আঙ্কলই প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন আমার অসুখটা। উনিই বাবাকে আমাকে সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কৃশানু খুব ব্রিলিয়ান্ট ছেলে। ও তখন ডক্টরেট করতে ফ্লোরিডায় যাবে। যাওয়ার আগে সব বন্ধুদের ডেকে জমাটি পার্টি দিয়েছিল। সেখানেই অস্মিতকে দেখেছিলাম আমি। অস্মিত আসবে সেটা ভাবিনি। ও আমার সঙ্গে হেসে কথা বলেছিল। বয়স ও সামাজিকতার দায়ে আমিও ঠিক সেটাই করে যাচ্ছিলাম। তা ছাড়া পার্থ তখন আমার জীবনে চলে এসেছে। কোনও দিক দিয়েই সে অস্মিতের চেয়ে কম নয়। আমি যে অস্মিতকে না পেয়ে হেরে যাইনি সেটা প্রমাণ করারও প্রচণ্ড দায় ছিল আমার মধ্যে। ওখানেই শুনেছিলাম অস্মিত এখন বেঙ্গালুরুতে। উত্তরা দিল্লিতে। তবে ওরা এক শহরে থাকার কথা ভাবছে। এবং শিগগির বিয়ে করছে। অস্মিত চলে আসার পর কৃশানু আমাকে উত্তরার ছবি দেখিয়েছিল। উত্তরাও আমাকে ছবি দেখেই চিনেছিল।
ওয়েটার চলে গেছে। আমি জানালার বাইরে তাকিয়ে আছি। এত লোক, চাপা কথা, হাসি— কোনও কিছুই আমার কানে আসছে না।
“তুই কিন্তু জিতেছিস, পূরী!” আমাকে বন্ধুরা আদর করে ‘পূরী’ বলে ডাকত। উত্তরা এই প্রথম বার নামটা উচ্চারণ করল। আমি চোখ টেবিলে রাখি। উত্তরা বলে, “জানিস, গোটা জীবনটাই না আসলে এক-একটা ঝোঁক। লেখাপড়া, ভাল রেজ়াল্ট, প্রেম, চাকরি, বিয়ে, সেটলমেন্ট এদের কোনও একটাকে ধর, দেখ গোটা জীবন জুড়ে কারও একটানা অস্তিত্ব নেই। সব পার্টলি। তা হলে আমাদের ভুল বোঝাবুঝিটা কেন আজীবন থেকে যাবে?” আমি অবাক হয়ে উত্তরার দিকে তাকাই।
“তুই বিশ্বাস কর পূরী, অনেক দিন ধরে আমি তোকে খুঁজছি। কেউ বলতে পারেনি তুই কোথায় আছিস। আমি কিন্তু খুব আশাবাদী। জানতাম এক দিন না এক দিন আমাদের দেখা হবেই।” উত্তরার কথাগুলো বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছিল না আমার। আবার উড়িয়ে দিতেও পারছিলাম না। নিজের ভেতরে প্রশ্নটার উত্তর হাতড়ে যাচ্ছিলাম, কেন খুঁজছিল উত্তরা আমাকে। সে প্রশ্নের ধার না ঘেঁষে উত্তরা একেবারে অন্য একটা প্রশ্ন করল, “অস্মিতের কথা জানতে চাইবি না?” অনেক লোনা জলের ভেতরে জমে থাকা একটা ডুবো পাহাড়কে কে যেন প্রবল ধাক্কা দিল। মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ল তার চূড়া। টুকরো টুকরো হয়ে সেগুলো সমুদ্রের জলের সঙ্গে ভেসে যাচ্ছে।
উত্তরা আমার কাঁধে হাত রাখল। কিন্তু কান্না থামানোর কথা বলল না। যেন ও চায় এ ভাবে আমার সব ব্যথার মোচন হোক। কিছু ক্ষণ পর শান্ত স্বরে বলল, “আমি তোকে অস্মিতের গল্প বলতে আসিনি, পূরী। ক্ষমা চাইব বলে দিনরাত তোকে খুঁজেছি।” কিছু ক্ষণ থেমে ঘোর লাগা গলায় ও অতীতে ফিরে যায়, “আমি প্রথম যে দিন ক্লাসে এলাম, দেখলাম সব স্যর, ম্যাম, স্টুডেন্ট, সকলের মুখে তোর আর অস্মিতের নাম। তোরা ব্রিলিয়ান্ট, তোরা ফ্রেন্ডলি, তোদের সব ভাল। পরে জানলাম তুই ভাল গানও করিস। আমি যখন অস্মিতের বাড়ি যেতাম, আন্টি তোর কথা বলত। অস্মিতের সঙ্গে খেলতে গেলে ও শুধু তোর গল্প করত। আমার ভাল লাগত না। আমি কিন্তু তোর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিলাম পূরী। তুই আমাকে সহ্য করতে পারতিস না। তার পর তুই আমার শত্রু হয়ে গেলি। বিশ্বাস কর প্রথম থেকেই অস্মিতকে যে আমার খুব ভাল লাগত তা নয়, কিন্তু আমি তোর ওপর রিভেঞ্জ নিতে চেয়েছিলাম। অস্মিতের মায়ের বুকে তোর জন্য যে স্নেহ ছিল, সেটা কেড়ে নিতে চেয়েছিলাম। আমার রিগ্রেট শুধু আমার হীনমন্যতার জন্য। তোকে এক্সপ্লয়েট করার জন্য...” শেষের দিকে গলা ভেঙে আসছিল ওর। কিছু ক্ষণ আমরা দুজনেই নির্বাক। উত্তরার হাতের পাতা কখন আমার হাতদুটোকে আঁকড়ে ধরেছে, খেয়াল করিনি। আমি আমার একটা হাত বার করে ওর হাতে রাখলাম। আলতো চাপ দিয়ে বললাম, “আমি পার্থর সঙ্গে খুব খুশি। তোরাও ভাল থাক।” নিজেকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে নিয়ে উত্তরা হাসল। বিদ্রুপ মেশানো তীক্ষ্ণ হাসি। বলল, “তোকে বললাম না জীবনে অখণ্ড বলে কিছু হয় না?”
“মানে?”
“অস্মিত এখন আমেরিকায়। মাঝে মাঝেই যেত। এ বার বোধ হয় লম্বা সফর।”
“তুই?”
“দিল্লির কোম্পানি ছেড়েছিলাম বিয়ের আগে। বেঙ্গালুরুতে করেছি বছর তিন। এখন কলকাতায়। আমিও পালানোর তালে আছি। তবে আমেরিকা নয়। জার্মানি। ওখানেই আমার কাজের ভাল স্কোপ আছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে এ বছরের শেষের দিকে ইচ্ছেপূরণ হয়ে যাবে।”
একগুচ্ছ প্রশ্ন নিয়ে আমি পাথরের মূর্তি হয়ে বসেছিলাম। ওয়েটার খাবারের প্লেট দিয়ে গেছে কখন, আমরা কেউই খেয়াল করিনি। উত্তরা বলে, “ব্যাপারটা বুঝে উঠতে আমারও সময় লেগেছে, পূরী। মেয়েটা ওর প্রোজেক্ট পার্টনার ছিল। সে বার ওরা এক সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত গিয়েছিল। আমার এক বারের জন্যও সন্দেহ হয়নি, জানিস। পরে জানলাম। অফিস কোলিগ, মানে যাদের
সঙ্গে আমাদের ভাল রিলেশন ছিল, তাদের কাছ থেকে... ফাইনালি অস্মিতের চ্যাটিং দেখে। এ বারেও ওরা এক সঙ্গে গেছে।”
“তুই অস্মিতের কাছে কিছু জানতে চাসনি?”
“না।”
“কেন?”
“নতুন করে জানার কিছু নেই বলে। আমি চাই না আমাকে বলা ওর শেষ কথাগুলো মিথ্যে কথা হোক।” কিছু ক্ষণ চুপচাপ। উষ্ণ কফির কাপটা তালুর ভেতর জড়িয়ে আরও নিচু স্বরে বলল, “বাবা দু’বছর আগে গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে চলে গেছেন। জন্মের সময় মা। এখন অস্মিতকে মুছে ফেললে আর একটা নামও থাকবে না আমার ব্যথার পাশে।”
“অস্মিত কিন্তু কোনও দিন আর তোর কাছে ফিরবে না উত্তরা!”
“হয়তো তাই। কিন্তু ও নিজে মুখে যখন বলে যায়নি, তখন ওর ফিরে আসা নিয়েই আমি ভাবব। তোকেও তো এ ভাবেই পেলাম বল?
খুঁজতে খুঁজতে হয়তো ওকেও
এক দিন পেয়ে যাব! সে দিনও শুধু একটা কথাই জিজ্ঞেস করব, ‘ভাল আছ, অস্মিত?’ ”
উত্তরার জন্য আমার কষ্ট হবে কখনও সেটা ভাবিনি আমি। বরং এটাই চেয়ে এসেছি ও কষ্ট পাক, যন্ত্রণা পাক, কাঁদুক। কিন্তু উত্তরাকে কাঁদতে দেখে আমার চোখও ভিজে উঠছে। ওয়েটারকে ডেকে বিল মিটিয়ে ব্যাগ গোছাতে গোছাতে ও বলল, “চল এ বার। সত্যি তোর অনেকটা সময় নষ্ট করে ফেললাম।”
আমার আরও একটু সময় ওর সঙ্গে থাকতে ইচ্ছে করছিল। কিন্তু ও তাড়াতাড়ি হাঁটছিল। গাড়ির কাছে এসে বলল, “আমি কিন্তু আমার ভেঙে যাওয়ার গল্প বলার জন্য তোকে খুঁজিনি, পূরী! আমি শুধু বলতে চেয়েছিলাম, কষ্ট পাস না, আমার ওপর রাগ জমিয়ে রাখিস না। মনে কর তোর প্রিয় একটা খেলার পুতুল আমি চুরি করে নিয়ে গেছিলাম ছোটবেলায়। সেটা আমার কাছ থেকে আর কেউ চুরি করেছে।”
কালো গাড়িটা একটা ঝাঁকুনি দিয়ে বেরিয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মোড় পেরিয়ে সোজা রাস্তা নিল ওটা। চারটে চাকার প্রচণ্ড গতি পুতুলখেলার দিন পেরিয়ে উত্তরাকে বহুদূর নিয়ে চলে যাচ্ছে। ছোটবেলায় ও আমার পুতুল চুরি করেছিল, আজ মুছে দিয়ে গেল পুতুলের স্মৃতিগুলোও। আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলাম জনস্রোতের মাঝে। যেন কাউকে বিদায় দিতে নয়, আসলে কোনও প্রিয়জনের আসার জন্য অপেক্ষা করছি আমি।
ছবি: সৌমেন দাস